তমলুকের সুইমিং পুলে ভাসে প্লাস্টিক

জলে ভাসছে প্লাস্টিকের কাপ, থার্মোকলের টুকরো, শ্যাম্পুর প্যাকেট। সুইমিং পুলের ঘাটে স্নান করছেন অনেকে। আবর্জনাময় জলে সাঁতার কাটছে একদল কিশোর।

Advertisement

আনন্দ মণ্ডল

তমলুক শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৭ ০০:৩৬
Share:

অপরিষ্কার: এভাবে নোংরা পড়ে থাকে জলে। নিজস্ব চিত্র

জলে ভাসছে প্লাস্টিকের কাপ, থার্মোকলের টুকরো, শ্যাম্পুর প্যাকেট। সুইমিং পুলের ঘাটে স্নান করছেন অনেকে। আবর্জনাময় জলে সাঁতার কাটছে একদল কিশোর। এটা কোনও গ্রামের পুকুরের ছবি নয়। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সদর শহর তমলুকে একমাত্র ছেলে-মেয়েদের সাঁতার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বৈকুণ্ঠ সরোবরের ছবিটা এমনই।

Advertisement

প্রায় ৬৩ বছরের প্রাচীন তমলুক সুইমিং ক্লাবের উদ্যোগে এই সরোবরে প্রায় প্রতি বছর ছেলে-মেয়েদের সাঁতার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তমলুক শহরে জেলা গ্রন্থাগারের কাছে অবস্থিত এই সরোবরটি তমলুক পুরসভার মালিকানাধীন। সরোবরে সাঁতার প্রশিক্ষণ, প্রতিযোগিতা আয়োজনের জন্য তমলুক সুইমিং ক্লাবের সঙ্গে পুরসভার চুক্তি রয়েছে। সরোবরের একাংশ নিয়ে তৈরি হয়েছে সুইমিং পুলও। সরোবরের পাশেই রয়েছে সুইমিং ক্লাবের অফিস ।

যদিও শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত এই পুলের নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ হয় না বলে অভিযোগ। নিয়মিত সরোবরের জল শোধন করায় দূষণ ছড়ায় বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের। দূষিত জলেই চলে সাঁতারের প্রশিক্ষণ।

Advertisement

তমলুক শহরের একমাত্র সুইমিং পুলের এমন অবহেলায় ক্ষুব্ধ ক্রীড়া মহল। শহরের বাসিন্দা পেশায় ব্যাঙ্ককর্মী প্রবীর পালের ছেলে স্কুলপড়ুয়া অগ্নিভ পাল বৈকুণ্ঠ সরোবরে আগে সাঁতার শিখত। প্রবীরবাবুর অভিযোগ, ‘‘ওই সুইমিং পুলের জলে সাঁতার শেখায় কানে সংক্রমণের সমস্যায় ভুগতে শুরু করে ছেলে। সুইমিং পুলের দূষিত জলের কারণে এমনটা হয়েছিল বলেই জানতে পারি। তাই বাধ্য হয়ে ছেলের সাঁতার শেখা বন্ধ করতে হয়েছে।’’

শহরের পার্বতীপুরের বাসিন্দা প্রদীপ্ত খাটুয়া বলেন, ‘‘সুইমিং পুলের জল নিয়মিত পরিষ্কার হয় না। আবর্জনা ফেলা থেকে অবাধে ময়লা কাপড় কাচা, সাবান মেখে স্নান করা সবই চলে। তাই ওখানে মেয়ের সাঁতার শেখা বন্ধ করে দিয়েছি।’’ প্রদীপ্তবাবুর অভিযোগ, ‘‘সাঁতার শেখার জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নেওয়া হয়। অথচ সুইমিং পুলের জল পরিশোধন, নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণে নজর দেওয়া হয়না।’’

সমস্যার কথা স্বীকার করছেন তমলুকের পুরপ্রধান তথা সুইমিং ক্লাবের সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ সেন। যদিও তাঁর দাবি, ‘‘প্রতি বছর সাঁতার প্রশিক্ষণ শুরুর আগে সুইমিং পুলের জল শোধন করা হয়। ওই জলে সাবান, শ্যাম্পু মেখে কেউ যাতে স্নান করতেও নিষেধ করা হয়।’’ তিনি বলছেন, ‘‘সরোবরের জলে মাছ চাষ বন্ধ করতে পুরসভার পক্ষ থেকে গত দু’বছর লিজ দেওয়া বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও মাছ চাষ হচ্ছে বলে অভিযোগ এসেছে। এ বিষয়ে শীঘ্রই কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’’ রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, ‘‘জল পরিশোধনের ব্যবস্থা ও আধুনিক সুইমিং পুল গড়ার জন্য প্রকল্প তৈরি করে রাজ্য ক্রীড়া দফতরে জমা দেওয়া হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন