মমতার নির্দেশের পরেও গ্রামের পথে বড় লরি!

অভিযোগ, দিনে দিনে গড়বেতা, চন্দ্রকোনা, গোয়ালতোড়-সহ জেলা জুড়ে অবৈধ বালির কারবারের রমরমা বেড়েছে। তখন থেকেই গ্রামের রাস্তায় দশ-বারো চাকার লরি থেকে ডাম্পারের দাপট শুরু হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঘাটাল শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:৪০
Share:

মহেশপুর থেকে চন্দ্রকোনা গ্রামীণ সড়কে বালি নিয়ে বারো চাকার লরির অবাধ যাতায়াত। ছবি: কৌশিক সাঁতরা

গ্রামীণ রাস্তায় চার চাকার থেকে বড় লরির যাতায়াত বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরে চব্বিশ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও গ্রামীণ রাস্তায় লরি চলাচলে দাঁড়ি পড়েনি। অভিযোগ, বুধবারও গড়বেতার গাঙড়া থেকে ঝাড়বনি, চন্দ্রকোনার খানডাঙা থেকে মহেশপুর-সহ অধিকাংশ গ্রামীণ সড়কেই দিব্যি ছুটেছে বালি বোঝাই দশ চাকা লরি। নেই পুলিশ-প্রশাসনের নজরদারি।

Advertisement

অভিযোগ, দিনে দিনে গড়বেতা, চন্দ্রকোনা, গোয়ালতোড়-সহ জেলা জুড়ে অবৈধ বালির কারবারের রমরমা বেড়েছে। তখন থেকেই গ্রামের রাস্তায় দশ-বারো চাকার লরি থেকে ডাম্পারের দাপট শুরু হয়। রাস্তায় বালি বোঝাই গাড়ি্র যাতায়াত বন্ধের দাবিতে এক সময় টানা আন্দোলনে করেন গড়বেতা, চন্দ্রকোনার খিরাটি, ইশনগর, কমরপুর, কাশিপাতা, রামবেড়িয়া, সন্ধিপুর, ধাদিকা-সহ বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দারা। রাস্তা আটকে বিক্ষোভ থেকে পুলিশ-প্রশাসনের কাছে লিখিত আর্জিও জানিয়েছিলেন ভুক্তভোগীরা। অভিযোগ,সেই আন্দোলনে ফল হয়নি। বরং জুটেছিল বালি মাফিয়াদের হুমকি। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেও মঙ্গলবার কমরপুর গ্রামের বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, “ভেবেছিলাম মঙ্গলবার থেকে রাস্তায় কম গাড়ি চলাচল করবে। পুলিশের নজরদারি শুরু হবে। স্বস্তি পাবেন এলাকার বাসিন্দারা।” অভিযোগ, মঙ্গলবারও এই সব রাস্তায় দেখা মিলেছে বালি বোঝাই গা়ড়ি। এলাকার বাসিন্দাদের আক্ষেপ, “খোদ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর তো গ্রামীণ রাস্তাগুলিতে এতটুকুও প্রভাব পড়ল না।”

পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলা সড়ক হোক বা পুরসভার, পঞ্চায়েতের ঢালাই রাস্তা— এই স্তরের রাস্তা গুলির বহন ক্ষমতা খুব বেশি নয়। সর্বাধিক দশ টন ভার বহন করতে পারে এই রাস্তা। অভিযোগ, মঙ্গলবারও গড়বেতার রঘুনাথপুর থেকে রাধানগর, কেশেডাল-ভগবন্তপুর, খুড়শি-ধুলিয়াডাঙা, খানডাঙা-মহেশপুর-সহ সংশ্লিষ্ট সব গ্রামীণ রাস্তাতেই গড়ে তিরিশ-পঁয়ত্রিশ টন কোথাও তারও বেশি পরিমাণ বালি নিয়ে দশ-বার চাকার লরি চলাচল করেছে।

Advertisement

এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, বালি গাড়ির দাপট এতটাই যে দুর্ঘটনার ভয়ে রাস্তায় বেরোতেই ভয় পাচ্ছেন স্থানীয়রা। গাড়ির শব্দ ও ধোঁয়ায় গ্রামে দূষণ ছড়াচ্ছে। বসে যাচ্ছে রাস্তা। পিচ উঠে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়ে যাওয়ায় হাঁটাচলা করতেও সমস্যা হচ্ছে। বালি বোঝাই গাড়ির দাপট বাড়তে থাকায় কৃষকেরাও ফসল নিয়ে ওই সড়ক এড়িয়ে মেঠো রাস্তা ব্যবহার করতে বাধ্য হয়েছেন। তাঁদের প্রশ্ন, ‘‘কবে থেকে শুরু হবে পুলিশ-প্রশাসনের নজরদারি। গ্রামীণ রাস্তায় বালি গাড়ির দাপট কমবে কবে?”

জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘পুলিশি নজরদারি আরও বাড়ানো হবে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন