পিংলায় বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের পরই পূর্ব মেদিনীপুর জেলা জুড়ে চলছে পুলিশের তল্লাশি অভিযান। এ বার পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় বেআইনি শব্দবাজি তৈরির মশলা উদ্ধার করল পুলিশ। এগরা-১ ব্লকের সাহারা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার খাদিকুল গ্রামের তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য কৃষ্ণপদ বাগ ওরফে ভানু-র বাড়ি থেকে রবিবার সকালে বেআইনি শব্দবাজি ও বোমা তৈরির মশলা মেলে। পুলিশের দাবি, উদ্ধার হওয়া বারুদ, মশলা ও বাজি-র আনুমানিক তিন লক্ষ টাকার বেশি। এগরা থানার ওসি মদনমোহন রায় বলেন, ‘‘খাদিকুল গ্রামে ভানু বাগের বাড়ি থেকে আনুমানিক তিন লক্ষাধিক টাকার বাজির মশলা ও বাজি উদ্ধার করা হয়েছে। তবে অভিযুক্ত পলাতক।’’
ভানুবাবু যে তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য ও বর্তমান সমর্থক তা মেনে নিয়েছেন সাহারা পঞ্চায়েতের প্রধান শান্তিলতা দাসের স্বামী প্রভুপদ দাস। তাঁর কথায়, ‘‘এলাকায় বাজির বরাত পেলে ভানু তা তৈরি করে দিত। পুলিশে সেটাকেই বড় করে দেখাচ্ছে।’’ এগরা-১ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি সিদ্ধেশ্বর বেরা বলেন, ‘‘বিষয়টি শোনার পর দলীয় স্তরে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি।’’ পুলিশের দাবি অভিযুক্ত ভানু বাগের সন্ধান মেলেনি। কিন্তু এ দিন দুপুরে ফোনে ভানুবাবু বলেন, ‘‘এখন বিয়ের মরসুম। তাই বিক্রি করার জন্য বাজি রেখেছিলাম। আর পুলিশ তুবড়ির মশলা নিয়ে গিয়ে আমাকে অকারণ হয়রান করছে।’’
অন্য দিকে, বেআইনিভাবে বাজি তৈরি ও মজুত রাখার অভিযোগে শুক্রবার রাতে মহিষাদলের চিংরিমারি গ্রাম থেকে চার জনকে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার ধৃত মৃত্যঞ্জয় মাজি, সঞ্জয় মাজি, শক্তিপদ মাজি ও প্রশান্ত বেরা সকলেই চিংরিমারি গ্রামের বাসিন্দা। ধৃতরা আপাতত জামিনে মুক্ত।
শনিবার খড়্গপুরের কৌশল্যা এলাকায় একটি বাজি গুদামে হানা দিয়ে একটি ম্যাটাডোরে ওই শব্দবাজি নিয়ে যাওয়া হয়। কারবারে যুক্ত সন্দেহে কৌশল্যার অশোক দে, সুভাষপল্লির রাম দাস, গেটবাজারের সন্দীপ জৈন, বি সুরজ, ছোট আয়মার সতীশকুমার শিবহরিকে গ্রেফতার করে টাউন পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই ওই এলাকায় গুদামটি চলত। সেখানে বিপুল পরিমাণ বাজির সঙ্গেই শব্দবাজি সারা বছরের জন্য মজুত করা থাকত। পুলিশের কাছে খবর থাকলেও এত দিন পুলিশ পদক্ষেপ করেনি। তবে পিংলার ঘটনার পরে এ দিন পুলিশি তৎপরতায় খুশি এলাকাবাসী।