কাঁথির কুখ্যাত আসামি কর্ণ বেরা। ফাইল চিত্র
নিরাপত্তার টানাপড়েনে বন্ধ হয়েছিল সাজা ঘোষণা। পুলিশ তাঁদের প্রতিনিধিকে হেনস্থা করেছে, এই অভিযোগে কর্মবিরতিতে গিয়েছিলেন আইনজীবীরা। অবশেষে শনিবার সেই সব ‘জট’ কেটে পুলিশ কর্মী খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হল কুখ্যাত দুষ্কৃতী কর্ণ বেরা। সাজা ঘোষণার দিন ধার্য হয়েছে আগামিকাল, সোমবার।
২০১৬ সালের ৭ জানুয়ারি ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে কাপাসবেড়িয়ায় মহিষাদল থানার টহলরত কনস্টেবল নবকুমার হাইতকে গুলি করে খুন করার অভিযোগ উঠেছিল কর্ণ এবং শেখ রহিম নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। রহিম ধরা পড়লেও কর্ণ লুকিয়ে বেড়াচ্ছিল। পরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার থেকে তাকে গ্রেফতার করে মহিষাদল থানার পুলিশ। ধৃতদের বিরুদ্ধে খুন, নাশকতার ছক, অস্ত্র আইন-সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের হয়।
এ দিন কর্ণ এবং রহিমকে হলদিয়া মহকুমা আদালতের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক আশিসকুমার দাসের এজলাসে তোলা হয়। বিচারক ওই মামলায় তাদের দোষী সাব্যস্ত করেন। আইনজীবী সূত্রের খবর, মামলায় মোট ৩৪ জন সরকার পক্ষের এবং বিরোধী পক্ষের একজন সাক্ষ্য দেন। তার ভিত্তিতে ১৩ নভেম্বর মামলার শুনানি শেষ হয়েছিল। এর পরে নাশকতামূলক অপরাধ ঘটানো এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৮৬/৩৪ ধারায় অভিযুক্ত কর্ণ এবং রহিমকে এ দিন দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। সোমবার সাজা ঘোষণা করা হবে।
মামলার সরকার পক্ষের আইনজীবী সোমনাথ ভুঁইয়া বলেন, ‘‘সোমবার কর্ণ ও তার সঙ্গী শেখ রহিমকে সাজা শোনাবেন বিচারক। ওই দিন নিহত পুলিশকর্মী নবকুমার হাইতের পরিবারের লোকেদের হলদিয়া আদালতে আসার কথা রয়েছে।’’ সম্প্রতি কাঁথি আদালত থেকে পুলিশের হেফাজত থেকে গুলি-বোমা ছুড়ে পালিয়ে গিয়েছিল কর্ণ। পরে অবশ্য সে ধরা পড়ে। এর জন্য পুলিশ কর্মী খুন মামলায় গত ২৯ নভেম্বর সাজা ঘোষণার দিন হলদিয়া মহকুমা আদালতে পুলিশ কড়া নিরাপত্তা রেখেছিল। অভিযোগ, সেই নিরাপত্তার ঘেরে আটকে গিয়েছিলেন এক আইনজীবী। পরিচয়পত্র দেখানোর পরেও তাঁকে আদালত চত্বরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এর জেরে সে দিন কর্মবিরতিতে গিয়েছিলেন হলদিয়া আদালতের আইনজীবীরা। আর তাতেই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল কর্ণের সাজা ঘোষণা।
এ দিন আদালতে পুলিশ কড়াকড়ি ছিল ঠিকই। তবে কোনও রকম অসন্তোষ এড়াতে আদালতে প্রবেশের দু’টি গেটই খোলা রাখা হয়েছিল। সেখানে পরিচয়পত্র যাচাই করে আইনজীবী এবং ল’ক্লার্কদের ভিতরে যেতে দেওয়া হয়।