ভাতার জন্য লড়াই চলছে স্বাধীনতা যোদ্ধার

আদালত নির্দেশ দিয়েছে তাঁকে পেনশন দেওয়ার। অথচ ২০০৮ সালের সেই নির্দেশের পর কেটে গিয়েছে আরও আট বছর। কিন্তু ছবিটা বদলায়নি স্বাধীনতা সংগ্রামী যামিনীমোহন মাইতির জীবনের।

Advertisement

সুব্রত গুহ

ভগবানপুর শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৬ ০০:৩২
Share:

যামিনীমোহন মাইতি। —নিজস্ব চিত্র।

আদালত নির্দেশ দিয়েছে তাঁকে পেনশন দেওয়ার। অথচ ২০০৮ সালের সেই নির্দেশের পর কেটে গিয়েছে আরও আট বছর। কিন্তু ছবিটা বদলায়নি স্বাধীনতা সংগ্রামী যামিনীমোহন মাইতির জীবনের।

Advertisement

যামিনীবাবুর নাতি ভোলানাথ মাইতি জানান, ১৯৪২ সালে এন্ট্রান্স পাশ করে যামিনীবাবু ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। ব্রিটিশ পুলিশ তাঁর বাড়িতে আগুন লাগালে আগুনে পুড়ে মারা গিয়েছিলেন যামিনীবাবুর এক বোন। ১৯৮৬ সালের ১ জুলাই ভারত সরকারের পক্ষ থেকে যামিনীবাবুকে স্বাধীনতা সংগ্রামীর পেনশন চালু করে। ১৯৮৮ সালের ১৫ অগস্ট দেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধী যামিনীবাবুকে স্বাধীনতা সংগ্রামী হিসেবে তাম্রপত্র পদকে ভূষিত করেন। আর ১৯৯৪ সালে আচমকাই তাঁর পেনশন বন্ধ হয়ে যায়। পরে কাঁথির প্রাক্তন সাংসদ নীতীশ সেনগুপ্ত দিল্লিতে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, যামিনীবাবুর মৃত্যু হয়েছে এমন তথ্য পেয়েই বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। এরপর যামিনীবাবু প্রথমে তমলুক আদালত ও পরে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন। হাইকোর্ট ২০০৮ সালে যামিনীবাবুর স্বপক্ষে রায় দিয়ে চার সপ্তাহের মধ্যে যামিনীবাবুর পেনশন চালু ও বকেয়া দেওয়ার নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশ জারির পরও কিন্তু চালু হয়নি তাঁর পেনশন।

এখন পেনশন তো দূর, মামলার খরচ জোগাতে নাভিশ্বাস যামিনীবাবুর পরিজনদের। শতোর্ধ্ব যামিনীবাবুর কথায়, ‘‘হাইকোর্টের নির্দেশের পর তৎকালীন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বিভিন্ন জায়গায় আবেদন জানিয়েও কোন সুরাহা হয়নি। মমতা মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরও তাঁর কাছেও আবেদন জানিয়েছি। কিছুই হল না তো!’’

Advertisement

পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক রশ্মি কমলের কথায়, ‘‘স্বাধীনতা সংগ্রামীদের পেনশন দেন কেন্দ্রীয় সরকার। আমাদের পক্ষ থেকে যামিনীবাবুর পেনশন পাওয়ার যাবতীয় কাগজ কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আগেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে আমাদের কিছু করার নেই। তবুও যামিনীবাবুর পেনশন কেন চালু হয়নি বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নেব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন