তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে রণক্ষেত্র হয়ে উঠল গড়বেতা কলেজ চত্বর। জখম দু’পক্ষের অন্তত ছ’জন।
দুই গোষ্ঠীই একে অপরের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলছে। দু’দলেরই দাবি, অন্যপক্ষ বহিরাগতদের নিয়ে কলেজে ঢুকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। গোলমালের জেরে প্রথম বর্ষের ভর্তি প্রক্রিয়াও বন্ধ হয়ে যায়। টিএমসিপির জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরির দাবি, “একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তেমন বড় কিছু নয়।” কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি নারায়ণ মাইতি বলেন, “ঠিক কী হয়েছে খোঁজ নিয়ে দেখছি।”
স্থানীয় সূত্রে খবর, গড়বেতা কলেজে টিএমসিপির গোষ্ঠী কোন্দল রয়েছেই। এক সময় এখানে এসএফআইয়ের একাধিপত্য ছিল। রাজ্যে পালাবদলের পর ক্যাম্পাসে শুধু টিএমসিপিরই প্রভাব। তবে রয়েছে দুই গোষ্ঠীর রেষারেষি। একদিকে গড়বেতা কলেজ ইউনিট সভাপতি কমলাকান্ত ঘোষ, অন্যদিকে টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক দেবরাজ রায়।
কলেজ সূত্রের খবর কমলাকান্ত ও দেবরাজের মুখ দেখাদেখি প্রায় বন্ধ। একই সংগঠনে থেকেও স্থানীয় দুই ছাত্র নেতা দুই মেরুতে। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশ ছিল, ১৫ জুন মেধা তালিকা প্রকাশ করতে হবে। ১৮ জুন থেকে প্রথম বর্ষের ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।
সে সময় ক্যাম্পাসের নিয়ন্ত্রণ কার হাতে থাকবে, তা নিয়েই গোলমালের সূত্রপাত। প্রথমে বচসা তা থেকে হাতাহাতি, চেয়ার ছোড়াছুড়ি হয়। এ দিন শুরু হয় প্রথম বর্ষের পরীক্ষা। সে জন্য পুলিশ মোতায়েন ছিল। প্রাথমিক ভাবে তাঁরাই গোলমাল থামাতে ছুটে আসেন। পরে গড়বেতা থানা থেকে পুলিশ বাহিনী আসে।
ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক দেবরাজ রায় বলেন, “বহিরাগতরা এসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাইছে। আমাদের সংগঠনের কয়েকজন তাদের মদত দিচ্ছে।” অন্যদিকে কমলাকান্ত ঘোষ বলেন, “বহিরাগতদের এনে ইচ্ছাকৃত ভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হচ্ছে। ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক দায় এড়াতে পারে না।”
গোটা ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন গড়বেতা কলেজের টিচার ইনচার্জ মন্টু কুমার দাস। তবে তাঁর দাবি, “এটা সামান্য ঘটনা।” মন্টুবাবু বলেন, “লাইনে দাঁড়ানো নিয়ে কয়েকজন ছাত্রের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়েছে। তখন কিছু ঘটে থাকতে পারে। তবে তেমন কিছু নয়।” আজ, মঙ্গলবার থেকে ভর্তি হতে আসা ছাত্রছাত্রীদেরই ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেওয়া হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। টিচার ইনচার্জের কথায়, “অন্য কেউ যাতে না- ঢুকতে পারে, সেই দিকে
নজর রাখা হবে।”