TMC

দিবাকর ফের তৃণমূলে

শুভেন্দুর সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্কের বর্তমান পরিস্থিতিতে দিবাকরের উপর থেকে সাসপেনশন প্রত্যাহার তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে জেলার রাজনৈতিক মহল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁথি শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:০৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

কখনও বিডিওর সঙ্গে ঝামেলা। কখনও কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ফ্লাইঅ্যাশ বিক্রিতে দুর্নীতি। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের আধিকারিককে মারধর—একাধিক অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। যার প্রেক্ষিতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও ব্লক তৃণমূল সভাপতি দিবাকর জানা এবং তাঁর সঙ্গী শেখ সেলিমকে চার বছরের জন্য সাসপেন্ড করে রাজ্য তৃণমূল নেতৃত্ব। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সেই সাসপেনশন তুলে নেওয়া হল। এ দিন কাঁথিতে সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্য নেতৃত্বের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান জেলা তৃণমূলের দুই কো-অর্ডিনেটর অখিল গিরি এবং অর্ধেন্দু মাইতি। দিবাকরের ‘কাছের’ শান্তিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শেখ সেলিম আলির উপর থেকেও সাসপেনশন তুলে নেওয়া হয়েছে বলে তৃণমূল সূত্র খবর।

Advertisement

শুভেন্দুর সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্কের বর্তমান পরিস্থিতিতে দিবাকরের উপর থেকে সাসপেনশন প্রত্যাহার তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে জেলার রাজনৈতিক মহল। প্রসঙ্গত, তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে দলের ব্লক সভাপতি এবং শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হন। একইসঙ্গে কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের শ্রমিক সংগঠনেরও দায়িত্বে ছিলেন।

একাধিকবার দিবাকরকে নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। কখনও বিডিওর সঙ্গে ঝামেলা, কখনও তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের এক আধিকারিককে মারধরের অভিযোগও ওঠে। এরপরই তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়। পরে তাঁকে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়। যদিও গত অক্টোবরে একপ্রকার জোর করে তিনি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির চেয়ারে বসেন। তারপর মন্তব্য করেন, ‘‘যে কয়েক বছর এই বোর্ড থাকবে মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর নির্দেশ মতোই চলবে। আমি তাঁর সাথে দেখাও করব। তিনি আমার মা-বাবা সবকিছু।’’ তাই শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ এই নেতাকে দলে ফিরিয়ে তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব পরোক্ষে শুভেন্দুকে বার্তা দিতে চাইছে বলে দলের নেতা-কর্মীদের একাংশ মনে করছেন।’’ পাশাপাশি দুর্নীতির অভিযোগে সাসপেন্ড নেতাকে দলে ফেরানোয় বিধানসভা ভোটের আগে বিরোধীরা এই নিয়ে মুখ খোলার সুযোগ পেয়ে যাবে বলেও তাঁদের মত।

Advertisement

যদিও জেলা তৃণমূল সভাপতি শিশির অধিকারী এ বি‌ষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি কিছুই জানি না।যাদের ক্ষমতা রয়েছে তারাই এ সব কিছু করছে।’’ অখিল গিরি বলেন," দিবাকর এবং সেলিম দলের কাজ করতে চেয়ে রাজ্য নেতৃত্বকে চিঠি দিয়েছিল। সেইমত দুজনের উপর থেকে সাসপেনশন তুলে নিয়েছে রাজ্য নেতৃত্ব। এ কথা রাজ্য নেতৃত্ব আমাকে এবং জেলার আর এক কো-অর্ডিনেটর অর্ধেন্দু মাইতিকে সংবাদমাধ্যমের কাছে জানাতে বলেছিল। সেইমত এদিন ওই দুজনের উপর থেকে সাসপেনশন প্রত্যাহারের ঘোষণা করা হয়।’’

আর কী বলছেন দিবাকর? তাঁর কথায়, ‘‘আইনি পরামর্শ মেনে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির কাজকর্ম চালাচ্ছি। দলীয় নেতৃত্ব আমার উপর থেকে সাসপেনশন তুলে নেওয়ার খবর শুনে আমি খুশি। তবে আমার কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে দু-একদিনের মধ্যে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন