কেশপুরের সিপিএম নেতা খুন

ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই। জমিজমা এবং টাকাপয়সা নিয়ে বিবাদের জেরেই এই খুন। একই দাবি মৃতের পরিজনেদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৯ ০২:২০
Share:

কেশপুরের এক সিপিএম নেতা খুনের ঘটনায় শোরগোল পশ্চিম মেদিনীপুরে। মৃতের নাম মীর হেকারত আলি (৫৮)। দিন কয়েক ধরে নিখোঁজ ছিলেন হেকারত। মঙ্গলবার সকালে মেদিনীপুর গ্রামীণের ভাদুলিয়ার জঙ্গল থেকে ওই সিপিএম নেতার মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। দেহ মাটিতে পোঁতা ছিল।

Advertisement

তদন্তে পুলিশ নিশ্চিত, ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই। জমিজমা এবং টাকাপয়সা নিয়ে বিবাদের জেরেই এই খুন। একই দাবি মৃতের পরিজনেদের। পরিজনেদের অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যে মূল অভিযুক্ত সহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘জমিজমা এবং টাকাপয়সা নিয়ে বিবাদ থেকেই এই ঘটনা। ঘটনার তদন্তে সবদিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃতেরা খুনের কথা স্বীকার করেছে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে একজনের খোঁজ চলছে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে খবর, দোলের দিন অর্থাৎ, ২১ মার্চ দুপুর থেকে নিখোঁজ ছিলেন কেশপুরের এই সিপিএম নেতা। হেকারত এক সময়ে সিপিএমের নেড়াদেউল লোকাল কমিটির সম্পাদক ছিলেন। মুগবসান গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানও ছিলেন তিনি। রাজ্যে পালাবদলের পরে ২০১১ সালেই কেশপুর ছাড়েন। পরে মেদিনীপুরে চলে আসেন। মেদিনীপুর শহরতলিতে বাড়ি করেন। এখানেই বসবাস শুরু করেন। কেশপুরের এই সিপিএম নেতার ছেলে জাহাঙ্গির আলি বলেন, ‘‘তিন বছর হল বাবা পার্টি করতেন না। জমি কেনাবেচার কাজই করতেন।’’

Advertisement

নিহতের পরিজনেরা জানিয়েছেন, দোলের দিন দুপুরে ফোন পেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন হেকারত। তারপর আর ফেরেননি। পরিজনেরা পুলিশের কাছে নিখোঁজ অভিযোগ করেছিলেন। পরিজনেরা পুলিশকে জানিয়েছিলেন, সুকুমার মাহাতো নামে একজন ওই কল করেছিল। মোবাইল কলের সূত্র ধরেই তদন্ত শুরু করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে যে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের মধ্যে সুকুমার একজন। এই যুবকই মূল অভিযুক্ত। জঙ্গলমহলে এক সময়ে 'স্পেশ্যাল পুলিশ অফিসার' (এসপিও) নিয়োগ করা হয়েছিল। যাঁরা পুলিশের 'সোর্স' হিসেবে কাজ করেন। ধৃত সুকুমার এসপিও- র কাজ করত বলেও পুলিশের এক সূত্রে খবর। সুকমার ছাড়াও গ্রেফতার হয়েছে সঞ্জয় মাহাতো এবং পিন্টু মাহাতো নামে আরও দু'জন। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, সুকুমারের সঙ্গে হেকারতের জমিজমা এবং টাকাপয়সা নিয়ে বিবাদ ছিল। সুকুমারের কাছ থেকে হেকারত কিছু টাকা পেতেন। তবে বারবার বলা সত্ত্বেও সুকুমার তা দিচ্ছিল না। ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জেনেছে, দোলের দিন শহরতলির এক জায়গায় সুকুমার বাইকে তোলে ওই সিপিএম নেতাকে। হেকারতকে নিয়ে যাওয়া হয় মেদিনীপুর গ্রামীণের গুড়গুড়িপালের ভাদুলিয়ার জঙ্গলে। পরিকল্পনামাফিক কেশপুরের এই সিপিএম নেতাকে গুলি করে খুন করা হয়। পরে দেহ মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন