তৈরি হয়েছে শৌচালয়। মেদিনীপুর শহর লাগোয়া খাসজঙ্গল এলাকায়।
সব ঘরে শৌচাগারের লক্ষ্য এখনও অধরা।
২০১৯ সালের অক্টোবরের মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার প্রতিটি বাড়িতে শৌচাগার তৈরির কথা। লক্ষ্য পূরণে ২০১৪ সালে জেলার ৬০টি গ্রাম পঞ্চায়েতকে কাজের জন্য বেছে নেওয়া হয়। ২০১৫-১৬ আর্থিক বছরেও ৯৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রতিটি বাড়িতে শৌচাগার নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। যদিও জেলার ২৯০টি পঞ্চায়েতের সবক’টিতে একসঙ্গে প্রকল্পের কাজ শুরু না হওয়ায় সময়ের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
পরিস্থিতি দেখে পরিকল্পনা বদলে বাধ্য হল জেলা পরিষদ। এ বার মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্পে জেলার ২৯০টি পঞ্চায়েতে একসঙ্গে বাড়ি বাড়ি শৌচাগার নির্মাণের কাজ করা হবে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহ বলেন, “আগে কয়েকটি করে গ্রাম পঞ্চায়েত ধরে কাজ করা হচ্ছিল। তাতে আশানুরূপ অগ্রগতি মেলেনি বলে এ বার জেলা জুড়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
প্রশ্ন উঠছে, দু’বছর ধরে সব পঞ্চায়েত এলাকায় কাজ করলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সহজ হত। তার পরিবর্তে কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত ধরে কাজ করায় লক্ষ্যমাত্রা পূরণে দেরি হয়েছে। জেলার সব পঞ্চায়েতে একসঙ্গে কাজ শুরু করা হল না কেন? জেলা পরিষদের এক আধিকারিকের যুক্তি, “নির্দিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েত ধরে কাজ হলে গুণগত মান ভাল হয়, ঠিকমতো নজরদারি চালানো যায়। জেলা জুড়ে কাজ হলে নজরদারির ক্ষেত্রে কিছুটা ঘাটতি থেকে যেতে পারে।’’ সভাধিপতির অবশ্য আশ্বাস, গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়কদের দিয়ে নজরদারি চালানো হবে। জেলা থেকেও দল তৈরি করে কাজের মান খতিয়ে দেখা হবে।
প্রকল্প থাকা সত্ত্বেও এতদিন শৌচাগার না পেয়ে অনেকেই ক্ষুব্ধ। সবংয়ের বিষ্ণুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান গুরুপদ মান্না বলেন, “রাস্তায় বেরোলেই মানুষের প্রশ্নের জবাব দিতে হিমসিম খাচ্ছি। সকলেরই এক প্রশ্ন, কবে আমাদের শৌচাগার তৈরি হবে। আর কতদিন মাঠেঘাটে প্রাতঃকৃত্য করতে হবে।” চন্দ্রকোনা-১ ব্লকের বামুনিয়া গ্রামের শ্রীকান্ত পান বলেন, ‘‘আমাদের তো এই বিষয়ে কেউ কিছু জানায়নি। সুযোগ পেলেই আমি বাড়িতে শৌচাগার করব।’’ শালবনি ব্লকের মণ্ডলকুপির বাসিন্দা চঞ্চল কারকের কথায়, ‘‘সরকার থেকে এমন সুযোগ পেলে তো ভাল হয়। তবে আমাদের কেউ কিছু জানায়নি।’’ বাস্তবে লক্ষ্যপূরণ কবে হয়, সেটাই দেখার। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।