মাধ্যমিকে পরীক্ষার্থী সংখ্যায় এগিয়ে মেয়েরা

পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট, জেলায় এবছর ছাত্রদের তুলনায় প্রায় ৪ হাজার বেশি ছাত্রী মাধ্যমিক দিচ্ছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:১৫
Share:

বেঞ্চে পরীক্ষার্থীদের রোল নম্বর লাগানো হচ্ছে। সোমবার তমলুক হাইস্কুলে। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস

আজ থেকে শুরু মাধ্যমিক পরীক্ষা। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় এবার পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৬১ হাজার ৯১৮ জন। এর মধ্যে ছাত্র ২৮ হাজার ৯৬৭ জন ও ছাত্রীর সংখ্যা ৩২ হাজার ৯৫১ জন। পরীক্ষাকেন্দ্রের সংখ্যা ১০৬টি। এর মধ্যে মূলকেন্দ্র ৮২ টি। উপকেন্দ্র ২৪ টি।

Advertisement

পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট, জেলায় এবছর ছাত্রদের তুলনায় প্রায় ৪ হাজার বেশি ছাত্রী মাধ্যমিক দিচ্ছেন।

ছেলেদের তুলনায় মেয়ে পরীক্ষার্থী বেশি হওয়ার কারণ কী?

Advertisement

বাজকুল বলাইচন্দ্র বিদ্যাপীঠে ছাত্র-ছাত্রী উভয়েই পড়াশোনা করে। বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক চন্দনকুমার মাইতির মতে, ‘‘অভিজ্ঞতায় দেখেছি পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির সময় ক্লাসে ছাত্রসংখ্যা ছাত্রীদের চেয়ে বেশি। কিন্তু অষ্টমশ্রেণির পরীক্ষার পরে নবমশ্রেণিতে ছাত্রের তুলনায় ছাত্রীর সংখ্যা বেড়ে যায়।’’ এর কারণ হিসাবে তিনি জানান, অষ্টমশ্রেণির পরেই ছাত্রদের একাংশ স্কুলে পড়া ছেড়ে দিয়ে আইটিআই-র মত কারিগরি বা বৃত্তিমূলক শিক্ষায় ভর্তি হচ্ছে। কিছু সোনা, জরির কাজ-সহ বিভিন্ন পেশায় অর্থ উপার্জনের জন্য ঢুকে পড়ছে। অন্যদিকে অষ্টম শ্রেণি থেকেই রাজ্য সরকার ছাত্রীদের জন্য ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্পের মাধ্যমে আর্থিক সাহায্য দেওয়ায় ছাত্রীদের প্রায় সকলেই পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে মাধ্যমিক পরীক্ষায় ছাত্রীর তুলনায় ছাত্রদের উপস্থিতি কমছে।

তমলুক শহরের রাজকুমারী সান্ত্বনাময়ী বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা কৃষ্ণা মজুমদার বলেন, ‘‘’আমাদের বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে যে সব ছাত্রী ভর্তি হচ্ছে তাদের বেশিরভাগ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসছে। খুব কমসংখ্যক ছাত্রী অষ্টম শ্রেণিতে খারাপ ফল করে হয় অন্য স্কুলে ভর্তি হচ্ছে কিংবা পড়া ছেড়ে দিচ্ছে। ফলে এখানে মাধ্যমিকের আগে ড্রপ আউট নেই বললেই চলে।’’

প্রশাসন ও পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় মাধ্যমিক পরীক্ষা নির্বিঘ্নে শেষ করতে প্রশাসনের পাশাপাশি পুলিশ, পরিবহণ ও স্বাস্থ্য দফতরকে নিয়ে ইতিমধ্যেই বৈঠক হয়েছে। প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রে কড়া পুলিশি নিরাপত্তা থাকছে। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছেন একজন এসআই বা এএসআই পদমর্যাদার অফিসার, একজন মহিলা সহ তিনজন কনস্টেবল ও পাঁচজন সিভিক ভলান্টিয়ার। এ ছাড়াও প্রতিটি থানা এলাকায় গাড়ি ও মোটর সাইকেলে পুলিশের টহলদারি টিম পরীক্ষাকেন্দ্রের সংলগ্ন এলাকায় ঘুরবে।

জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতর সূত্রে খবর, এতদিন মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথমদিন পরীক্ষা শুরুর আগে পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে তাঁদের অভিভাবকরা পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার অনুমতি পেতেন পরীক্ষাকক্ষে বসার আসন খোঁজায় সাহায্য করতে। কিন্তু এ বছর থেকে পরীক্ষার প্রথমদিনেও অভিভাবকদের পরীক্ষাকেন্দ্রে ঝোকা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে পরীক্ষাকেন্দ্রের কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার্থীদের সাহায্য করবেন। পরীক্ষার্থীদের সাহায্য করতে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক অফিসে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। পরীক্ষাকেন্দ্রের কাছাকাছি জেরক্স সেন্টারগুলি পরীক্ষা শুরুর দু’ঘণ্টা আগে থেকে বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষাকেন্দ্রের ভিতরে পরীক্ষার্থীদের মোবাইল নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, পরীক্ষাকেন্দ্রে যাতায়াতে সুবিধার জন্য জেলায় বিভিন্ন রুটে পর্যাপ্ত সংখ্যায় বাস চালানোর ব্যবস্থা হয়েছে।

জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) আমিনুল আহসান বলেন, ‘‘মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য পরীক্ষাকেন্দ্রের প্রস্তুতি ও নিরাপত্তার সব রকম ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরীক্ষার সময় যাতে কোনও পরীক্ষার্থী অসুবিধায় না পড়েন সে জন্য সতর্কতামূলক সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন