খড়্গপুরে স্বৈরাচার বিরোধী ও ধর্মনিরপেক্ষ পুরবোর্ড গড়ার ইঙ্গিত দিল বামেরা। রবিবার মেদিনীপুরে জেলা সিপিএমের পুরসভা নির্বাচন সংক্রান্ত এক পর্যালোচনা বৈঠকেও এমনই সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সে ক্ষেত্রে সমর্থনের নিরিখে বামেদের চোখে কংগ্রেস এগিয়ে রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই কংগ্রেস তাঁদের সমর্থন চেয়ে আবেদন করেছে বলেও দাবি করেছে বামফ্রন্ট। এ দিনের বৈঠকে খড়্গপুরে কংগ্রেসের আবেদন বিবেচনা করে দেখা হচ্ছে বলে জানানো হয়। পাশাপাশি বোর্ড গঠনে তৃণমূলের মতো স্বৈরাচারী ও বিজেপির মতো সাম্প্রদায়িক দলকে রুখতে সর্বশক্তি প্রয়োগ করা হবে।
এ বছর রেলশহর ত্রিশঙ্কু। ফলে ছ’টি আসন দখলে রাখা বামেরা নির্ণায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করছে। তাই বাম-কংগ্রেসের জোটে বোর্ড গঠনের কথা ঘুরপাক খাচ্ছে রেলশহরে। এ দিনের বৈঠকে জোটের সম্ভাবনা আরও উজ্বল হল। সিপিএমের এক জেলা কমিটির সদস্যের কথায়, “খড়্গপুরে কাউকে সমর্থন করা হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে এখন রাজ্যে স্বৈরাচার বিরোধী ও ধর্ম নিরপেক্ষ দল বলতে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসকেই বোঝায়।”
সিপিএমের শহর জোনাল সম্পাদক অনিতবরণ মণ্ডলও একই কথা বলেন, “কংগ্রেস কয়েকদিন আগে একসঙ্গে বোর্ড গঠনের বিষয়ে আবেদন করেছিল। জেলা কমিটিকে তা জানিয়েছিলাম। প্রতিবেদনে থাকা এই বিষয়টি নিয়ে জেলা ভাবনাচিন্তা করছে বলে জানিয়েছে।”
বামেদের থেকে সমর্থন চাওয়ার বিষয়ে কংগ্রেস নেতা তথা বিদায়ী পুরপ্রধান রবিশঙ্কর পাণ্ডে বলেন, “বোর্ড গঠনের জায়গায় বিজেপি নেই। তৃণমূলকে রুখতে বামেদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছিল। তবে তা আলোচনা পর্যায়ে রয়েছে।”
এ দিকে কংগ্রেসের পুরবোর্ড গঠনের ভাবনাকে ‘দুঃসাহস’ বলে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। বোর্ড গঠনের মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে তারাও। তবে তৃণমূল কোনও দলের সমর্থন চাওয়ার থেকে অন্য দলের কাউন্সিলর ভাঙানোর চেষ্টাই বেশি করছে বলে খবর। শহর তৃণমূল সভাপতি দেবাশিস চৌধুরী বলেন, “কোনও দলের সমর্থন ছাড়া একাধিক কাউন্সিলরদের সমর্থনেও তো বোর্ড গঠন করা যায়। কারণ কংগ্রেস যখন দুঃসাহস দেখাচ্ছে তখন আমরা বোর্ডগঠনে একটু সাহসী হয়েছি।’’ যদিও এই কটাক্ষের জবাবে কংগ্রেস নেতা রবিশঙ্কর পাণ্ডে বলেন, “তৃণমূল বোর্ড গঠনের জন্য পুলিশের সাহায্য নিচ্ছে, দুষ্কৃতীদের জেল থেকে বের করেছে। এটাকেই বলে দুঃসাহস। কিন্তু আমরা গনতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সম-চেতনার দলের সঙ্গে আলোচনা করছি। কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে খড়্গপুরে রাজনীতি হয় না।”