ছন্দ-পতন: সুরের জাদুতে খড়্গপুর বইমেলার মঞ্চ মাতালেন অলকা যাজ্ঞিক। সোমবার রাতে। নিজস্ব চিত্র
শুরু থেকে সব ঠিকই ছিল। তাল কাটল শেষবেলায়। টাউন হল প্রাঙ্গণে খড়্গপুর বইমেলার শেষলগ্নের অনুষ্ঠানে ভিড় সামলাতে হিমসিম খেতে হল উদ্যোক্তাদের। জনস্রোত সামলাতে বেগ পেতে হয় পুলিশকেও। ভিড় বাড়তে থাকায় সোমবার রাতে অনেকে অলকা যাজ্ঞিকের অনুষ্ঠানস্থল থেকে চলেও যান বলে অভিযোগ।
প্রতিবারেই বইমেলার শেষলগ্নে নানা অনুষ্ঠান হয়। রীতি মেনে এ বারও ১৮তম বইমেলার শেষদিনে সোমবার অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। অনুষ্ঠানে জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী অলকা যাজ্ঞিক আসছেন শোনার পর থেকেই ভিড় জমতে শুরু করে। বাড়তি ভিড় সামাল দিতে পুলিশের পরামর্শে বইমেলা প্রাঙ্গণে বাঁশের ব্যারিকেডও গড়ে তোলা হয়। তবে অলকা যাজ্ঞিকের অনুষ্ঠান শুরু হতেই বদলে যায় ছবিটা। বইমেলা প্রাঙ্গণে ঢোকার জন্য গেট থেকেই শুরু হয় হুড়োহুড়ি। অভিযোগ, অলকা যাজ্ঞিক মঞ্চে উঠতেই জনস্রোত ক্রমে নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে থাকে। পরে অবশ্য পুলিশ ও বইমেলা কমিটির তৎপরতায় নিয়ন্ত্রণে আসে পরিস্থিতি। সুষ্ঠুভাবে শেষ হয় অনুষ্ঠানও।
অলকা যাজ্ঞিকের অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত ভিড় নিয়ন্ত্রণে রাখতে বইমেলার শেষদিনে টিকিটের দাম ৭ থেকে বাড়িয়ে ২০ টাকা করা হয়। বাঁশের ব্যারিকেড গড়া হয়। ঠিক ছিল, ব্যারিকেডের মধ্যে থাকবেন মহিলা ও শিশুরা। ব্যারিকেডের বাইরে মঞ্চের ডানদিকে ছিল বিশিষ্ট ব্যক্তিদের বসার জায়গা। বাকি অংশ ছিল সাধারণ দর্শকের জন্য। রাত ৮টা নাগাদ অতিরিক্ত ভিড় ঠেকাতে বন্ধ করা হয় গেট। অভিযোগ, অনুষ্ঠান শুরুর আগে রাতের দিকে গেট সামান্য ফাঁক করতেই গেটে ঠেলে হুড়মুড়িয়ে ঢুকতে শুরু করে দর্শক। ভিড়ের ঠেলায় কয়েকজন তরুণী পড়ে গিয়ে জখমও হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যান এসডিপিও বিবেক ভার্মা। বিশৃঙ্খলা থামাতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে বলেও অভিযোগ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে মঞ্চে ওঠেন অলকা যাজ্ঞিক। অনুষ্ঠান যখন পুরোদস্তুর চলছে, তখন ফের তাল কাটে। সেই সময় ফের বিশৃঙ্খলা শুরু হওয়ায় অনেকে মাঠ ছেড়ে চলে যান বলে অভিযোগ।
মালঞ্চর বাসিন্দা নৃত্যশিল্পী শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায় বলছেন, “ভিড় ঠেলে কোনওভাবে মঞ্চের বাঁ-দিকে জায়গা করে দাঁড়াই। মঞ্চের ডানদিকে বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে বেগ পেতে হয় পুলিশকে। এমন আগে কখনও দেখিনি।” জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, “৭ হাজারের কাছাকাছি ভিড় হবে বলেই ধারণা করেছিলাম। কিন্তু প্রায় ১০ হাজার লোকের ভিড় হয়েছিল। ভিড়ে ব্যারিকেডও ভেঙে যাচ্ছিল। বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে সামান্য লাঠি নিয়ে ছুটতে হয়েছে।”
বইমেলা কমিটির সম্পাদক দেবাশিস চৌধুরী বলেন, “অলকা যাজ্ঞিকের অনুষ্ঠানস্থলে কয়েকজন উৎসাহী যুবকের নাচানাচিতে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। কিন্তু পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। পরে সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠান শেষও হয়েছে।”