মেদিনীপুরের নারায়ণ বিদ্যাভবনে প্রস্তুতি। মঙ্গলবার। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।
পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে কোনও পড়ুয়া অসুস্থ হয়ে পড়লে সমস্যায় পড়েন শিক্ষকেরা। অনেক সময় পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাটুকুও থাকে না। এই পরিস্থিতি এড়াতে এ বার মাধ্যমিকের প্রতি পরীক্ষা কেন্দ্রে স্বাস্থ্যতর্মীদের দল (প্যারামেডিক্যাল টিম) রাখা হচ্ছে। থাকবেন দু’জন স্বাস্থ্যকর্মী। প্রয়োজনীয় কিছু ওষুধপত্রও থাকবে।
আজ, বুধবার থেকে শুরু মাধ্যমিক পরীক্ষা। পরীক্ষা কেন্দ্রে কোনও পরীক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে এই স্বাস্থ্যকর্মীরাই প্রাথমিক চিকিৎসা করবেন। প্রয়োজন হলে তবে অসুস্থ পড়ুয়াকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সূত্রে খবর, প্রতি পরীক্ষা কেন্দ্রে প্যারামেডিক্যাল টিম রাখার জন্য ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য দফতরে আর্জি জানানো হয়েছে। সেই আর্জিতে সাড়া দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পশ্চিম মেদিনীপুরের আহ্বায়ক নির্মলেন্দু দে বলেন, “এ বার প্রতি পরীক্ষা কেন্দ্রে দু’জন করে স্বাস্থ্যকর্মী থাকবেন। তাঁদের কাছে প্রয়োজনীয় কিছু ওষুধপত্রও থাকবে। পরীক্ষার্থীদের যাতে কোনও সমস্যা না হয় সেই দিকে লক্ষ্য রেখেই এই ব্যবস্থা।” জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “প্যারামেডিক্যাল টিমের ব্যাপারে ইতিমধ্যে সব ব্লকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। সমস্ত পরীক্ষা কেন্দ্রেই দু’জন স্বাস্থ্যকর্মী থাকবেন।”
পাশাপাশি, ব্লক সদরে অ্যাম্বুল্যান্সও থাকছে বলে জানান গিরীশচন্দ্রবাবু। তাঁর কথায়, “ব্লক হাসপাতাল-গ্রামীণ হাসপাতালে অ্যাম্বুল্যান্স থাকছে। যে সব জায়গায় অ্যাম্বুল্যান্স নেই, সেখানে অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে, কেউ অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে আনাও সহজ হবে।”
সুষ্ঠু ভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন করতে এ ছাড়া অন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। কিছু পরীক্ষাগ্রহণ কেন্দ্রকে ‘স্পর্শকাতর’ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই সব কেন্দ্রে থাকবে বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা। গতবার যে সব কেন্দ্রে সামান্য উত্তেজনা ছড়িয়েছিল, এ বার সেই সব কেন্দ্রে বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থাও থাকবে।
এ বার পশ্চিম মেদিনীপুরে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে। ২০১৬ সালে সেখানে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৭৮,৬৩৫। এ বার সেখানে পরীক্ষার্থীর সংখ্যাটা ৭০,৭৬৫। এরমধ্যে ছাত্র ৩৩,৫৬০। ছাত্রী ৩৭,২০৫। পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা অবশ্য বেড়েছে। গতবার ছিল ১৫১টি। এ বার ১৫৪টি। এই কেন্দ্রের মধ্যে ‘মেন- ভেন্যু’ ১০৭টি। ‘সাব- ভেন্যু’ ৪৭টি।
পরীক্ষার ঘরে মোবাইল ফোন, ক্যালকুলেটর নিয়ে ঢোকা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এমনকী শিক্ষকেরাও মোবাইল নিয়ে ঘরে ঢুকতে পারবেন না। ফোন জমা রাখতে হবে প্রধান শিক্ষকের ঘরে। জেলা প্রশাসনের এক সূত্রের দাবি, অনভিপ্রেত ঘটনা এড়াতেই শিক্ষকদের মোবাইল ফোন নিয়ে পরীক্ষার ঘরে ঢুকতে নিষেধ করা হয়েছে। পরীক্ষার সময় যানবাহনে অন্যদিনের থেকে ভিড় বেশি থাকে। তাই যাতে বাসের ছাদে যাতে যাত্রী পরিবহণ না হয়, সে দিকে বিশেষ নজর রাখা হবে বলেও জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর।