গ্রামে গ্রামে আইনি পাঠ দেবে আইআইটি

২০০৬ সালে ইঞ্জিনিয়ারদের ‘ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি’র আইনগত দিক সম্পর্কে সচেতন করতে ‘রাজীব গাঁধী স্কুল অফ ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি ল’ নামে স্কুল খুলেছিল আইআইটি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:৫৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

সচেতনতার অভাবে গ্রামীণ নানা শিল্পের ‘ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি রাইট’ পাওয়া যাচ্ছে না। ‘জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশনে’র ক্ষেত্রেও তৈরি হচ্ছে জটিলতা। তাই এ বার গ্রামের মানুষকে আইনি সহায়তা দিতে চলেছে আইআইটি। বুধবার খড়্গপুর আইআইটি-র পক্ষ থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে একথাই জানানো হয়েছে। আইআইটি-র ‘রাজীব গাঁধী স্কুল অফ ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি ল’ নামে আইনবিদ্যার স্কুলের উদ্যোগে এই পরিষেবা চালু হতে চলেছে।

Advertisement

২০০৬ সালে ইঞ্জিনিয়ারদের ‘ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি’র আইনগত দিক সম্পর্কে সচেতন করতে ‘রাজীব গাঁধী স্কুল অফ ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি ল’ নামে স্কুল খুলেছিল আইআইটি। এই স্কুল খুলতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন আইআইটি-র প্রাক্তনী বিনোদ গুপ্ত। তারপর থেকে প্রযুক্তির সঙ্গে সম্পর্কিত নানা বিষয়ের আইনি দিক সম্পর্কে পড়ুয়াদের শিক্ষিত করে এই স্কুল। সম্প্রতি এই স্কুলের পড়ুয়ারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে এমন কিছু গ্রামীণ শিল্প খুঁজে পেয়েছেন যেগুলির জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন (জিআই) প্রয়োজন। তার মধ্যে রয়েছে অসমের গয়না, সোজাত মেহেন্দি, কালকাত্তি গয়না, মেদিনীপুরের গয়না বড়ির মতো নানা শিল্প। ইতিমধ্যেই মেদিনীপুরের গয়না বড়ি জিআই করাতে কয়েক ধাপ এগিয়ে গিয়েছে আইআইটি-র এই আইনবিদ্যার স্কুল। সেই সঙ্গে তারা দেখেছে, শুধু সচেতনতার অভাবে গ্রামীণ নানা শিল্পের ‘ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি রাইট’ পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ বার তাই গ্রামের মানুষকে সচেতন করতে প্রচারে নামতে চলেছেন আইআইটি এই আইনবিদ্যার স্কুলের পড়ুয়ারা। এজন্য বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে আইনি সচেতনতায় প্রচার চালানো হবে। সেই সঙ্গে কীভাবে গ্রাম-গঞ্জের মানুষ সহজে আইনি পদক্ষেপ করতে পারবেন বা গ্রামীণ শিল্পের ‘জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন’ দাবি করতে পারবেন তা-ও শেখানো হবে।

‘ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি রাইটে’র উপর জোর দেওয়া হলেও গ্রামবাসীরা সবরকম আইনি সহায়তা পাবেন। আইআইটির দাবি, এখনও ভারতীয় সমাজব্যবস্থায় বিশেষ করে গ্রামে আইনি সহায়তা একটি বড় সমস্যা। বহু ক্ষেত্রে আইনি পদক্ষেপ সহজ হওয়া সত্ত্বেও অজ্ঞতার জন্যই মানুষ বহু ক্ষেত্রে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। ভাল আইনি সহায়তা যে কোনও সমস্যার সমাধান হতে পারে। এমনকী, আইনি সহায়তার মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি আইনি জটিলতাও কাটানো সম্ভব।

Advertisement

আইআইটির ওই ল’স্কুলের ডিন পদ্মাবতী এমের বক্তব্য, “একজন ৮০ বছরের বৃদ্ধ যখন তাঁর ছেলের বিরুদ্ধেই সম্পত্তি নিয়ে অভিযোগ করেন তখন কী হয়? কত দিন পর্যন্ত তাঁকে আইনি সমাধানের জন্য অপেক্ষা করতে হয়?” এমনকী, বিবাহ সংক্রান্ত যে কোনও মামলার ক্ষেত্রেও আইনি প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রিতার কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি। ল’স্কুলের ডিনের কথায়, “আমরা প্রাথমিকভাবে আইনি সহায়তার পদ্ধতি সম্পর্কে পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের জানাব। যখন গ্রামের কোনও মানুষের আইনি সহায়তার প্রয়োজন হবে তাঁরা ওই পঞ্চায়েত প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। এভাবেই ছড়িয়ে দেওয়া হবে আইনি শিক্ষা।” এমনকী, প্রতি শনিবার এ জন্য একটি আইনি শিক্ষার ক্যাম্প চালানো হবে। শুধু আইনি সহায়তা নয়, সাইবার সংক্রান্ত সমস্যা ও সম্পত্তির অধিকার নিয়েও সহায়তা করবে আইআইটি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন