প্রতীকী ছবি।
ফের হাতির হানায় মৃত্যু হল একজনের। এ বার মেদিনীপুর গ্রামীণের গোপগড়ের জামশোলে। মৃতের নাম ভূপেন মাঝি (৫২)। বুধবার রাতের এই ঘটনায় হাতির হানায় জখম হয়েছেন ভূপেনবাবুর স্ত্রী সুফলা মাঝিও। তিনি হাসপাতালে ভর্তি। বন দফতর সূত্রে খবর, মেদিনীপুর গ্রামীণের এই এলাকায় যে রেসিডেন্ট হাতিটি রয়েছে, সেটিই হামলা চালিয়েছে। মেদিনীপুরের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহাও মানছেন, “ওই এলাকায় একটি রেসিডেন্ট হাতি রয়েছে। তার গতিবিধির উপরে নজর রাখা হচ্ছে।’’
বুধবার রাতে বাড়ির সামনে বসেছিলেন মাঝি দম্পতি। তখনই জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে রেসিডেন্ট হাতিটি। প্রথমে ভূপেনবাবুর উপর হামলা চালায়। শুঁড়ে তুলে আছড়ে মারে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ভূপেনবাবুর। পরে আক্রান্ত হন সুফলাদেবী। কোনওরকমে পালিয়ে প্রাণে বাঁচেন তিনি।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই মেদিনীপুর গ্রামীণ, শালবনি, গড়বেতা-সহ নানা এলাকায় হানা দিচ্ছে রেসিডেন্ট হাতি। মেদিনীপুরে এখন রেসিডেন্ট হাতির সংখ্যা বেড়েছে। মেদিনীপুর বন বিভাগ এলাকায় ১৭-১৮টি রেসিডেন্ট হাতি রয়েছে। লোকালয়ে ঢুকে ওই সব রেসিডেন্ট হাতিই একের পর এক মানুষ মারছে, কখনও হাতির হানায় জখম হচ্ছেন গ্রামবাসী। গত মাসের গোড়ায় লক্ষ্মণপুরে হাতির হামলায় মারা যান কুলুবালা মাহাতো নামে এক বৃদ্ধা। তিনি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদ সদস্য সনৎ মাহাতোর মা। সপ্তাহ কয়েক আগে গড়বেতার উখলায় হাতির হানায় জখম হন এক ব্যক্তি। দিন কয়েক আগে কলসিভাঙা, নয়াগ্রাম, বেলাশোল প্রভৃতি এলাকায় রেসিডেন্ট হাতি হানা দিয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি করেছে।
বন দফতরের ব্যাখ্যা, মূলত খাবারের খোঁজেই জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে হাতি। সাবাড় করছে জমির ধান, সব্জি। আর সামনে কেউ পড়লে শুঁড়ে তুলে আছড়ে মারছে। মেদিনীপুরের এক বনকর্তা মানছেন, “হাতিকে জঙ্গলে সীমাবদ্ধ রাখা সম্ভব হচ্ছে না। সেটা করতে হলে পর্যাপ্ত খাবার প্রয়োজন। তা ছাড়া, হাতির রুচি বদলাচ্ছে। তাই জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে চলে আসছে।’’ জঙ্গলে হাতির উপযোগী গাছ লাগানো শুরুও করেছে বন দফতর। মেদিনীপুরের এক বনকর্তা বলেন, “হাতির হানার বেশির ভাগ ঘটনাই ঘটছে রাতে কিংবা খুব সকালে। শৌচকর্ম করতে বাইরে গিয়ে হাতির মুখে পড়ছেন গ্রামবাসী। এ নিয়েও সচেতনতা বাড়ানোর কাজ চলছে।’’