Mamata Banerjee

দেবালয়েও শুরু তরজা

সমীর ও তেজেশচন্দ্রকে কমিটি থেকে সরানোরও যে কোনও উপায় নেই তা মানছেন তৃণমূলের ক্ষমতাসীন জামবনি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পুতুল শীট। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী কনকদুর্গা মন্দির চত্বরের জন্য ২ কোটি টাকা বরাদ্দ করলেন, অথচ সমীর ও তেজেশ এটা কী করে বসলেন!’’ 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চিল্কিগড় শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২০ ০৫:২৬
Share:

চিল্কিগড়ের কনকদুর্গা মন্দির চত্বরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।ফাইল চিত্র.

ঝাড়গ্রাম জেলার জামবনি ব্লকের চিল্কিগড়ের কনকদুর্গা মন্দিরের উন্নয়নে ২ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ৭ অক্টোবর ঝাড়গ্রামে প্রশাসনিক সভায় এসে মন্দিরের পরিকাঠামো উন্নয়নে ২ কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই ঘোষণার ছ’দিনের মাথায় মন্দির পরিচালন কমিটির দুই প্রধান ‘কর্মকর্তা’ সমীর ধল ও তেজেশচন্দ্র দেও ধবলদেব মঙ্গলবার গেরুয়াশিবিরে নাম লিখিয়েছেন।

Advertisement

সমীর ধল হলেন চিল্কিগড় মন্দির উন্নয়ন কমিটির কার্যকরী সভাপতি। আর চিল্কিগড় রাজ পরিবারের তরুণ সদস্য তেজেশচন্দ্র হলেন মন্দির উন্নয়ন কমিটির সহ-সভাপতি। তেজেশচন্দ্র সক্রিয় রাজনীতির মানুষ নন। তবে ২০১৩-’১৮ পর্যন্ত তৃণমূলের ক্ষমতাসীন জামবনি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ছিলেন সমীর। চিল্কিগড়ের আদিবাসিন্দা সমীরের সঙ্গে তৃণমূলের একাংশের বিরোধের কারণে তিনি দলে কোণঠাসা হয়ে ধীরে ধীরে নিষ্ক্রিয় হয়ে যান। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি থাকাকালীন ২০১৪ সালে মন্দির উন্নয়ন কমিটির দায়িত্বে আসেন সমীর। মন্দির উন্নয়ন কমিটিতে চিল্কিগড় রাজ পরিবারের প্রভাব যথেষ্ট। সমীর ও তেজেশচন্দ্রকে কমিটি থেকে সরানোরও যে কোনও উপায় নেই তা মানছেন তৃণমূলের ক্ষমতাসীন জামবনি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পুতুল শীট। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী কনকদুর্গা মন্দির চত্বরের জন্য ২ কোটি টাকা বরাদ্দ করলেন, অথচ সমীর ও তেজেশ এটা কী করে বসলেন!’’

কয়েক বছর আগে মন্দিরে যাওয়ার রাস্তাটি কংক্রিটের হয়েছে। মন্দির প্রাঙ্গণে শিশুদের পার্ক, পর্যটকদের বসার শেড, দোকান ঘর, বাহারি ফোয়ারা হয়েছে। কিন্তু সাবেক মন্দির প্রাঙ্গণের চিরাচরিত পরিবেশের মধ্যে ‘কংক্রিটের জঙ্গল’ তৈরি নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে রাজ পরিবারে। তেজেশচন্দ্র বলছেন, ‘‘প্রশ্ন তুললে উন্নয়ন বিরোধী তকমা দেওয়া হতে পারে এমন আশঙ্কায় আমরা এতদিন চুপ ছিলাম। আমাদের মতামত না নিয়ে বারে বারে কাজ হয়েছে।’’ সমীর বলছেন, ‘‘গত কয়েক বছরে যেভাবে মন্দির চত্বরে কাজ হয়েছে, তাতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যহানি হয়েছে।’’

Advertisement

কনকদুর্গা নিত্যপূজিতা হন। দুর্গা পুজোর মহাষ্টমী ও মহানবমীতে লক্ষাধিক জনসমাগম হয়। করোনা আবহে সেই ভিড় সামাল দেওয়ার ব্যাপারে এখনও প্রশাসনের তরফে মন্দির উন্নয়ন কমিটিকে কিছু বলা হয়নি। সমীর বলছেন, ‘‘লোকজনকে তো নিষেধ করতে পারব না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাতে সবাই প্রতিমা দর্শন করে পুজো দিতে পারেন, সেই ব্যবস্থা হচ্ছে। সমীর ও তেজেশচন্দ্রের দাবি, মন্দির চত্বরকে বাঁচাতেই তাঁরা বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র সুব্রত সাহা বলছেন, ‘‘সমীর ও তেজেশচন্দ্র বিজেপিতে গেলেও উন্নয়ন কাজ আটকে থাকবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন