কুনার-আশিস এক মঞ্চে, জল্পনা 

মঙ্গলবার গড়বেতা অডিটোরিয়ামে গড়বেতা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির ২৫ তম বর্ষের বার্ষিক সাধারণ সভা ছিল

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গড়বেতা শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৯ ০০:৪৬
Share:

পাশাপাশি সাংসদ ও বিধায়ক। নিজস্ব চিত্র

নিজেদের ‘গড়’ গড়বেতায় লোকসভা ভোটে পিছিয়ে গিয়েছে তৃণমূল। তারপর দলের পর্যালোচনা বৈঠকে দলনেত্রীর কাছে তিরস্কৃত হয়েছিলেন গড়বেতার তৃণমূল বিধায়ক আশিস চক্রবর্তী। তারপরেই এলাকা পুনরুদ্ধারে নিজের বিধানসভা এলাকার নানা জায়গায় যেতে দেখা গিয়েছে বিধায়ককে। যোগ দিয়েছেন ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে। এ বার এলাকার উন্নয়নের জন্য বিজেপি সাংসদের হাতে খামবন্দি লিখিত আবেদনও তুলে দিলেন তিনি। এ নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে জোর গুঞ্জন শুরু হয়েছে। জেলা তৃণমূলের দলের অন্দরের খবর, এই নিয়ে বিধায়ক কোনও আলোচনা করেননি।

Advertisement

মঙ্গলবার গড়বেতা অডিটোরিয়ামে গড়বেতা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির ২৫ তম বর্ষের বার্ষিক সাধারণ সভা ছিল। সেখানে একই মঞ্চে ছিলেন সাংসদ কুনার হেমব্রম ও বিধায়ক আশিস চক্রবর্তী। সাংসদের আসার কিছুক্ষণের মধ্যেই বিধায়ক আসেন। সাংসদের সঙ্গে বিজেপির মণ্ডল ও জেলা নেতৃত্বও আসেন। যদিও বিধায়কের সঙ্গে এ দিন কোনও তৃণমূল নেতৃত্বকে মঞ্চে দেখা যায়নি। সাংসদ ও বিধায়ককে পাশাপাশি বসে নানা প্রসঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়। এ দিন বক্তব্য রাখতে গিয়েও বিধায়ক গড়বেতা ২ ব্লকের জোগারডাঙায় শিলাবতী নদীর উপর একটি স্থায়ী সেতু ও গড়বেতা স্টেশনের পাশে রাধানগরে লেভেল ক্রসিংয়ে উড়ালপুল করে দেওয়ার অনুরোধ জানান সাংসদকে। সেই দু’টি দাবি সম্বলিত লিখিত আবেদন মঞ্চেই কুনারের হাতে তুলে দেন আশিস। কুনার বক্তব্য রাখতে গিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে বলেন, "আমার সাধ্যের মধ্যে যতটা করা যায় চেষ্টা করব। সবার সহযোগিতাতেই উন্নয়নের কাজ চলবে।’’ তৃণমূল বিধায়কের এই উন্নয়নের প্রস্তাব প্রসঙ্গে সাংসদ বলেন, ‘‘প্রস্তাব পেয়েছি। খতিয়ে দেখব।’’

সাংসদ পরে জানান, এর আগে জেলার কোনও তৃণমূল বিধায়ক তাঁর কাছে উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রস্তাব দেননি। সেক্ষেত্রে গড়বেতার বিধায়কই প্রথম তাঁর এলাকার উন্নয়নের জন্য প্রস্তাব দিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমরাও চাই কেন্দ্র - রাজ্য মিলিতভাবেই উন্নয়নের কাজ হোক। ওনারা সহযোগিতা করলে আমাদের কোনও আপত্তি নেই।" এ দিন সাংসদের সঙ্গে ছিলেন বিজেপির জেলা সহ সভাপতি প্রদীপ লোধা। তিনি বলেন, ‘‘রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে এলাকার উন্নয়নের জন্য সাংসদের কাছে গড়বেতার বিধায়কের আবেদন দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’’

Advertisement

তবে দলীয় বিধায়কের এই পদক্ষেপ নিয়ে এখনই কোনও প্রকাশ্য কোনও মন্তব্য করতে রাজি নয় জেলা তৃণমূল। দলের এক জেলা নেতার দাবি, ‘‘দল এখন বিজেপির সঙ্গে ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে লড়াই করে মানুষের মনে আস্থা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। তার মধ্যে দলেরই বিধায়কের এই ভূমিকা দলের নীচুতলার কর্মীদের হতাশ করতে পারে।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘‘আমি এইমাত্র জানলাম, খোঁজ নিয়ে দেখব, বিধায়কের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে কথা বলব।’’

এ দিন গড়বেতা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির পক্ষ থেকে গনগনিকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে তুলে ধরার দাবি জানানো হয়। গড়বেতার ব্যবসায়ীরা সাংসদকে গনগনির নৈসর্গিক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের ছবি দেওয়া একটি বাঁধানো ছবি উপহার দেন। কুনার জানান, গনগনি-সহ গড়বেতার যে কোনও সমস্যা নিয়ে তিনি সাধ্যমতো চেষ্টা করবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন