বাজেয়াপ্ত করা আসতবাজি মজুত করে রাখা হয়েছিল থানার মালখানায়। সেই বাজি ফেটে রবিবার বিকেলে গুরুতর জখম হয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন থানার দুই পুলিশ কর্মী। ওই ঘটনা থেকে শিক্ষ নিতে নিয়েছে কাঁথি থানার পুলিশ। তাদের থানায় থাকা বিভিন্ন পুজোর সময় বাজেয়াপ্ত করা আতসবাজি সোমবার নষ্ট করা হল। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, এতদিন পরে ‘টনক’ নড়ল কেন? নিয়ম মতো তো বাজি বাজেয়াপ্ত করার কয়েক দিনের মধ্যেই সেগুলি নষ্ট করে দেওয়া নিয়ম।
পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকায় বেআইনি ভাবে বাজি তৈরির কারখানা রয়েছে বলে অভিযোগ। কাঁথি থানা এলাকাতেও বেআইনি বাজি তৈরি এবং বিক্রির খবর হামেশাই সামনে আসে। পুজোর সময় যার রমরমা বাড়ে। কাঁথি থানা সূত্রের খবর, কালী পুজোর সময় এবং গত এক বছরে অভিযান চালিয়ে যে বাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল, সেগুলি থানার হেফাজাতেই জমেছিল। রবিরার দাঁতন থানার ঘটনা দেখে কাঁথি থানার পুলিশ দ্রুত বোম স্কোয়াডকে খবর দেয়।সোমবার কাঁথি থানায় আসে আট সদস্যের বোম স্কোয়াড। খবর দেওয়া হয় কাঁথি দমকলে। প্রায় সাত- আট ব্যাগ বাজি নিয়ে যাওয়া হয় বাঁকিপুট সমুদ্র সৈকতে। থানা সূত্রের খবর, সৈকতে বড় গর্ত খুঁড়ে তার মধ্যে বিভিন্ন স্তরে বাজিগুলি সাজিয়ে রাখা হয়। বাজিগুলির স্তরে ডিজেল দিয়ে একটা বড় বাতির সংযোগ ছিল। যা গর্তের বাইরে ছিল। এরপর বোম স্কোয়াডের সদস্যরা নিরাপদ দূরত্বে গিয়ে তার এবং ব্যাটারির সুইচ টিপে ওই গর্তে অগ্নি সংযোগ করেন। তাতেই ফাটতে থাকে বাজিগুলি।
দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য এলাকায় দমকলের একটি ইঞ্জিন, অ্যাম্বুল্যান্স এবং চিকিৎসক রাখা হয়। আতসবাজি নিষ্ক্রিয় করার সময় সৈকতে উপস্থিত ছিলেন কাঁথি থানার আই সি সুনয়ন বসু, জুনপুট উপকূল থানার ওসি রবি গ্রাহিকর। কিন্তু বোমা এত দিন ধরে মজুত রাখা হল কেন? বাজেয়াপ্ত করার কিছু দিনের মধ্যেই তো তা নিষ্ক্রিয় করার কথা! এ ব্যাপারে কাঁথি থানার দাবি, ওই সব বাজি নিষ্ক্রিয় করার জন্য তারা সিআইডি’র বোম স্কোয়াডকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিল। কিন্তু ওই দফতর থেকে জবাব না আসায় বাজি নিষ্ক্রিয় করা যায়নি। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু বলেন, “বাজি নিষ্ক্রিয় করতে বোম স্কোয়াড আসেনি। তবে বাজিগুলি থানা থেকে নিরাপদ দূরত্বে একটি সুরক্ষিত জায়গায় রাখা হয়েছিল। কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে, সে জন্য সবরকম সাবধানতা অবলম্বন করা হয়েছি।’’