দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাস। নিজস্ব চিত্র।
স্কুলবাস আর লরির মুখোমুখি সংঘর্ষ মৃত্যু হল বছর নয়েকের এক ছাত্রীর।
মঙ্গলবার সকালে কাঁথির ছত্রধরায় দিঘা-কলকাতা সড়কের এই দুর্ঘটনায় মৃতের নাম তুলনা বেরা। দুর্ঘটনায় জখম হয়েছে আরও জনা পনেরো ছাত্রী। এর মধ্যে চারজন গুরুতর জখম অবস্থায় কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কাঁথির এসডিপিও ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘স্কুলবাস ও লরির মুখোমুখি সংঘর্ষে এক স্কুলছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। দুই গাড়ির চালক ও খালাসি মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কাঁথি থানায় একটা মামলা করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিদিনের মতো সকাল দশটা নাগাদ কন্টাই পাবলিক স্কুলের পড়ুয়ারা বাসে চেপে স্কুল যাচ্ছিল। ছত্রধরার কাছে বাসের সামনে এসে পড়ে একটা মোটরবাইক। সেই মোটরবাইককে পাশ দিতে গিয়েই বাসটির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় পিচ বোঝাই লরিটির। মুহূর্তের মধ্যে লরিটি ধাক্কা মারে বাসের সামনে। সেই ধাক্কায় স্কুলবাসে থাকা ২৮ জন পড়ুয়া সিট থেকে বাসের মধ্যেই ছিটকে পড়ে।
জখম স্কুল ছাত্রছাত্রীদের চিৎকারে স্থানীয় মানুষজন দুর্ঘটনাস্থলে এসে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। আর সেখানে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় তুলনার। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, তুলনা পাবলিক স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। সে রামনগরের নরিহা গ্রামের বাসিন্দা। তবে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অন্যান্য জখম পড়ুয়াদের অবস্থা স্থিতিশীল। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জখম স্কুলছাত্র রণজিৎ প্রধান, তপন গিরির কথায়, ‘‘তুলনা বাসের দরজার কাছের সিটে বসেছিল। আমাদের সঙ্গে গল্প করছিল ও। হঠাৎ জোরে আওয়াজ হল। দেখলাম, তুলনা রক্তে ভেসে যাচ্ছে।’’
স্কুলবাস আর লরির এই দুর্ঘটনায় খবর ছড়িয়ে পড়ার পড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ছুটে আসেন অভিভাবকরা। মঙ্গলবার দুপুরে তুলনার দেহ তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে। কান্নায় ভেঙে পড়েন তার বাবা-মা। তুলনার জেঠু বোধিসত্ত্ব বেরা বলেন, ‘‘আমার ভাই পেশায় মেডিক্যাল রিপ্রেজেনটেটিভ। ওদের দুই সন্তানের মধ্যে তুলনাই বড়। সংসারটা ছারখার হয়ে গেল। ’’