সহায় হয়েছে নিম্নচাপের ঝিরঝিরে বৃষ্টি, দিনভর মেঘলা আবহাওয়া ও পুবালি হাওয়া। তারই জেরে ইলিশের বান দিঘা মোহনায়। শুক্রবার দিঘা মৎস্যবন্দরে এসেছে প্রায় ৩০ টন ইলিশ— যা এই মরসুমে এখনও রেকর্ড। এ দিন শৌলা, পেটুয়াঘাট বন্দরেও ইলিশ এসেছে।
এর জেরে কমেছে দাম। এ দিন দিঘা মোহনার বাজারে ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিকিয়েছে ৩০০ টাকা কেজি দরে। ৬০০-৭০০ গ্রামের দাম ৬০০ টাকা কেজি। এক কিলোগ্রাম বা তার বেশি ওজনের ইলিশের দাম তেমন কমেনি, হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
ইলিশ ধরার মরসুমের শুরুটা ভাল ছিল না। সমুদ্র চষেও খালি হাতে ফিরছিল ট্রলারগুলি। জালে যে ক’টা ইলিশ উঠেছিল, তার ওজন বেশি ছিল না। অনুকূল আবহাওয়ায় ছবিটা বদলেছে। এ দিন কাকভোরে ৩০০টি ট্রলার দিঘায় এসে ভেড়ে। সবক’টিতে ভরপুর ইলিশ। তবে ইলিশের পরিমাণ বাড়লেও গড় ওজন একটু কমেছে বলে মৎস্যজীবীরা জানান। এই পর্বে ধরা পড়া ইলিশের গড় ওজন প্রায় ৫০০ গ্রাম। দিঘা ফিশারমেন অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাস বলেন, “ওজন কমলেও ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছে। গত বছর এক দিনে ৬০ টন ইলিশ আসার রেকর্ড রয়েছে। দেখা যাক এ বার সেটা ভাঙে কিনা।’’
খুশি ট্রলার মালিকরাও। দিঘার ট্রলার মালিক মিহির ভুঁইয়া বলেন, “মরসুমের প্রথম দিকে ইলিশ উঠছিল না। সমুদ্রে পাঁচ দিন থেকেও যেটুকু মাছ ধরা পড়ছিল, তাতে খরচ উঠছিল না। এ বার একটু লাভের মুখ দেখব।’’
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিদ্যা বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক আনন্দদেব মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘ইলিশ শৌখিন মাছ। বৃষ্টি ও পুবালি হাওয়ার জন্যই এখন প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে।’’ কিন্তু মাছের ওজন কমছে কেন? তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘সমুদ্র দূষণে ঠিক পুষ্টি হচ্ছে না বলে ওজন কমছে। গত বছর প্রচুর ছোট ইলিশ ধরা হয়েছিল। তারও প্রভাব আছে।’’ সমুদ্রে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা বাড়ালে ভবিষ্যতে ইলিশের ওজন বাড়বে বলেই আনন্দদেববাবুর মত।