Bike Stunt

নিষিদ্ধ মরণ-কুয়োয় ঘুরছে বাইক

দুর্ঘটনার কারণে রাজ্য সরকার ‘মরণ-কুয়ো’ খেলাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। বহু মেলাতেই আগের মতো আর এই খেলা বসাতে দেখা যায় না। কারণ অনুমতি দেয় না প্রশাসন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পটাশপুর শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২২ ০৮:৪০
Share:

মেলায় মরণ কুয়ো। নিজস্ব চিত্র

মেদিনীপুর পুরসভা পেরেছে। পারল না পটাশপুর ব্লক প্রশাসন। ‘মরণ-কুয়ো’ খেলা ‌যে নিষিদ্ধ করা হয়েছে তা জানেনই না মেলার উদ্যোক্তারা।

Advertisement

পূর্ব মেদিনীপুরের পঁচেটে রাস উৎসব উপলক্ষে দশদিনের মেলা বসেছে। মেলায় অন্যান্য আকর্ষণের সঙ্গে রমরমিয়ে চলছে নিষিদ্ধ মরণকুয়োর খেলা। প্রাণের ঝুঁকি নিয়েও খেলা দেখতে উপচে পড়ছে ভিড়। মেলার মঞ্চ শুরু থেকে নানা অনুষ্ঠানে দেখা যাচ্ছে রাজ্যের মন্ত্রী থেকে নেতা বিধায়কদেরও। অথচ বেহুঁশ প্রশাসন। পটাশপুর-২ এর বিডিও শঙ্কু বিশ্বাস বলেন, ‘‘মেলায় এই ধরনের নিষিদ্ধ খেলা বসানোর বিষয়টি নজরে নেই। পুলিশকে বলেছি দ্রুততার সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে।’’

দুর্ঘটনার কারণে রাজ্য সরকার ‘মরণ-কুয়ো’ খেলাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। বহু মেলাতেই আগের মতো আর এই খেলা বসাতে দেখা যায় না। কারণ অনুমতি দেয় না প্রশাসন। গত রবিবার মেদিনীপুর শহরের কলেজিয়েট স্কুলমাঠে জগদ্ধাত্রী পুজো উপলক্ষে মেলায় ‘মরণ-কুয়ো’ খেলা বসানো হয়েছিল। পুরপ্রধান মেলা পরিদর্শন করে ওই খেলার অনুমতি না দেওয়ায় তা বন্ধ হয়ে যায়। যদিও পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের অনুমোদিত পটাশপুরের জবদা প্রাচীন রাস মেলায় নিষিদ্ধ ‘মরণকুয়ো’র খেলা রমরমিয়ে চলছে। প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে উৎসুক মানুষ খেলা দেখতে মরণকুয়োর মাচায় ভিড় করছেন।

Advertisement

দশদিনের এই মেলা শুরু হয়েছে গত ৫ নভেম্বর। মেলার আয়োজকরা এই সকল জয় রাইড সংস্থাগুলিকে টাকার চুক্তিতে মেলায় নিয়ে আসেন। কাঠের পাটাতন ও লোহার পাইপ সহ অন্যান্য যন্ত্রাংশ দিয়ে মরণকুয়ো তৈরি হয়। দেখতে অনেকটাই ফানেলের মতো। মাটি থেকে ১৫-২০ ফুট উঁচু কাঠের পাটাতনের সঙ্গে লোহার পাইপ যুক্ত করে কাঠামো তৈরি করা হয়। সেই কুয়োর মধ্যে বাইক ও চার চাকার গাড়ি নিয়ে খেলোয়াড়রা হাওয়ার গতিতে ঘুরপাক খান। অস্থায়ী এই কুয়োর পনেরো ফুট উঁচুতে লোহার পাটাতনে উপর বিপজ্জনক ভাবে দাঁড়িয়ে একসঙ্গে খেলা দেখেন শতাধিক মানুষ। কুয়োর ভিতরে বাইক ও গাড়ি পাক খেতে শুরু করলেই কুয়োর অস্থায়ী কাঠামো বিপজ্জনক ভাবে কাঁপতে থাকে। সামান্য বিভ্রাট হলেই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। যদিও নিষিদ্ধ এই খেলাকে একপ্রকার স্বীকৃতি দিয়েছেন মেলা উদ্যোক্তারা।

সূত্রের খবর, মেলার অনুমতি জন্য স্থানীয় ব্লক প্রশাসন থেকে মহকুমা প্রশাসনের সম্মতিক্রমে জেলা পরিষদ অনুমতি দেয়। স্থানীয় প্রশাসন মেলা পরিদর্শন না করে কীভাবে অনুমোদন দিল সেই নিয়ে এলাকার মানুষ প্রশ্ন তুলছেন। মেলা কমিটির সহ সভাপতি স্থানীয় আড়গোয়াল গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের উপপ্রধান অপরেশ সাঁতরা। মেলার উদ্বোধন থেকে এযাবৎ তৃণমূলের একাধিক রাজ্য নেতা থেকে মন্ত্রী ও বিধায়কদের মঞ্চে দেখা গিয়েছে। যদিও মেলা উদ্যোক্তাদের দাবি ‘মরণকুয়ো’ যে নিষিদ্ধ তা তাঁদের জানা নেই। স্থানীয় প্রশাসন অবশ্য পুলিশকে জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন