উদ্ধার করা হচ্ছে মৃত হাতিকে।
ফের কুয়োয় পড়ে মৃত্যু হল একটি হাতির। পশ্চিম মেদিনীপুর সদর ব্লকে চাঁদড়া রেঞ্জের মুচিবেড়িয়া গ্রামের ঘটনা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, দলমার দামালরা কয়েকদিন ধরেই জেলার বিভিন্ন এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। মঙ্গলবার রাতে সাত-আটটি হাতির পালকে গ্রামে ঘুরে বেড়াতে দেখেছেন বাসিন্দারা। বুধবার সকালে মুচিবেড়িয়া গ্রামের হেমন্ত লায়েক বলেন, ‘‘ওই রাতে বাড়ির বারান্দায় রাখা ধানের বস্তা টেনে বের করে নিয়ে গিয়েছিল হাতির দল। ভয়ে বাড়ির বাইরে বেরোতে পারিনি।’’ তারপরে কখন মুচিবেড়িয়া প্রাথমিক স্কুলের মাঠে কুয়োয় পড়ে যায় একটি হাতি। দলের অন্য হাতিরা তাকে তুলতে পারেনি। বুধবার সকালে বুলডোজার নিয়ে এসে উদ্ধারকাজ শুরু করে বন দফতর। কিন্তু সফল হননি বনকর্মীরা। দড়ি ছিঁড়ে পড়ে যায় হাতিটি। ঘন্টা দুয়েক পরে মৃত্যু হয় তার।
মেদিনীপুরের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা বলেন, “সাতটি হাতির একটি দল মঙ্গলবার রাতে ভাদুলতার জঙ্গলে ছিল। সেই দলেরই বছর চারেকের একটি হাতিটি কুয়োয় পড়ে মারা যায়। দেহ ময়নাতদন্তের পর সৎকার
করা হয়েছে।’’
মুচিবেড়িয়ার বাসিন্দা গীতা দণ্ডপাট বলেন, ‘‘ওই রাতে দুটি হাতি আমাদের বাড়ির শিকল নাড়ায়। ঠিক যেন কেউ কড়া নাড়ছে। কিছুক্ষণ পর ওরা ফিরে যায়। ভোরবেলায় গিয়ে দেখি একটি হাতি কুঁয়োর মধ্যে মরে পড়ে রয়েছে।’’
হাতির আতঙ্কে ঘুম উড়ে গিয়েছে চন্দ্রকোনা রোড, গড়বেতা-সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চলের বাসিন্দাদেরও। মঙ্গলবার রাতেই দলমার একটি পাল স্থানীয় আড়াবাড়ি ও নয়াবসত জঙ্গল থেকে বেরিয়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। প্রায় ৭০টি হাতি আলুর খেতে তছনছ করেছে। বাসিন্দাদের ক্ষোভ হাতির তাণ্ডবে ক্ষতি হয়েছে বিঘার পর বিঘা মরসুমি সব্জি, সর্ষে, ধানের। জানা গিয়েছে বুধবার পাতরিশোল বিটের অধীন মাগুরাশোল জঙ্গলে রয়ে গিয়েছে হাতির পালটি। আর একটি পাল তুলশিচটি জঙ্গলে
ঘোরাফেরা করছে।
ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা বলেন, “এখন মাঠে ফসল রয়েছে। কর্মীরা রাতপাহারা দিচ্ছেন। সঙ্গে রয়েছেন জঙ্গলঘেঁষা গ্রামের বাসিন্দারাও। বুধবার রাতে গভীর জঙ্গে ঢোকানোর চেষ্টা করব।”