রোগশয্যায় নিঃসঙ্গ ঝুমুর সম্রাট

সেই বিজয়বাবুর অসুস্থতার খবরে উদ্বিগ্ন জঙ্গলমহল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২৩:২৪
Share:

বিজয় মাহাতো। —নিজস্ব চিত্র।

টানা সাড়ে তিন দশক ঝুমুর গানের আকাশে তিনিই জ্যোতিষ্ক! বাংলা-বিহার-ঝাড়খণ্ড-ওড়িশার শ্রোতারা এক ডাকে চেনেন ‘ঝুমুর সম্রাট’ বিজয় মাহাতোকে। সেই বিজয়বাবুর অসুস্থতার খবরে উদ্বিগ্ন জঙ্গলমহল।

Advertisement

রবিবার মধ্যরাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হন ৬৪ বছরের বিজয়। ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের ‘ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট’-এ (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। ঝাড়গ্রাম হাসপাতালের সুপার মলয় আদক বলেন, ‘‘বিজয়বাবুর হৃদযন্ত্রের সমস্যা নিয়ে সিসিইউ-তে ভর্তি রয়েছেন। শারীরিক অবস্থার উপর নজর রাখা হচ্ছে।’’ জঙ্গমহলের খেটে খাওয়া দরিদ্র মূলবাসীদের মনের সুখ দুখ, আনন্দ-বেদনা-বিরহ-যন্ত্রণার কথা ফুটে ওঠে ঝুমুর গানের মধ্যে। ঝাড়গ্রাম শহরের মধুবন এলাকার বাসিন্দা বিজয়কে তাঁর শ্রোতারাই ভালবেসে ‘ঝুমুর সম্রাট’ উপাধি দিয়েছেন।

বিজয়বাবুর ছেলে অরিন্দম মাহাতো বললেন, ‘‘বাবার অসুস্থতার খবর পেয়ে প্রশাসন বা সরকারি স্তরে কেউ খোঁজ নেননি।’’ গত বছর ফুসফুসের সংক্রমণে অসুস্থ হয়ে বেশ কিছুদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন বিজয়। তখনও খোঁজ রাখেনি কেউ। চিকিৎসকের পরামর্শে ৬ মাস গান করেননি। পরে ফের ফিরে আসেন গানের জগতে। কিন্তু সেভাবে সরকারি স্তরে ডাক আসেনি। এ বার গত জানুয়ারি মাসে জঙ্গলমহল উৎসব কমিটির তরফ থেকে বিজয়বাবুকে শেষমুহূর্তে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তিনি আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছিলেন। অরিন্দমের আক্ষেপ, ‘‘বাবা এতগুলো বছর ধরে জঙ্গলমহলের ঝুমুর গানের ধারাকে সমৃদ্ধ করেছেন। সে ভাবে সরকারি স্বীকৃতি জোটেনি। গত সাত বছরে বাবাকে কো‌নও সরকারি অনুষ্ঠান‌ করার সুযোগ দেওয়া হয়নি।’’

Advertisement

তাঁর শুভানুধ্যায়ী ও ঘনিষ্ঠজনেরা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন, বাম আমলে পৃথক ঝাড়খণ্ড রাজ্যের দাবিতে আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন বিজয়। তখনও সরকারি স্তরে সে ভাবে কল্কে পেতেন না তিনি। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে কিছু সরকারি অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার আমন্ত্রণ পান। ২০১১ সালে বিজেপি-র প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে ঝাড়গ্রাম বিধানসভায় প্রার্থী হয়ে হেরে যান। তারপর রাজনীতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন