সাফাই হয় না, জঞ্জালের স্তূপ জমছে রাস্তায়

ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ায় দুর্গাপুজোর আগে পুরসভা জঞ্জাল সাফাইয়ে বিশেষ অভিযান চালানোয় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিল শহরবাসী। যদিও কালীপুজোর পর থেকে ফের পুর-অভিযানে ভাটা পড়েছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৭ ০২:৩৯
Share:

টেকা-দায়: সাফাই না হওয়ায় আবর্জনা থেকে ছড়াচ্ছে দূষণ। খড়্গপুরের বিদ্যাসাগরপুরে দুর্গন্ধে নাভিশ্বাস।

ডেঙ্গির চোখরাঙানি থেকে এখনও রক্ষা মেলেনি। তারপরেও রেলশহরের রাস্তায় ঘুরলে অবশ্য চোখে পড়বে, ভ্যাটে জমে আবর্জনার স্তূপ। নিয়মিত সাফাই না হওয়ায় ছড়াচ্ছে দূষণ। অবরুদ্ধ নিকাশি নালাও মশার আঁতুড়ঘর। ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ায় দুর্গাপুজোর আগে পুরসভা জঞ্জাল সাফাইয়ে বিশেষ অভিযান চালানোয় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিল শহরবাসী। যদিও কালীপুজোর পর থেকে ফের পুর-অভিযানে ভাটা পড়েছে বলে অভিযোগ। ফল, আগের জঞ্জাল-চিত্র ফিরে এসেছে শহরে।

Advertisement

দিনে দু’বার আবর্জনা সাফাইয়ে অভিযানে নামার কথা থাকলেও এখনও তা বাস্তবায়িত হয়নি। খড়্গপুরের ইন্দা, কৌশল্যা, বুলবুলচটি, গোপালনগর, পুরাতনবাজার, সাঁজোয়াল, সুভাষপল্লি, ভবানীপুর, মালঞ্চর এলাকায় আবর্জনার দুর্গন্ধে জেরবার এলাকার বাসিন্দারা।

শহরের ২৪ ও ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। কৌশল্যায় এখনও ডেঙ্গি আক্রান্তের সন্ধান মিলছে। তারপরেও অবশ্য পুরসভার হুঁশ নেই। একই হাল খড়্গপুর শহরের রেল এলাকারও।

Advertisement

২৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রেলকর্মী রাজকুমার সিংহ বলেন, “বুলবুলচটি ও কৌশল্যায় আবর্জনা জমে নিকাশি নালা অবরুদ্ধ। বুলবুলচটিতে রাস্তায় স্তূপাকার আবর্জনা। ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। পুর প্রতিনিধিরা সব দেখলেও কিছুই কাজ হচ্ছে না।” একইভাবে, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাঁজোয়ালের বাসিন্দা রাখি আচার্যও বলছেন, “যত্রতত্র আবর্জনা পড়ে থাকে। জঞ্জাল ফেলার ভ্যাট পর্যন্ত নেই। যে যেখানে পারছে আবর্জনা ফেলছে। অথচ সেই আবর্জনা সাফাই করার লোক নিয়মিত না আসায় সারা সপ্তাহ ধরে ভুগতে হচ্ছে।”

শহরের ২০ নম্বর ওয়ার্ডে রাস্তায় জঞ্জালের স্তূপ।

এ বিষয়ে ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা পুরসভার জনস্বাস্থ্য বিষয়ক পুর-পারিষদ বেলারাণি অধিকারী বলেন, “পুজোর আগে ডেঙ্গি পরিস্থিতির জন্য বিশেষ অভিযান চালানো হয়েছিল। কিন্তু সেটা তো সারাবছর চলবে না। কালীপুজোর পরে ফের নিয়মিত সাফাই হচ্ছে। তবে দু’বেলা আবর্জনা তোলার কোনও সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি।”

খড়্গপুর শহরের ইন্দার ইঙ্গিত ক্লাবের সামনে ওটি রোডের ওপরে ভ্যাট থেকে দিনে একবার সকালে আবর্জনা তোলা হচ্ছে। কিন্তু ওই ভ্যাটে সংলগ্ন তিনটি ওয়ার্ডের আবর্জনা ফেলা হয়। এমনকী ইন্দা বাজারের আবর্জনাও ফেলা হয় ওই ভ্যাটেই। ফলে জঞ্জালের দুর্গন্ধে ওটি রোড সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা নাজেহাল। স্থানীয় ব্যবসায়ী রণজিৎ জানা বলেন, “এলাকার ভ্যাটে সারাদিন ধরে তিনটি ওয়ার্ডের আবর্জনা জমে। বিশেষ করে বেলা ১২টার পর থেকে জঞ্জালের পরিমাণ বাড়ে। কিন্তু প্রতিদিন সকালে একবারই পুরসভার গাড়ি আবর্জনা তুলে নিয়ে যায়।’’ তাঁর দাবি, ‘‘দুর্গাপুজোর আগে যেভাবে দু’বেলা আবর্জনা তোলা হচ্ছিল, ফের সেভাবে জঞ্জাল সাফাই করা হলে তবেই সমস্যা মিটবে।”

খড়্গপুরের পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, “দীর্ঘ ৪০ বছরে খড়্গপুরে একটা আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গাও তৈরি হয়নি, এটা লজ্জার। আমরা পুরসভায় ক্ষমতায় আসার পরে তালবাগিচার কাছে একটি জমি পেয়েছি। সেখানে আবর্জনা ফেলার জন্য পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘আবর্জনা ফেলার জমি না থাকায় সমস্যা হচ্ছে। তবে নিয়মিত আবর্জনা সাফাই চলছে।”

ছবি: দেবরাজ ঘোষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন