Chandrakona Road Station

ভাষার লড়াই স্টেশনের বোর্ডেও  

রেল বলছে স্থানাভাব। তাই অলচিকির ভাগে জায়গা কম পড়েছে। দক্ষিণ পূর্ব রেলের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ভাষার প্রতি রেল দফতর শ্রদ্ধাশীল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২০ ০১:২৮
Share:

স্টেশনের বোর্ডে অলচিকি হরফে সাঁওতালি ভাষা (চিহ্নিত)। নিজস্ব চিত্র

আছে ঠিকই। কিন্তু খুঁজে পাওয়া মুশকিল।জঙ্গলমহলের রেল স্টেশনের ‘নেম বোর্ডে’ হিন্দি, ইংরেজি, বাংলার পাশাপাশি, অলচিকি হরফে সাঁওতালি ভাষাতেও স্টেশনের নাম লেখা হচ্ছে। অভিযোগ, এত ছোট হরফে তা লেখা হচ্ছে যে পড়তে হলে তীক্ষ্ম দূর-দৃষ্টি সম্পন্ন হতে হবে। আর এ সব দেখে শুনে আদিবাসী সংগঠনগুলির একাংশের বক্তব্য, এ যেন চাঁদ সওদাগরের মনসা পুজো! করতে হয় তাই করা।

Advertisement

ছোট হরফে অলচিকি লিপিতে লেখার বিষয়ে শুরু হয়েছে প্রতিবাদ। সম্প্রতি ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলের বগড়ি মুলুকের পক্ষ থেকে গড়বেতা, চন্দ্রকোনা রোড ও শালবনি স্টেশন কর্তৃপক্ষকে স্মারকলিপি দিয়ে বড় অলচিকি হরফে স্টেশনের নাম লেখার দাবি জানানো হয়েছে। ঝাড়গ্রামের বিজেপি সাংসদ কুনার হেমব্রমও বলছেন, ‘‘দু’টি রেল ডিভিশনের কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে বড় অলচিকি হরফে স্টেশনের নাম লেখার কথা বলেছি।’’

রেল বলছে স্থানাভাব। তাই অলচিকির ভাগে জায়গা কম পড়েছে। দক্ষিণ পূর্ব রেলের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ভাষার প্রতি রেল দফতর শ্রদ্ধাশীল। নেম বোর্ডে বাংলা, ইংরেজি ও হিন্দিতে স্টেশনের নাম লেখা রয়েছে। বোর্ডে যতটুকু জায়গা অবশিষ্ট রয়েছে, সেখানে অলচিকি লিপিতে সাঁওতালি ভাষায় নাম লেখা চলছে। কিছু স্টেশনে অপরিসর জায়গায় ছোট হরফে লিখতে হয়েছে। যে সব স্টেশনে নতুন নেম বোর্ড বসেছে, সেখানে বড় হরফেই অলচিকিতে লেখা হয়েছে।’’

Advertisement

বহু লড়াই, আন্দোলনের পর সংবিধানের অষ্টম তফসিলের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে সাঁওতালি ভাষা। সেখান থেকে রেল স্টেশনের ‘নেম বোর্ডে’ জায়গা পেতেও পেরিয়ে গিয়েছে আরও কয়েক বছর। তার এমন পরিণতিতে হতাশ অনেকে। তবে এ নিয়ে যেমন প্রতিবাদ হচ্ছে তেমনি থেমে নেই কৃতিত্ব দাবিও। থেমে নেই রাজনীতিও। কুনারের দাবি, গত বছর ডিসেম্বরে তিনি রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলকে চিঠি দিয়ে খড়্গপুর ও আদ্রা ডিভিশনের স্টেশনগুলিতে সাঁওতালি ভাষায় অলচিকি লিপিতে স্টেশনের নাম লেখার অনুরোধ করেছিলেন। তারপরেই চলতি বছরে স্টেশনগুলির নেম বোর্ডে অলচিকি লিপিতেও লেখা শুরু হয়েছে। আর তৃণমূলের এসটি সেলের রাজ্য সভাপতি রবিন টুডু বলেন, ‘‘২০১৫ সাল থেকে আমরা জঙ্গলমহলের সাঁওতালভাষী এলাকার স্টেশনগুলির নেম বোর্ডে অলচিকি লিপিতে নাম লেখার দাবি জানিয়ে এসেছি। সেই দাবি যদিও পূরণ হল, কিন্তু এত ছোট অক্ষরে লেখা হচ্ছে, তা পড়াই যাচ্ছে না। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার চিরকালই আদিবাসীদের দলিত করে রাখতে চায়। এটা তারই নমুনা।’’ সাঁওতাল তাঁর ভাষায় রাষ্ট্রপু্ঞ্জে বলবে! স্বপ্ন অপার। আপাতত লড়াই ‘নেম বোর্ডে’ সম্মানজনক উপস্থিতির। বিপরীতে যে দাঁড়িয়ে রয়েছে চাঁদ সদাগর!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন