পঞ্চায়েতের ভোট-পর্ব মিটেছে এক মাস হতে চলল। ভোটে তৃণমূলের প্রার্থী জিতেওছেন। তবু তৃণমূল-নির্দল দ্বন্দ্ব থামেনি দাসপুরের জোতকানুরামগড়ে।
সেই দ্বন্দ্বেই শুক্রবার রাতে আরিফ মল্লিক নামে এক তৃণমূল সমর্থকের গায়ে অ্যাসিড ছোড়ার অভিযোগ ওঠে নির্দল সমর্থকদের বিরুদ্ধে। স্থানীয় সূত্রে খবর, অভিযুক্ত জাহিরুদ্দিন খান এবং আবদুল রহমান খানরা এলাকায় বিক্ষুব্ধ তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত। শুক্রবার রাতেই আক্রান্তের পরিবারের পক্ষ থেকে দাসপুর থানায় মামলা করা হয়। পুলিশ আবদুল রহমান খানকে গ্রেফতারও করেছে।
মূল অভিযুক্ত জাহিরুদ্দিন খান ওরফে চাঁদকে খুঁজছে পুলিশ। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলার পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “নির্দল প্রার্থীকে নিয়ে ওই এলাকায় গোলমাল চলছিল। তার জেরে এই ঘটনা বলে মনে হচ্ছে। একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।”
পঞ্চায়েত ভোটে দাসপুর-২ ব্লকের কামালপুর অঞ্চলের জোতকানুরামগড়ে শাসকদলের সঙ্গে সমানে সমানে টক্কর দিয়েছিলেন নির্দল প্রার্থী সিভিক ভলান্টিয়ার হাবিবুল রহমানের স্ত্রী রুকসানা খাতুন। শেষমেশ অবশ্য হেরে যান তিনি। তারপর থেকে এলাকায় গোলমাল চলছে বলে খবর। শুক্রবার সকালেও দু’পক্ষের মধ্যে বচসা বাধে। ক্রমে তা গড়ায় হাতাহাতিতে। বিকেলের দিকে নির্দল সমর্থক জাহিরুদ্দিন ও আবদুলের নেতৃত্বে গোলমাল চরমে ওঠে বলে অভিযোগ।
তখনই বাইকে এলাকায় ঘোরাঘুরি করছিলেন আরিফ মল্লিক নামে ওই তৃণমূল সমর্থক। রূপনারায়ণ নদের পাশে তাঁকে অ্যাসিড ছোড়া হয় বলে অভিযোগ।
অ্যাসিড হামলার ঘটনা চাউর হতেই এলাকায় ক্ষোভ ছড়ায়। অভিযুক্তদের বাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখান বাসিন্দারা। খবর পেয়ে গ্রামে পৌঁছয় পুলিশ। পুলিশের সামনেও অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি জানান জোতাকানুরামগড়ের বাসিন্দারা। গভীর রাত পর্যন্ত বিক্ষোভ চলে। এলাকায় পুলিশ পিকেট বসেছে।
কিন্তু অ্যাসিড এল কোত্থেকে?
পুলিশ জানিয়েছে, এলাকায় সোনার কারবার চলে। ফলে, সোনার কাজে ব্যবহৃত অ্যাসিড পাওয়া খুব একটা কঠিন নয়। তবে কোথা থেকে অ্যাসিড আনা হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
আরিফের দু’ চোখেই অ্যাসিড লেগেছে। বাঁ চোখের অবস্থা বেশি খারাপ। শুক্রবার রাতেই তাঁকে ঘাটাল মহকুমা হাসপাতাল থেকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
শনিবার এলাকায় গিয়ে গেল, চারপাশ থমথমে। কাছেই শীতলা পুজো উপলক্ষে মেলা বসেছে। তবে সে চত্বরও শুনশান। গ্রামের মানুষের একটাই কথা, ভোট তো মিটেছে। এ বার শান্তিও ফিরুক।