প্রার্থী তালিকার আগেই আজ বাম-মনোনয়ন

একের পর এক ভোটে কমেছে বামেদের প্রাপ্ত ভোটের শতাংশ। রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে তাই পুরভোটকেই পাখির চোখ করছে বামেরা। যদিও এখনও পূর্ব মেদিনীপুরের তিন পুরসভা তমলুক, কাঁথি ও এগরায় আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেনি দলীয় নেতৃত্ব। পুরসভার আসন বণ্টন নিয়ে বামফ্রন্টের শরিকদলগুলির মধ্যে আগেই সমঝোতা হয়েছে বলে দাবি সিপিএম জেলা নেতৃত্বের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৫ ০০:৩৫
Share:

একের পর এক ভোটে কমেছে বামেদের প্রাপ্ত ভোটের শতাংশ। রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে তাই পুরভোটকেই পাখির চোখ করছে বামেরা। যদিও এখনও পূর্ব মেদিনীপুরের তিন পুরসভা তমলুক, কাঁথি ও এগরায় আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেনি দলীয় নেতৃত্ব। পুরসভার আসন বণ্টন নিয়ে বামফ্রন্টের শরিকদলগুলির মধ্যে আগেই সমঝোতা হয়েছে বলে দাবি সিপিএম জেলা নেতৃত্বের। আজ, সোমবার সব বাম প্রার্থীরা একসাথে মনোনয়ন পত্র জমা দেবেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। ইতিমধ্যে শুক্রবার তিন পুরসভারই প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে তৃণমূল। রবিবার প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে বিজেপিও।

Advertisement

প্রশ্ন উঠছে, মনোনয়নের আগে কেন বামেরা প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করল না?

সিপিএমের এক জেলা নেতার অভিযোগ, কয়েকটি ওয়ার্ডে সম্ভাব্য বাম প্রার্থীদের নাম জানতে পেরে তাঁদের প্রার্থী না হওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছেন স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা। তাই মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগে এ বার প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হচ্ছে না। যদিও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তুলে আসলে নিজেদের সাংগঠনিক ব্যর্থতাকেই ঢাকতে চাইছে বামেরা। তৃণমূলকে রুখতে যেখানে প্রথম থেকেই ঝাঁপিয়েছে গেরুয়া শিবির। সেখানে এখনও সে ভাবে তত্‌পরতা নজরে পড়েনি বাম দলগুলির মধ্যে।

Advertisement

সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি অবশ্য বলেন, “সাংগঠনিক দুর্বলতার প্রশ্নই নেই। বরং আগের চেয়ে দলের সাংগঠনিক শক্তি অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে।” তাঁর বক্তব্য, “এ বার পুর নির্বাচনে জেলার তিনটি পুরসভাতেই বামফ্রন্ট ঐক্যবদ্ধভাবেই সব আসনে লড়াই করছে। জেলার তিনটি পুরসভাতেই আসন সমঝোতা চূড়ান্ত করে প্রার্থী তালিকা তৈরি হয়েছে। তমলুক পুরসভার বাম প্রার্থীরা সোমবার মনোনয়নপত্র জমা দেবেন।” এ দিন এগরাতেও বাম প্রার্থীরা মনোনয়ন পত্র জমা দিতে পারেন বলে জানা গিয়েছে। প্রার্থী তালিকা প্রকাশ না করা প্রসঙ্গে এগরা পুরভোটে বামফ্রন্টের আহ্বায়ক ভুবন খাটুয়ার বক্তব্য, “নির্বাচন কমিশন তড়িঘড়ি পুরভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করে দেওয়ায় প্রার্থী তালিকা তৈরির জন্য বেশি সময় পাওয়া যায়নি। তবে সোমবার প্রার্থীদের মনোনয়নের কাজ শুরু হবে।”

দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার পুর নির্বাচনে তমলুক পুরসভার ২০টি আসনের মধ্যে সিপিএম ১৩টি, সিপিআই ৪টি এবং ফরওয়ার্ড ব্লক (২০ নম্বর ওয়ার্ড), সমাজবাদী পার্টি (১৯ নম্বর ওয়ার্ড), আরএসপি (১১ নম্বর ওয়ার্ড) একটি করে আসনে প্রার্থী দেবে। এ বারই প্রথম আসন পেল আরএসপি। সিপিআইও গতবারের থেকে এ বার একটি বেশি আসনে প্রার্থী দেবে।

অন্য দিকে, রবিবার জেলা কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে তমলুক, কাঁথি ও এগরা পুরসভার প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেন বিজেপি-র পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সভাপতি তপন কর ও জেলা সাধারণ সম্পাদক সুকুমার দাস। তমলুকে প্রার্থী নির্বাচনে নতুন মুখের উপরই জোর দেওয়া হয়েছে। তমলুক পুরসভার ২০টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৭টি ওয়ার্ডে দলীয় প্রতীকে লড়াই করবেন বিজেপি প্রার্থীরা। বাকি তিনটি (৭, ১৭, ২০ নম্বর) ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থীকে সমর্থন করবে বিজেপি। তমলুক পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে এ বার বিজেপি প্রার্থী হচ্ছেন স্বপ্না দাস। গতবার পুরভোটে বিক্ষুব্ধ তৃণমূল কর্মীদের সমর্থনে নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়াই করে বর্তমান তৃণমূল কাউন্সিলর চামেলি সামন্তের কাছে হেরে গিয়েছিলেন স্বপ্নাদেবী। এ বারও ওই ওয়ার্ডে চামেলীদেবীর বিরুদ্ধেই লড়ছেন তিনি।

গত শুক্রবার রাতে জেলার তিনটি পুরসভাতেই প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে তৃণমূল। এ দিনই এগরা পুরসভারও প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে শাসক দল। এগরার প্রাক্তন পুরপ্রধান স্বপন নায়ক ও প্রাক্তন উপ-পুরপ্রধান বীরেন নায়ক পুরনো ওয়ার্ডেই প্রার্থী হচ্ছেন। সংরক্ষণের গেরোয় এ বার পাঁচটি (১, ২, ৫, ৮, ১২ নম্বর) ওয়ার্ডে প্রার্থী হতে পারেননি প্রাক্তন কাউন্সিলররা। ৯ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন প্রাক্তন কাউন্সিলরের স্বামী হরিপদ বেরা। এগরার বিধায়ক সমরেশ দাস বলেন, “প্রতিটি ওয়ার্ডে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন