এখন পারাপারে নৌকোই ভরসা। নিজস্ব চিত্র।
জমি জটে আটকে ডেবরার লোয়াদা কংক্রিট সেতুর সংযোগকারী রাস্তার কাজ। টেন্ডার ডেকে বর্ষায় নদী পারাপারের জন্য একটি সংস্থাকে বরাত দিয়েছে ডেবরা পঞ্চায়েত সমিতি। কংসাবতীর উপর গাড়ি চলাচলের জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থা বাঁশের সাঁকো তৈরি করেছে। বিপজ্জনক দাবি করে সম্প্রতি সেই সাঁকোতে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। সমস্যায় স্থানীয়রা।
বছরের অন্য সময় জল না থাকায় নদীতটের উপর দিয়েই গাড়ি চলাচল করে। বর্ষায় জল বাড়ায় নদী পারাপারের জন্য কাঠের সাঁকো করা হয়েছে। প্রশাসনের দাবি, নদীর জলস্তর বাড়ছে। ফলে, সাঁকো ভেঙে বিপদের আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়াও নদী পারাপারের জন্য যে টেন্ডার ডাকা হয়েছে, তাতে কাঠের সেতুর কথা উল্লেখ ছিল না। স্থানীয় কয়েকজন অস্থায়ী ওই সেতু তৈরি করে টাকা নিয়ে পারপারের ব্যবস্থা করেছে। সেতু দিয়ে যাতে কেউ পারাপার করতে না পারে, সে জন্য নজরদারি চালানোর জন্য পুলিশকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
যদিও নদী পারাপারের বরাতপ্রাপ্ত সংস্থার মালিক অমলকুমার মণ্ডলের বক্তব্য, “ওই কাঠের সাঁকো অবৈধ নয়। তবে প্রশাসনের নির্দেশে আমরা ওই সাঁকো দিয়ে চলাচল বন্ধ করেছি। কিন্তু এতে স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ।” বিডিও জয়ন্ত দাস বলেন, “পঞ্চায়েত সমিতির মাধ্যমে লোয়াদায় নদী পারাপারের জন্য নৌ-পরিবহণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু বাসিন্দাদের উদ্যোগে একটি কাঠের সেতু তৈরি হয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বর্ষায় নদীতে জল বাড়ায় অস্থায়ী কাঠের সেতু বিপজ্জনক হয়ে পড়ছে। তাই ওই সেতুতে চলাচল বন্ধ করা হয়েছে।”
বছরের অন্য সময় জল না থাকায় দু’পারের লোয়াদা, মুরাস্তি, দাবাদাড়ি, নন্দবাড়ি, গোলগ্রাম, মলিহাটি গ্রাম-বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা নদীর উপর দিয়েই যাতায়াত করেন। চলাচল করে বাস, মোটরবাইকও। কিন্তু বর্ষা এলেই বাড়ে দুর্ভোগ। স্থানীয়দের দাবি মেনে ২০০২ সালে কাঁসাইয়ের উপর সেতু নির্মাণ শুরু হয়। ২০০৭ সালে নদীর উপরের অংশে সেতুর কাজ হয়েও যায়। যদিও জমি জটে দু’দিকের সংযোগকারী রাস্তার কাজ হয়নি। ফলে পড়ে রয়েছে অসম্পূর্ণ সেতু।
কংক্রিটের সেতু চালু হয়নি। প্রশাসন অস্থায়ী সেতুও বন্ধ করে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। নন্দবাড়ির বাসিন্দা ব্যবসায়ী গোবিন্দ পাল বলেন, “ প্রশাসন এত বছরেও কংক্রিটের সেতু চালু করতে পারল না। এখন কাঠের অস্থায়ী সেতুও বন্ধ করে দেওয়ায় অসুবিধা হচ্ছে।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘গাড়ি নিয়ে ৪০ কিলোমিটার ঘুরে আসতে হচ্ছে। কাঠের সেতু বন্ধ করার আগে কংক্রিটের সেতু চালু করা উচিত ছিল।” একইভাবে, স্থানীয় বাসিন্দা অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়েরও অভিযোগ, “খেয়া পারাপারে অনেক সময় লাগে। দ্রুত সংযোগকারী রাস্তা গড়ে কংক্রিটের সেতু তৈরি করা উচিত।”
কংক্রিটের সেতু কবে চালু হবে?
জেলা পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শৈবাল গিরি বলেন, “ওখানে জমি মালিকেরা জমি দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। জমির নতুন দর জানিয়ে আগামী সপ্তাহেই আমরা মালিকদের নিয়ে বৈঠকে বসব। তারপরেই জমি কিনে কবে সেতুর কাজে হাত দেওয়া হবে বলা যাবে।”