পাড়ায় মদের দোকান, আগুন দিলেন স্থানীয়রা

বুধবার নন্দকুমার থানার মানুয়াখালি গ্রামের ঘটনা। এ দিনের ঘটনার জেরে উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ বাহিনী। ততক্ষণে অবশ্য ভাঙচুর করা হয়ে গিয়েছে গোটা দোকানে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:২৬
Share:

ক্ষোভ: মহিলাদের উপস্থিতিতে চলছে ভাঙচুর। নিজস্ব চিত্র

গ্রামের মধ্যে মদের দোকান। এক কিলোমিটারের মধ্যে হাইস্কুল। সদ্য কিশোর-কিশোরী পড়ুয়াদের নিত্য যাতায়াত। তাই বাসিন্দাদের আপত্তিতে বন্ধ হয়েছিল সে দোকান। কিন্তু কানাঘুষোয় শোনা যায়, ফের খুলবে মদের দোকান। তার আগেই বাসিন্দারা জড়ো হয়ে ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দিলেন।

Advertisement

বুধবার নন্দকুমার থানার মানুয়াখালি গ্রামের ঘটনা। এ দিনের ঘটনার জেরে উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ বাহিনী। ততক্ষণে অবশ্য ভাঙচুর করা হয়ে গিয়েছে গোটা দোকানে।

এমন ক্ষোভ এই প্রথম নয়। এর আগে গ্রামের মধ্যে স্কুলের কাছাকাছি সরকারি মদের দোকান খোলাকে কেন্দ্র করে ক্ষোভ ছড়িয়েছে ময়নার দক্ষিণ আনুখা ও কোলাঘাটের বরদাবাড়েও। এ বার একধাপ এগিয়ে গেল নন্দকুমার।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নৈছনপুর-২ পঞ্চায়েতে তমলুক থেকে টেংরাখলি রাজ্য সড়কের ধারে মানুয়াখালি গ্রাম। চলতি বছর রথযাত্রার দিন ওই দোকান খোলেন স্থানীয় বাসিন্দা সুরজিৎ বেরা। কিন্তু কাছেই নৈছনপুর হাইস্কুল। তাই প্রথম থেকেই আপত্তি ছিল বাসিন্দাদের। যদিও আবগারি দফতরের দাবি, সব দিক খতিয়ে দেখেই অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল।

তবু দোকান চালু হওয়ার একমাসের মধ্যেই তা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন মালিক। সে বার স্থানীয় পঞ্চায়েত ও পুলিশের কাছে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হওয়ার অভিযোগ করেছিলেন বাসিন্দারা। দাবি ছিল দোকান বন্ধ করে দেওয়ার। কিন্তু বাসিন্দাদের দাবি, সম্প্রতি তাঁরা শুনেছেন প্রশাসনের যোগসাজশে ফের ওই দোকান চালু করতে চাইছেন সুরজিৎবাবু। তারই প্রতিবাদে এ দিন জড়ো হন তাঁরা।

এ দিন বিক্ষোভ দেখাতে এসেছিলেন স্থানীয় কুহেলি ভৌমিক, অঞ্জলি সামন্তরা। তাঁরা বলেন, ‘‘ওই দোকান চালুর পর এই রাস্তা দিয়ে চলা দায় হয়েছিল। মদ্যপদের অশালীন আচরণে সব সময় ভয়ে থাকতাম। মেয়েরা এই রাস্তা দিয়ে স্কুলে যাবে কী করে?’’

জেলা আবগারি সুপার স্বপন হাজরা বলেন, ‘‘সবকিছু খতিয়ে দেখেই ওই এলাকায় নতুন একটি মদের দোকান খোলার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় কিছু মানুষের আপত্তিতে তা বন্ধ ছিল। তার পরেও কেন এমন ঘটনা ঘটেছে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’’ স্থানীয় নৈছনপুর-২ পঞ্চায়েতের প্রধান অলক সামাই বলেন, ‘‘স্কুলের কাছে মদের দোকান নিয়ে প্রথম থেকেই ক্ষোভ ছিল। এ বিষয়ে আমার কাছে স্মারকলিপিও দেন স্থানীয়রা। কিন্তু বন্ধ দোকানে কেন হামলা, জানি না!’’

একটি সূত্রের খবর, রাজনৈতিক মধ্যস্থতায় পঞ্চায়েতের সঙ্গে রফা করার চেষ্টা করছিলেন সুরজিৎবাবু। সে খবর ছড়িয়ে প়ড়তেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন বাসিন্দারা।

সুরজিৎ বেরা অবশ্য অন্য অভিযোগ করেছেন। তাঁর দাবি, ‘‘এলাকায় চোলাই ঠেকের দাপট রয়েছে। বেআইনি মদ বন্ধ করতেই আবগারি দফতর এলাকায় মদের দোকান খোলার অনুমতি দিয়েছিল। কিন্তু যে ভাবে আমার দোকানে আগুন ধরানো হয়েছে তাতে মনে হচ্ছে ঘটনাটা পূর্ব পরিকল্পিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন