Panskura

অবৈধ নির্মাণে রুদ্ধ টোপার স্রোত

দিনের পর দিন খাল দখল করে মাথা তুলেছে একের পর এক কংক্রিটের নির্মাণ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২১ ০৪:৩২
Share:

খালে বেআইনি নির্মাণ। নিজস্ব চিত্র।

সংস্কার হয়নি দীর্ঘদিন। তার উপরে খালের মধ্যে বেআইনি ভাবে বানানো হচ্ছে নির্মাণ। অভিযোগ, খাল ভরাটও করা হচ্ছে। এর জেরে টোপা খাল ক্রমশ স্রোত হারাচ্ছে। অবিলম্বে দখল মুক্ত করে খাল সংস্কারের দাবিতে সরব হয়েছেন এলাকার মানুষজন।

Advertisement

পাঁশকুড়া এবং কোলাঘাট ব্লকের উত্তর সীমা দিয়ে বয়ে গিয়েছে টোপা খাল। মাইশোরা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার আলত্যা মৌজা থেকে খালটি কোলাঘাটের বৃন্দাবনচক পঞ্চায়েতের বেলডাঙা হাটের কাছে গিয়ে দূর্বাচাটি নদীতে মিশেছে। সাত কিলোমিটার দীর্ঘ এই খাল দিয়ে পাঁশকুড়া ব্লকের মাইশোরা, কেশাপাট ও কোলাঘাট ব্লকের বৃন্দাবনচক এলাকার জল নিকাশি হয়। এই খালের ওপর জল নিকাশির চাপ খুব বেশি থাকায় ১৯৪৪ সালে ব্রিটিশরা কোলাঘাটের পরমানন্দপুর মৌজা এলাকায় টোপা খাল থেকে বড়দাবাড় পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার একটি শাখা খাল খনন করে। তার নাম দেওয়া হয় টোপা ড্রেনেজ খাল। টোপা ড্রেনেজের জল দেহাটি খাল দিয়ে সরাসরি এসে পড়ে রূপনারায়ণ নদে।

১৯৯৯ সালে টোপা খালটি শেষবার পূর্ণাঙ্গ সংস্কার হয়েছিল। বছর দু'য়েক আগে কোলাঘাট ব্লকের পরমানন্দপুর থেকে বেলডাঙা পর্যন্ত টোপা খালের অংশ বিশেষ সংস্কার করা হলেও আলত্যা থেকে পরমানন্দপুর পর্যন্ত অংশটি ২০ বছরে কোনও সংস্কার করা হয়নি বলে অভিযোগ। এ দিকে, দিনের পর দিন খাল দখল করে মাথা তুলেছে একের পর এক কংক্রিটের নির্মাণ। শুধু তাই নয় কেশাপাট বাজার সংলগ্ন এলাকায় ছাই ফেলে খাল ভরাটের অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় কৃষকেরা। পাশাপাশি রয়েছে অন্য সমস্যাও। খালের মধ্যে মাছ ধরার পাটা, জাল ইত্যাদি ব্যাপক হারে মজুত থাকায় বর্ষাকালেও গতি থাকে না খালের জলে।

Advertisement

এর ফলে বর্ষার জলে প্লাবিত হয়ে যায় খাল সংলগ্ন একাধিক মৌজা। বেশ কিছু জায়গায় কচুরিপানা জমেও স্রোতহীন হয়ে পড়েছে খালটি। এর জেরে প্রতি বছর মাইশোরা, কেশাপাট ও বৃন্দাবনচক এলাকার বিস্তীর্ণ মাঠে জল জমে নষ্ট হয়ে যায় আমন চাষ। কেশাপাটের বাসিন্দা অনিত বলেন, ‘‘টোপা খাল অবরুদ্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রতি বছর বর্ষায় সামান্য বৃষ্টিতে ডুবে গিয়ে নষ্ট হয়ে যায় আমন চাষ। টোপা খাল দখল করে বেআইনি নির্মাণ ও খাল ভরাট করা অবিলম্বে বন্ধ করা প্রয়োজন।’’

খাল সংস্কারের দাবিতে সরব কৃষক সংগ্রাম পরিষদও। সংগঠনের সম্পাদক নারায়ণচন্দ্র নায়ক বলেন, ‘‘পাঁশকুড়া ও কোলাঘাট ব্লকের সেচ ও নিকাশিতে টোপা খালের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেচ দফতর অবিলম্বে খালটি পূর্ণাঙ্গ সংস্কার না করলে কৃষকদের নিয়ে আন্দোলনে নামব।’’

খাল সংস্কারের বিষয়ে সেচ দফতরের পাঁশকুড়া ২-এর এসডিও অভিনব মজুমদার বলেন, ‘‘অবৈধ নির্মাণ ও খাল ভরাটের অভিযোগ তদন্ত করে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন