মেদিনীপুরের কেরানিতলার এক মণ্ডপে। নিজস্ব চিত্র।
সরস্বতী পুজোর মণ্ডপে উঠে এল নারী নির্যাতনের বার্তা। মেদিনীপুর শহরের কলেজ মোড়ের একাধিক মণ্ডপের থিমে তুলে ধরা হয়েছে নানা সামাজিক বার্তা। রকমারি মণ্ডপ দেখতে ভিড়ও জমল অন্য বছরের মতোই।
বুধবার সকাল থেকেই কলেজ মোড় ছিল জমজমাট। বেলা যত বেড়েছে, ভিড়ও তত বেড়েছে। পুলিশি নজরদারিও ছিল। তাই সাউন্ড বক্সের দাপাদাপি অন্য বারের থেকে একটু কমই ছিল। স্কুল-কলেজ, বাড়ির বাইরে ফি-বছরই সরস্বতী পুজোর বারোয়ারি আয়োজন দেখে কলেজ মোড়। বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের উদ্যোগে এ-সব পুজোয় সব ছাপিয়ে চলে আসে রাজনৈতিক তরজা। তবে শুধুই রাজনৈতিক আকচাআকচি নয়, থিমে উঠে এসেছে সাম্প্রতিক নানা বিষয়ও।
‘অভিনন্দন’ ক্লাবের মণ্ডপে নানা চিত্রকলায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে নারী নির্যাতন রোধের বার্তা। কোনও ছবির পাশে লেখা হয়েছে, ‘নারীর সৌন্দর্যতা নারীর, তুমি পেতে নাহি পারো। না পাওয়ার ঈর্ষাতে, তুমি অ্যাসিড কেন মারো?’ আবার কোনও চিত্রকলার পাশে লেখা, ‘সকলেই আজ পঞ্চমুখ, সোশ্যাল মিডিয়ার গুণগানে। সেই মুখ বন্ধ হয়, বিশ্বাসঘাতকতার ছুরির টানে।’ ‘ইউরেকা’ ক্লাবের পুজোর থিমে উঠে এসেছে ভ্রূণ হত্যা, বাল্য বিবাহ, পণপ্রথা, নারী পাচার ও শোষণের মতো বিষয়গুলো।
শুধু থিমেই চমক নয়। এ বার কলেজ মোড়ের পুজোর প্রতিমাতেও রয়েছে অভিনবত্ব। ‘রেড ক্যাসেল’-এর পুজোয় যেমন রয়েছে প্রকৃতির ছোঁয়া। এখানে সবুজের মধ্যেই দেবীর আরাধানা হয়েছে। ‘পুনশ্চ’- এর প্রতিমাতেও রয়েছে অভিনবত্ব। ‘পথিকৃৎ’-এর প্রতিমা হয়েছে আমেরিকায় অবস্থিত ইন্দোনেশিয়ার দূতাবাসের দেবী সরস্বতীর মূর্তির আদলে তৈরি। উদ্যোক্তাদের বক্তব্য, হিন্দুদের আরাধ্য দেবী সরস্বতীর এই মূর্তিটি মুসলিম প্রধান রাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়া, খ্রিস্টান অধ্যুষিত দেশ আমেরিকাকে পারস্পরিক আন্তর্জাতিক সম্পর্কের নিদর্শন হিসেবে উপহার দেয়। যা আজও বালি স্থাপত্যের অন্যতম নিদর্শন হিসেবে পরিচিত। সবমিলিয়ে, এ বারও বেশ জমজমাট কলেজ মোড়ের পুজো।