হাতে আর মাত্র আট দিন। বিশ্বকর্মা পুজো ১৭ সেপ্টেম্বর। ব্যস্ততার শেষ নেই দুর্গচকের কুমোরপাড়ায়। কিন্তু সেখানে এ বার চিন্তার ছাপ। একে তো জিএসটি-র বোঝায় দাম বেড়েছে সব কাঁচামালের, তার উপর বর্ষা বড় দায়। তারপরে এ বার আবার বিশ্বকর্মা আর দুর্গাপুজোর এক সপ্তাহের ফারাক। কাজ কবে শেষ হবে তা নিয়ে চিন্তায় পটুয়ারা।
এমনিতেই কুমোরপাড়ায় প্রতিমা গড়ার কাজ চলে ঋণ নিয়ে। মাটি, খড়, ডাকের সাজ বা সলমা-জরির গয়না কিনতে হয় মূর্তি বায়না হওয়ার অনেক আগে। তাই মহাজনই ভরসা। কিন্তু দুর্গা হোক বা বিশ্বকর্মা— মূর্তি বিক্রির সময় ন্যায্য দাম পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ প্রতিমা শিল্পীদের। সব মূর্তি আবার বিক্রিও হয় না। তবু এ সবে অভ্যস্ত কুমোরপাড়া।
কিন্তু এ বার যেন সমস্যা আরও বেশি। জিএসটি লাগু হওয়ায় সব জিনিসের দাম বেড়েছে বলে দাবি শিল্পীদের। দুর্গাচকের এক শিল্পী জানান, তাঁরা মূলত কলকাতা থেকেই নিয়ে আসেন মূর্তির চুল, ডাকের সাজ, জরি বা অন্য সামগ্রী। সেখান থেকে বার বার বলা হয়েছে জিএসটির জন্য দাম বেড়ে গিয়েছে সব জিনিসের।
শিল্পী কুশধ্বজ বেড়া বলেন, ‘‘গত বছরও খড়ের দাম ছিল ৩০০ টাকা প্রতি কাহন। এ বার তা বেড়ে হয়েছে ৪৫০ টাকা।’’ দড়ি, বাঁশ, প্লাইউড, কাপড়, গয়না সবের দাম বেড়েছে। শিল্পীদের দাবি, গত বার প্রতিমার গয়নার সাজের দাম ছিল ১৫০০ টাকা, এ বার বেড়ে হয়েছে ২০০০ টাকা।
শুধু মূল্য বৃদ্ধিই নয়, এ বার চোখ রাঙাচ্ছে সময়, দোসর বৃষ্টিও। প্রতিমা শিল্পী নন্দলাল পাল জানান, দুর্গাচকের কুমোরপাড়ায় ৪০ জন শিল্পী কাজ করেন। এমনিতেই জায়গার অভাব। তারপর এ বার দুর্গা পুজোও একেবারের ঘাড়ের উপর। ফলে বিশ্বকর্মা আর দুর্গা— দু’রকম বায়নাই এসেছে। নাছোড় বৃষ্টিতে মূর্তি শুকোনোই সমস্যা!
নন্দলালবাবুর কথায়, ‘‘কী ভাবে কাজ শেষ করব জানি না। ঋণ শোধ করে লাভের মুখ দেখা যাবে কি না তাও জানি না।’’
ঐতিহ্য মেনে এ বারও প্রায় দু’শো ছোট বড় বিশ্বকর্মা পুজো হবে হলদিয়ায়। প্রতিটি থানাতেই হচ্ছে শান্তি বৈঠক। প্রশাসনের নিয়ম মেনে বিশ্বকর্মা পুজো করলে মহকুমা পুলিশ-প্রশাসন পুরস্কারও দেবে।