জীর্ণ: ভেঙে গিয়েছে সেতু। নদী খাতেই তৈরি হয়েছে রাস্তা। নিজস্ব চিত্র
গত বছর বন্যার জলে গোয়ালতোড়ে জগারডাঙায় ভেঙে গিয়েছিল কাঠের ‘ফেয়ার ওয়েদার’ সেতু। তারপর থেকে আর মেরামতি হয়নি। নদী খাত দিয়ে মোরাম রাস্তাই যাতায়াতের ভরসা। বর্ষায় নদীর জল বাড়লে বন্ধ হয়ে যাবে এই পথও। তখন কী হবে, তা নিয়ে চিন্তায় এলাকার বাসিন্দারা।
গোয়ালতোড়ের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোর মধ্যে হুমগড় অন্যতম। এখানে বাজারে রোজ বহু মানুষ আসেন। অদূরেই রয়েছে জগারডাঙা। পাশ দিয়ে গিয়েছে শিলাবতী নদী। নদীর একদিকে হুমগড়। অন্য দিকে পাথরবেড়্যা। নদীর উপর রয়েছে কাঠের ‘ফেয়ার ওয়েদার’ সেতু। গতবার বন্যায় জলের তোড়ে সেতুর একাংশ ভেঙে গেলেও মেরামতি করা হয়নি। তখন বিকল্প হিসেবে পাশে মোরামের রাস্তা তৈরি হয়েছিল। এখন নদীর এপার থেকে ওপার যাতায়াতের মাধ্যম এই রাস্তাই।
এই সেতুর একদিকে রয়েছে জগারডাঙা, পাথরবেড়্যা, ইছেরা, মদনপুর, শিরোমণিপুরের মতো গ্রাম। অন্য দিকে হুমগড়, চাঁদাবিলা প্রভৃতি। বাজার রয়েছে হুমগড়ে। তাই জগারডাঙা, পাথরবেড়্যা, ইছেরা, মদনপুর, শিরোমণিপুর গ্রামের বাসিন্দাদের রোজই হুমগড়ে আসতে হয়। ভারী বৃষ্টি হলেই নদীতে জল বাড়ে। তখন ওই মোরাম রাস্তা জলের তলায় চলে যায়। সেতুর একাংশও ভাঙা। ফলে, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দা সুধাংশু লোহার বলছিলেন, “একটু ভারী বৃষ্টি হলেই সমস্যা। তখন যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ভরসা বলতে নৌকা।”
স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রতিবার বর্ষা পেরোনোর পরই শিলাবতীর উপর কাঠের সেতু তৈরি হত। এ জন্য বেশ কয়েক হাজার টাকা খরচ হত। ভারী বৃষ্টি হলে অবশ্য সেতুও জলের তলায় চলে যায়। তখন নৌকোও নামানো যায় না। ঘুরপথে যাতায়াত করতে হয় মানুষকে। রোজকার এই সমস্যা মেটাতে জগারডাঙায় পাকা সেতুর দাবি দীর্ঘদিনের। অথচ, এখনও সেই দাবিপূরণ হয়নি। কেন? জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “সেতু তৈরির আগে জমি অধিগ্রহণের একটা ব্যাপার রয়েছে। অর্থেরও একটা ব্যাপার রয়েছে। মাইতায় সেতু তৈরি জরুরি ছিল। ওখানে সেতু হয়েছে। এ বার জগারডাঙার বিষয়টি দেখা হবে।”
জগারডাঙা থেকে সাত কিলোমিটার দূরেই মাইতা। এখন জগারডাঙ্গা যে সমস্যায় ভুগছে, মাস কয়েক আগে মাইতাও সেই সমস্যায় ভুগেছে। মাইতায় নতুন সেতু তৈরির আগে ফসল বেচতে সমস্যায় পড়তে হত চাষিদের। নদীর উপর ছিল বলতে নড়বড়ে কাঠের সেতু।
বর্ষায় জল বাড়লেই সেই সেতু ভেঙে পড়ত। মাস কয়েক আগে মাইতায় নতুন সেতু হয়েছে। সেতুটি চালুও হয়েছে। মাইতার মতো জগারডাঙার মানুষের নুখে কবে হাসি ফুটবে? স্থানীয় বিধায়ক আশিস চক্রবর্তীর আশ্বাস, “সমস্যার সমাধানে এ বার পদক্ষেপ করা হবে।”