রাস্তার ধারেই স্তূপীকৃত হয়ে পড়ে রয়েছে বালি, স্টোনচিপস্। ঘাটাল-পাঁশকুড়া সড়কে। — নিজস্ব চিত্র।
ইমারতি দ্রব্যের দখলে রাস্তা।
রাস্তার ধারে প্রায়ই ইট-বালি-স্টোনচিপস্ স্তূপীকৃত হয়ে পড়ে থাকতে যায়। ফলে রাস্তা সঙ্কীর্ণ হয়ে যাওয়ায় বাড়ছে যানজট। হয়রানির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। দুর্ঘটনাও ঘটছে আকছার। তাই এ বার রাস্তা দখল করে ইমারতি দ্রব্যের মজুত আটকাতে রবিবার ঘাটাল শহরের কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা ইমারতি দ্রব্যের ব্যবসায়ী অসিত বেরার নামে মামলা রুজু করল পুলিশ। একইসঙ্গে, রাস্তার ধারে পড়ে থাকা আট লরি বালি, স্টোনচিপস্-সহ অন্য সামগ্রীও বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। ঘাটাল থানার ওসি সুদীপ ঘোষাল বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই সমস্ত ব্যবসায়ীদের রাস্তায় ইমারতি সামগ্রী ফেলে রাখতে নিষেধ করা হয়েছিল। তবে তাতে কাজ হয়নি। তাই এ বার রাস্তার ধারে ইমারতি দ্রব্য ফেলে রাখার অভিযোগে মামলা রুজু হয়েছে।’’ অসিতবাবু বলেন, “এটা সত্যি অন্যায়। রাস্তার ধারে এতদিন সকলে ইমারতি দ্রব্য ফেলে রাখত দেখে আমিও রেখেছিলাম। তবে এ বার থেকে নির্দিষ্ট জায়গাতেই ইমারতি দ্রব্য রাখব।’’
শুধু ঘাটাল শহর নয়, ঘাটাল-পাঁশকুড়া, ঘাটাল-চন্দ্রকোনা, ক্ষীরপাই-আরামবাগ রাস্তাগুলির ধারেও চোখে পড়বে, ডাঁই করে রাখা রয়েছে বাড়ি তৈরির সরঞ্জাম। ফলে কমছে রাস্তার পরিসর। একইসঙ্গে, রাস্তার ধারে বাস, লরি দাঁড় করিয়ে মেরামতির কাজ তো আছেই। অনেকক্ষেত্রে জাতীয় সড়কে রাতে রাস্তার ধারে লরি, ট্রেলার দাঁড়িয়ে থাকে। অথচ গাড়ির সব আলো বন্ধ থাকায় অন্ধকারে অন্য গাড়ির চালক গাড়িটি দেখতে পায় না। তার জেরেও দুর্ঘটনা ঘটে আকছার।
পুলিশ সূত্রে খবর, ঘাটাল মহকুমার বিভিন্ন রাস্তার ধারে ইমারতি দ্রব্য পড়ে থাকার জন্য গত তিন মাসে প্রায় ৪০টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ঘাটাল শহরেই শুধুমাত্র ১২টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। বালির উপর যেতে গিয়ে গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারানোয় তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর জখম হন ১৮ জন। তাই রাস্তা দখল রুখতে এ বার দাসপুর ও চন্দ্রকোনা থানা এলাকাতেও অভিযান শুরু হবে।
ঘাটাল-চন্দ্রকোনা সড়কের ধারে অনেকসময় বিভিন্ন চেরাই কলে চেরাই করার জন্য বড় বড় গাছের গুঁড়িও রাস্তার ধারে ফেলে রাখা হয়। পুলিশি অভিযানের খবর পেয়ে টনক নড়েছে বন দফতরেরও। বন দফতরের ডিএফও (খড়্গপুর) অঞ্জন গুহ বলেন, “এ বার বন দফতর থেকেও অভিযান শুরু করা হবে। রাস্তার ধারে গাছের গুঁড়ি পড়ে থাকতে দেখলেই তা বাজেয়াপ্ত করা হবে। আর সংশ্লিষ্ট জায়গার কাঠের মিলের মালিকদের বিরুদ্ধেও মামলা করা হবে।”