দুই শহরে দুই ছবি, সচেতনতা শিকেয়

নাগাড়ে বৃষ্টি, জব্দ শব্দদৈত্য

কালীপুজো এবং দীপাবলির সময় শব্দের তাণ্ডবে নাজেহাল হওয়ার ছবি ধরা পড়ে প্রতি বছরই। সন্ধে নামলেই বাজির-উত্পাত শুরু হয়ে যায়। নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দেদার শব্দবাজি ফাটে। কোনও লক্ষ্মণরেখা থাকে না, না শব্দের মাত্রার, না সময়ের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৪৬
Share:

জল-পথ: বৃষ্টিতে থইথই মেদিনীপুরের বাস রাস্তাও। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

বৃষ্টিতে জব্দ হল শব্দদৈত্য। এ বার অন্তত মেদিনীপুরবাসীর অভিজ্ঞতা তেমনই।

Advertisement

কালীপুজো এবং দীপাবলির সময় শব্দের তাণ্ডবে নাজেহাল হওয়ার ছবি ধরা পড়ে প্রতি বছরই। সন্ধে নামলেই বাজির-উত্পাত শুরু হয়ে যায়। নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দেদার শব্দবাজি ফাটে। কোনও লক্ষ্মণরেখা থাকে না, না শব্দের মাত্রার, না সময়ের। রাত যত বাড়ে, শব্দতাণ্ডবও তত বাড়ে। বৃহস্পতিবার কালীপুজোর রাতে অবশ্য অন্য ছবি দেখা গেল জেলার সদর শহরে। ভারী বৃষ্টির জেরে অনেকেই শব্দবাজি কিনলেও তা ফাটাতে পারেনি। শহরের বাসিন্দা গৌরব দত্তের স্বীকারোক্তি, ‘‘এই বৃষ্টিতে কি বাজি ফাটানো যায়! সঙ্গে দমকা হাওয়াও ছিল। যতবারই দেশলাই জ্বালিয়েছি নিভে গিয়েছে।” মেদিনীপুরের বাসিন্দা স্বপন পাল মানছেন, “গতবারও বাজির শব্দে কান ঝালাপালা হয়েছিল। এ বার সেই তাণ্ডব ছিল না। টুকটাক বাজি ফেটেছে। তবে বড় সমস্যা হয়নি।’’

মজুত বাজি পরে ফাটবে না তো, আশঙ্কাটা থেকেই যাচ্ছে। পুলিশের অবশ্য দাবি, এ বার মেদিনীপুরে সেই ভাবে শব্দবাজি ঢোকেনি। তাই কালীপুজোর রাতে শব্দের তাণ্ডব কম ছিল। বাজি সেই ভাবে মজুতও নেই। ফলে পরে ফাটার আশঙ্কাও নেই। পুলিশের বক্তব্য, দিন কয়েক আগে থেকেই বেআইনি শব্দবাজির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়। শহর- শহরতলির বিভিন্ন বাজারে হানা দেওয়া হয়। বেআইনি শব্দবাজি রয়েছে কি না তা দেখা হয়। অভিযানে বিভিন্ন এলাকা থেকে পাঁচজনকে গ্রেফতারও করা হয়। প্রচুর শব্দবাজি বাজেয়াপ্তও করা হয়। জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, “এ বার বাজি তৈরির এলাকায় লাগাতার অভিযান হয়েছে। ফলে, পাইকারি-বাজার থেকে খোলা- বাজারে শব্দবাজি সে ভাবে ঢোকেনি। শহরের বাজারগুলোয় পুলিশের টানা নজরদারিও ছিল।’’

Advertisement

মেদিনীপুরে শব্দের তাণ্ডবের অভিযোগ নতুন নয়। গতবার কালীপুজো-দীপাবলির সময়ও এই অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতালের মতো এলাকায় শব্দের সীমা ৪০ ডেসিবেলের আশপাশে থাকার কথা। বসতি এলাকায় ৪৫ ডেসিবেল, আর বাণিজ্যিক এলাকায় ৫৫ ডেসিবেলের আশপাশে থাকার কথা। কিন্তু গতবার এই সময় নানা এলাকায় শব্দের সীমা ৯০-১০০ ডেসিবেলেও পৌঁছেছিল। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজির দাপট বেড়েছিল। তখন শহরবাসীর ক্ষোভ ছিল, নাকের ডগায় শব্দতাণ্ডব দেখেও পুলিশ যদি চুপ করে বসে থাকে, তাহলে আর কী করা যাবে! তবে এ বার শব্দদৈত্যকে জব্দ করেছে বৃষ্টিই।

সব দেখে শহরতলির এক বাসিন্দা রসিকতা করে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘এমন বৃষ্টিই তো চাইছিলাম। মা কালী কথা শুনেছে।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন