দল: খেত দাপাচ্ছে দামালরা। নিজস্ব চিত্র
মহাষষ্ঠীর সকালে ঝাড়গ্রাম জেলার সর্ডিহা ও চুবকা অঞ্চলের গোটা দশেক গ্রামের ধান ও আনাজ খেত মাড়িয়ে তছনছ করল দলমার পালের গোটা ৮০টি হাতি। দলে প্রায় ২০ টি শাবক হাতি আছে।
বন দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে খড়গপুর বন বিভাগের কলাইকুন্ডা রেঞ্জ এলাকার জটিয়া-নিশ্চিন্তার জঙ্গল থেকে হাতিগুলি ঝাড়গ্রাম বন বিভাগের মানিকপাড়া রেঞ্জ এলাকার কুমারী ও রামরামার জঙ্গলে চলে আসে। ৬০টি হাতি আছে কুমারী জঙ্গলে। আরও গোটা ২০টি হাতি রয়েছে রামরামা জঙ্গলে।
গত পাঁচ দিন ধরে হাতিগুলি এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। হাতির দলটি কংসাবতী পেরিয়ে মেদিনীপুর বন বিভাগের মেদিনীপুর সদর ব্লকের মণিদহ এলাকার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু মণিদহ এলাকার বাসিন্দাদের বাধায় হাতির দলটি সেদিকে যেতে পারেনি। স্থানীয়দের বক্তব্য, স্বাভাবিক গতিপথে বাধা পেয়ে হাতির আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করছে। গ্রামবাসীর ক্ষোভের মুখে পড়ছেন বন কর্মী ও হুলা পার্টির সদস্যরা।
গত পাঁচ দিনে রাঙ্গনিয়া, পেঁচাপাড়া, কুমারী, বুড়িমোল, ঘোড়াজাগির, দেওয়ানচক, চিতলবনি, বল্লার মতো গ্রাম লাগোয়া তিনশো বিঘাজমির ধান ও আনাজ চাষের ক্ষতি করেছে হাতিরা। রাত জেগে গ্রাম পাহারা দিচ্ছেন বাসিন্দারা। ঘোড়াজাগির গ্রামের ধর্মেন্দ্র মাহাতো, বল্লা গ্রামের সঞ্জিৎ পাত্ররা বলেন, ‘‘পুজোর আনন্দ মাথায় উঠেছে। খেতের ফসল সাফ করে দিচ্ছে হাতিরা। এখন অবশিষ্ট মাঠের ফসল ও ঘর বাড়ি বাঁচাতে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছি।’’ বল্লা গ্রামের বাসিন্দা ছবি ঘোষ বলেন, ‘‘দিনদুপুরে হাতির দল কুমারী জঙ্গল থেকে বেরিয়ে চাষের জমিতে তাণ্ডব চালাচ্ছে। পুজো মণ্ডপে যেতেও ভয় করছে।’’
অভিযোগ, বন দফতর যথেষ্ট উদ্যোগী নয়। মানিকপাড়া রেঞ্জ অফিস থেকে হাতি তাড়ানোর প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম দেওয়া হচ্ছে না। ঝাড়গ্রামের ডিএফও বাসবরাজ হলেইচ্চি অবশ্য বলেন, ‘‘মণিদহের বাসিন্দারা হাতির দলের স্বাভাবিক গতিপথে বাধা দিচ্ছেন। তাতেই হাতির দল ফসলের ক্ষতি করছে। বাসিন্দাদের বুঝিয়ে হাতির দলটিকে নির্দিষ্ট রুটে পাঠানোর
চেষ্টা হচ্ছে।’’