প্লাস্টিক বদলে পিকনিক কলাপাতায়, খুশি হলদিয়া

হলদিয়া পুর কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়দের দাবি, এ বার বড়দিনের ছুটিতে রেকর্ড সংখ্যক মানুষ পিকনিক করতে এসেছিলেন হলদি নদীর চরে বালুঘাটার ঝাউবনে। প্রচুর ভিড়ের কথা ভেবে তাই আগে থেকেই ওই এলাকায় দূষণ নিয়ে সতর্ক ছিল হলদিয়া পুরসভা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হলদিয়া শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:০৫
Share:

আর থার্মোকল নয়। পিকনিকে ভোজন কলাপাতাতেই। বড়দিনে বালুঘাটায়। নিজস্ব চিত্র

বড়দিন চলে গিয়েছে। কিন্তু হলদিয়ার বালুঘাটা জঙ্গলে এখনও ছড়িয়ে রয়েছে পিকনিকের বর্জ্য। অভিযোগ, প্লাস্টিক আর থার্মোকলে এখনও ভরে রয়েছে ‘সান সেট ভিউ পয়েন্ট’ এলাকা। যদিও এ বছর বড়দিনে পিকনিকে প্লাস্টিক এবং থার্মোকলের ব্যবহার আগের চেয়ে কম হওয়ায় খুশি পরিবেশকর্মীরা থেকে পরিবেশ প্রেমীরা।

Advertisement

হলদিয়া পুর কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়দের দাবি, এ বার বড়দিনের ছুটিতে রেকর্ড সংখ্যক মানুষ পিকনিক করতে এসেছিলেন হলদি নদীর চরে বালুঘাটার ঝাউবনে। প্রচুর ভিড়ের কথা ভেবে তাই আগে থেকেই ওই এলাকায় দূষণ নিয়ে সতর্ক ছিল হলদিয়া পুরসভা। মঙ্গলবার, বড়দিনে বালুঘাটার যে সব এলাকায় পিকনিক হয়েছিল সে সব এলাকায় পুর কর্মীদের অভিযানের জেরে পিকনিক করতে দলগুলি সতর্ক ছিল। হলদিয়ার বাড়সুন্দরা থেকে পিকনিক করতে এসেছিলেন যশরাজ ব্রহ্মচারী ও তাঁর বন্ধুরা। তাঁর দাবি, ‘‘হলদিয়ায় এমনিতে দূষণের পরিমাণ বেশি। তাই যাতে নদীতীরের জঙ্গল এবং আশেপাশের বাস্তুতন্ত্র সুরক্ষিত থাকে সে জন্য আমরা কলা পাতা শালপাতা ব্যবহার করেছি।’’ অন্যরাও প্লাস্টিক ও থার্মোকল ছাড়াই পিকনিক করেছিল বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকের। তবে, একেবারে যে প্লাস্টিক ও থার্মোকল মুক্ত এলাকা ছিল না, তাঁর নমুনা মিলেছে বড় দিনের পরদিন, বুধবার।

এ দিন ‘সান সেট ভিউ পয়েন্ট’-এর মধ্যে যত্রতত্র ওইসব সরঞ্জাম পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে বলে দাবি পরিবেশ কর্মীদের। মধুসূদন পড়্যা নামে হলদিয়ার এক পরিবেশ কর্মীর দাবি, ‘‘বুধবার সকালেও জঙ্গলে গিয়ে পিকনিকের বর্জ্য এবং থার্মোকল ও প্লাস্টিক পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। আমরা পুরসভাকে সে সব সাফাই করতে বলেছি।’’

Advertisement

তবে অন্য বছরের তুলনায় এ বছর তুলনায় প্লাস্টিক, থার্মোকলের ব্যবহার অনেকটা কমেছে বলে দাবি করেছেন পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের হলদিয়া-সুতাহাটা শাখার সম্পাদক মনীন্দ্র নাথ গায়েন। তাঁর দাবি, ‘‘প্লাস্টিকের দূষণ নিয়ে মানুষ এখন অনেক সচেতন। এটা হলদিয়ার পক্ষে ভাল দিক। তবে আগামি দিনেও ছুটির মরসুমে যাতে এই ধারা অব্যাহত থাকে, তারজন্য পুরসভাকে সজাগ থাকতে হবে।’’

এ ব্যাপারে ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গোপাল চন্দ্র দাস বলেন, ‘‘আমরা এ দিন সকাল থেকে নদীতীরের জঙ্গল সাফাই শুরু করেছি। তবে এদিনও কেউ কেউ পিকনিক করায় সাফাইয়ের কাজ শেষ করা যায়নি। যে অংশ সাফাই করা হয়েছে সেখানে ব্লিচিং ও চুন ছড়ানো হচ্ছে।’’

হলদিয়া পুরসভার টাউনশিপেও হলদি নদীর তীরে পিকনিকের বর্জ্যে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সুধাংশু মণ্ডল জানান, সর্বত্রই সাফাইয়ের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। কোথাও বর্জ্য পড়ে থাকলে সংশ্লিষ্ট দফতরকে খোঁজ নিয়ে পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে।

তবে এ বার পিকনিক করতে আসা দলগুলির অনেকে প্লাস্টিক আর থার্মোকল ব্যবহার না করায় খুশি পুরসভাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন