রুটিনে আপত্তি, প্রধান শিক্ষককে বেধড়ক মার

পার্থ জানিয়েছেন, গত সোমবার বিদ্যালয়ের নতুন ক্লাস রুটিন তৈরি করেন তিনি। স্টাফরুমে সেই রুটিন সব শিক্ষককে দেখিয়ে মতামত জানতে চান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোলাঘাট শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৯ ০০:০৭
Share:

স্কুল চলাকালীন কয়েকশো গ্রামবাসীকে ডেকে এনে প্রধান শিক্ষককে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠল স্কুলেরই এক সহকারি শিক্ষকের বিরুদ্ধে। আক্রান্ত প্রধান শিক্ষক আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন হাসপাতালে। ঘটনাটি কোলাঘাটের রাইন অমূল্য বিদ্যাভবন উচ্চ বিদ্যালয়ের।

Advertisement

স্কুল সূত্রের খবর, সম্প্রতি পাঁচজন জন নতুন শিক্ষক কাজে যোগ দিয়েছেন। সে জন্য নতুন করে ক্লাসের রুটিন তৈরি করেন প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতীম মণ্ডল। অভিযোগ, তাতে আপত্তি জানান বাংলার শিক্ষক রহিম বক্স। বচসাতেও জড়িয়ে পড়েন তিনি। পরে বিভিন্ন সময়েও ওই শিক্ষকের সঙ্গে প্রধান শিক্ষকের ঝামেলা হত বলে জানাচ্ছেন স্কুলের অন্য শিক্ষকেরা।

শুক্রবার দুপুর আড়াইটা নাগাদ প্রধান শিক্ষক যখন কম্পিউটার রুমে কাজ করছিলেন, তখন রহিমের নেতৃত্বে স্থানীয় কয়েকশো মানুষ চড়াও হয় বিদ্যালয়ে। ভাঙা হয় বিদ্যালয়ের টেবিল, কাচের আসবাব। প্রধান শিক্ষক তাঁদের সঙ্গে স্টাফ রুমে বসে কথা বলার জন্য ডাকলেও বিক্ষোভকারীরা কোনও কথাই শোনেনি। উল্টে পার্থকে কিল, চড়, ঘুসি মারা হয় বলে অভিযোগ। প্রধান শিক্ষকের দাবি, তাঁর নাকে প্রথম ঘুসি মারেন রহিম। মারধরের শব্দে ছুটে আসেন বিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষকরা। তাঁরা প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করে প্রথমে কোলাঘাট পাইকপাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করান। কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে তমলুক জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।

Advertisement

পার্থ জানিয়েছেন, গত সোমবার বিদ্যালয়ের নতুন ক্লাস রুটিন তৈরি করেন তিনি। স্টাফরুমে সেই রুটিন সব শিক্ষককে দেখিয়ে মতামত জানতে চান। অভিযোগ, রুটিনে আপত্তি জানান রহিম। ওই দিনই প্রধান শিক্ষকের সাথে রহিমের তীব্র বাদানুবাদ হয়। প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘গত সোমবার রুটিন তৈরিকে কেন্দ্র করে রহিম আমাকে বাজে ভাষায় সবার সামনে অপমান করেন। প্রত্যেকদিনই উনি স্কুলে অবাধ্যের মত আচরণ করেন। আমি আপত্তি করায় স্থানীয়দের নিয়ে এসে আমার ওপর চড়াও হন। স্কুলেও ভাঙচুর চালানো হয় ওঁর নেতৃত্বে।’’ পার্থর দাবি, যাঁরা স্কুলে হামলা চালিয়েছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই তৃণমূলের স্থানীয় নেতা-কর্মী। যদিও কোলাঘাট পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা রাজকুমার কুণ্ডুর দাবি, ‘‘এটি দুই শিক্ষকের ব্যক্তিগত সমস্যা। এতে দলের কোনও সম্পর্ক নেই।’’

খবর পেয়ে আক্রান্ত শিক্ষকের সাথে দেখা করেন কোলাঘাট-২ চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক শুভজিৎ সামন্ত এবং কোলাঘাটের জয়েন্ট বিডিও অসীম ঘোষ। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক আমিনুল আহসান বলেন, ‘‘ঘটনাটি স্থানীয় স্কুল পরিদর্শক মারফত শুনেছি। ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে বলে শুনেছি। তাই বলে মারধরের ঘটনা সমর্থনযোগ্য নয়।’’

প্রশাসনিক নির্দেশে আপাতত অভিযুক্ত শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কোলাঘাট থানায় ডেকে পাঠানো হয়েছে। তাঁকে ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি। তমলুকের এসডিপিও অতীশ বিশ্বাস বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত অভিযোগ দায়ের হয়নি। অভিযোগ পেলেই পদক্ষেপ করা হবে। স্কুলে পুলিশ পিকেট রয়েছে।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন