খোঁপা থেকে চন্দ্রহার, ঘুঁটের উৎসব হলদিয়ায়

অচিরাচরিত এবং জৈব্য শক্তির গুরুত্বকে তুলে ধরতে তিনি ওই উৎসবের আয়োজন করেন।

Advertisement

আরিফ ইকবাল খান

হলদিয়া শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৮ ১২:৩১
Share:

বাহারি ঘুঁটে। —নিজস্ব চিত্র।

ঘুঁটে দিয়ে শিল্পকলা। তারও উৎসব!

Advertisement

শুনতে অন্য রকম লাগলেও হলদিয়ায় গত তিনবছর ধরে ওই উৎসবের আয়োজন করছেন এক অবরসপ্রাপ্ত শিক্ষক। রাধাকান্ত চক্রবর্তী নামে বিরাশি বছরের ওই প্রবীণ শিক্ষকের বক্তব্য, জীবাশ্ম জ্বালানি এবং চিরাচরিত শক্তি একদিন ফুরিয়ে যাবে। তাই অচিরাচরিত এবং জৈব্য শক্তির গুরুত্বকে তুলে ধরতে তিনি ওই উৎসবের আয়োজন করেন।

সুতাহাটার জুনাটিয়া গ্রামের ওই প্রবীণ শিক্ষক এলাকায় কাশীবাবু নামে পরিচিত। প্রদীপ, কল্কে, সুদর্শন চক্র, মহিলাদের মাথার খোঁপা, চিতল মাছ, পটল মাছ, চন্দ্রহার, রুটি, লুচি -সহ নানা আকৃতির ঘুঁটে তাঁর সংগ্রহে রয়েছে। এক সময়ের ভূগোলের শিক্ষক রাধাকান্তবাবুর বাড়ির ছাদেই রয়েছে গোবরের ঢিপি। সেখানেই নানা রকমের ডাইস রয়েছে। যা থেকে বানানো হয় নানা আকৃতির ঘুঁটে।

Advertisement

রাধাকান্তবাবু বলেন, ‘‘একদিন জীবাশ্ম জ্বালানি ফুরিয়ে যাবে। তাই এখন থেকেই বিকল্প খুঁজতে হবে।’’ ঘুঁটে যে একমাত্র বিকল্প জ্বালানি নয়, তা তিনি জানেন। তবে তাঁর বক্তব্য, এই জ্বালানিকে অস্বীকার করা যায় না। রাধাকান্তবাবু বলেন, ‘‘সুতাহাটা, মণিরামপুর, শালুকখালি, দোরো কৃষ্ণনগর, গুয়াবেড়া, ঊর্ধ্বমাল, জুনাটিয়া গ্রাম ঘুরে ঘুঁটে শিল্পীদের একত্রিত করি।’’ তিনি জানান, একটি ক্লাবের সহযোগিতায় প্রথমবার প্রতিযোগিতার আযোজন করেছিলাম। অভূতপূর্ব সাড়া মিলেছিল। এর পরেই ঘুঁটে উৎসব জনপ্রিয় হয়।

হলদিয়ার সুতাহাটার সুবর্ণজয়ন্তী ভবনেই উৎসব হওয়ার কথা। কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচন উপলক্ষে উৎসবের একটু দেরি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রাধাকান্তবাবু। তিনি জানান, এবারের উৎসবে ৪০ জন শিল্পীকে পেতলের গামলা দিয়ে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। প্রকাশিত হবে ঘুঁটে নিয়ে একটি পত্রিকাও। সেই বইয়ে থাকবে বাংলাদেশের কবি-সাহিত্যিকদের লেখা। ঘুঁটে উৎসবের আমন্ত্রণ পত্রও অভিনব। রাধাকান্ত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘অশ্বত্থ গাছের পাতাকে ২৫ দিন গোবর জলে ডুবিয়ে রেখে ক্লোরোফিল মুক্ত করা হয়েছে। এরপর ম্যাট ফিনিশ কাগজে ছবি এঁকে সেই ছবির ওপর আমন্ত্রণ কথা লিখে অশ্বত্থ পাতা লাগানো হচ্ছে। সেই পাতা ল্যামিনেশন করে বিলি করা হবে।’’

অবশ্য শুধু আমন্ত্রণ পত্রের অভিনবত্বই নয়, উৎসবে দর্শকদের জন্যও থাকবে চমক। নারকোল নাড়ু থেকে তিলের নাড়ু-সহ নানা দেশীয় মিষ্টি দিয়ে অভ্যর্থনা করা হবে সকলকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন