রং কালো, তাই পুড়িয়ে মারার অভিযোগ

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নন্দীগ্রামের তেরাপেখিয়ার বাসিন্দা আনসুরা বিবির সঙ্গে বছর সাতেক আগে বনশ্রীগৌরির বাসিন্দা সেখ আবুল কালামের বিয়ে হয়। তাঁদের দু’টি মেয়েও হয়। আনসুরার মা সুরাইয়া বিবি জানান, মেয়ে বাড়িতে এলে বলত, ‘‘আমার গায়ের রঙ আর দুই মেয়ের জন্য ওরা আমাকে মেরে ফেলতে চায়।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৭ ০০:৫২
Share:

মৃত: আনসুরা বিবি।

আগুনে পুড়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বছর চব্বিশের তরুণী। মারা যাওয়ার আগে পুলিশের কাছে দেওয়া মৃত্যুকালীন জবানবন্দিতে তরুণীটি জানিয়ে গেলেন, বিয়ের পর থেকেই গায়ের রং কালো বলে শ্বশুরবাড়ির অপমান সহ্য করতে হতো তাঁকে। পর পর দুই মেয়ে হওয়ার পরে সেই নির্যাতন চরমে ওঠে। তা সহ্য করতে না পেরেই তিনি শেষমেশ নিজের গায়ে আগুন লাগিয়েছেন তিনি।

Advertisement

ঘটনাটি নন্দীগ্রামের বনশ্রীগৌরি গ্রামের। গত ৯ অগস্ট শ্বশুরবাড়িতে অগ্নিদগ্ধ হয়েছিলেন আনসুরা বিবি নামে ওই তরুণী। ১৪ অগস্ট তমলুক হাসপাতালে মারা গেলেন তিনি। আনসুরার ওই জবানবন্দির ভিত্তিতে শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে মেয়েকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ দায়ের করেছে বাপের বাড়ির লোকজন। পুলিশ জানিয়েছে, শ্বশুরবাড়ি লোকজন ও মৃতার স্বামী সেখ আবুল কালাম পলাতক। তাদের খোঁজ চলছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নন্দীগ্রামের তেরাপেখিয়ার বাসিন্দা আনসুরা বিবির সঙ্গে বছর সাতেক আগে বনশ্রীগৌরির বাসিন্দা সেখ আবুল কালামের বিয়ে হয়। তাঁদের দু’টি মেয়েও হয়। আনসুরার মা সুরাইয়া বিবি জানান, মেয়ে বাড়িতে এলে বলত, ‘‘আমার গায়ের রঙ আর দুই মেয়ের জন্য ওরা আমাকে মেরে ফেলতে চায়।’’ মেয়ের কাকা সেখ সামাদের অভিযোগ, ‘‘গায়ের রঙের জন্য ওরা আনসুরাকে মারধর করত। এরপর দুই মেয়ে হওয়ায় নির্যাতন বেড়ে গিয়েছিল। শুধু সংসার যাতে না ভেঙে যায়, তাই ওদের হাতে ধরে আনসুরাকে ছেড়ে আসতাম। এখন ভাবছি, এখানে বাড়িতে থাকলে হয়তো এ ভাবে মরত না।’’

Advertisement

হলদিয়া মহকুমার মহিষাদলের সার্কেল ইন্সপেক্টর শুভঙ্কর দাশ বলেন, আনসুরা অসম্ভব অভিমানেই সম্ভবত গায়ে কেরোসিন দিয়েছে। তবে বাড়ির লোকের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করা হচ্ছে।’’

পুলিশের দাবি, আনসুরা জানিয়েছেন দিনের পর দিন গায়ের রঙ কালো বলে তাকে অপমান করা হতো। এমনকী তাঁকে বলা হতো, বিয়ের সম্বন্ধের সময় যে মেয়ে দেখানো হয়েছিল তিনি সেই নন। এর পর পরপর দুটি মেয়ে হওয়ায় নির্যাতন সীমা ছাড়িয়েছিল। আনসুরা জানিয়েছিল, মারধর তো চলতই, সেই সঙ্গে দুবেলা ঠিক মতো খেতে দেওয়া হতো না। উপরন্তু বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য শ্বশুরবাড়ির লোকেরা চাপ দিত। এইসব চাপ নিতে না পারার জন্যই গায়ে কেরোসিন দিয়েছে সে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement