গোল দেবই, ঘোষণা মানসের 

সোমবার মেদিনীপুরে জেলাশাসক পি মোহন গাঁধীর দফতরে মনোনয়ন জমা দেন মানস। পরে তিনি বলেন, ‘‘ফুটবল খেলতে ভালবাসতাম। ফার্স্ট লাভ ফুটবল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৯ ০৪:০০
Share:

মনোনয়ন দেওয়ার আগে মানস। নিজস্ব চিত্র

তাঁর চোখ তিনকাঠিতে। তিনি গোল দেবেনই। মনোনয়ন দিয়ে দাবি করলেন মেদিনীপুরের তৃণমূল প্রার্থী মানস।

Advertisement

সোমবার মেদিনীপুরে জেলাশাসক পি মোহন গাঁধীর দফতরে মনোনয়ন জমা দেন মানস। পরে তিনি বলেন, ‘‘ফুটবল খেলতে ভালবাসতাম। ফার্স্ট লাভ ফুটবল। সেকেন্ড লাভ ক্রিকেট। মাই টার্গেট ওয়াজ টু পুট দ্য বল ইনসাইড দ্য গোল। আমি যখন খেলতে নামি, ওই গোল পোস্টে বল ঢোকানো কথা ভাবি। আর ওটা করিও।’’

ঠিক ছিল, মিছিল করে মনোনয়ন দিতে আসবেন মানস। সেই মতো শহরে তৃণমূলের নির্বাচনী কার্যালয়ের সামনে কর্মী- সমর্থকদের ভিড়ও জমতে শুরু করেছিল। চলে এসেছিল হুডখোলা জিপও। পরে ঘড়ির কাঁটায় চোখ রেখে বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ এই কার্যালয় থেকে সোজা জেলাশাসকের দফতরে পৌঁছন মেদিনীপুরের তৃণমূল প্রার্থী। মিছিল না- করেই। দলের এক সূত্র জানাচ্ছে, মানস চেয়েছিলেন বেলা একটা থেকে একটা কুড়ির মধ্যে মনোনয়ন করতে। সেই মতোই না কি সব হয়েছে। কিন্তু মিছিল হল না কেন? পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘‘মিছিল করে আসার সময় আমাদের দুই কর্মী দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন। আমরা শোকাহত। তাই মিছিল হয়নি।’’

Advertisement

প্রার্থী মানস ভুঁইয়ার মনোনয়নের মিছিলে যোগ দিতে যাওয়ার পথে সোমবার লরির ধাক্কায় মৃত্যু হল দুই তৃণমূল কর্মীর। পুলিশ সূত্রের খবর, মৃতদের নাম লালন প্রসাদ (৫০) এবং ডি মুরলি (৪৫)। দু’জনেরই বাড়ি খড়্গপুর শহরের নিমপুরার বড় আয়মায়।

স্থানীয় সূত্রের খবর, দুই তৃণমূল কর্মী একটি মোটরবাইকে ছিলেন। খড়্গপুরের দিক থেকে মেদিনীপুরের দিকে যাচ্ছিলেন তাঁরা। মেদিনীপুর শহর সংলগ্ন হোসনাবাদের বাইকটি নিয়ন্ত্রণ হারায়। ওই দুই যুবকও বাইক থেকে ছিটকে পড়েন। মেদিনীপুরের দিক থেকে খড়্গপুরের দিকে যাওয়া একটি লরি পিষে দিয়ে চলে যায় তাঁদের। ঘটনাস্থলেই দুই তৃণমূল কর্মীর মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে মনোনয়ন সেরেই মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান মানস। মৃতদের পরিজনেদের সঙ্গে দেখা করেন।

দু’দিন আগে মানসের প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ দাবি করেছিলেন, তিনি জিতছেনই। এটা ঠিক হয়ে গিয়েছে। এ দিন সে দাবি প্রসঙ্গে মানসের কটাক্ষ, কেউ দিবা স্বপ্ন দেখতে পারেন, আমি তো বাধা দিতে পারি না। রাত্রেও স্বপ্ন দেখুন, দিবা স্বপ্ন দেখুন, বসতে বসতে স্বপ্ন দেখুন, ঘুমোত ঘুমোতে স্বপ্ন দেখুন, দেখুন, আমি কী করতে পারি!’’ দলের গোষ্ঠীকোন্দল সামলাতেই না কি অনেকটা সময় চলে যাচ্ছে? মেদিনীপুরের তৃণমূল প্রার্থীর জবাব, ‘‘দলে যদি কেউ কথা বলে, যদি কেউ বিতর্ক করে, সেটাকে দ্বন্দ্ব বলে ধরা হবে কেন? সেটাকে তো একটা সুস্বাস্থ্যের নজর হিসেবে দেখা যায়। দেখতে হবে।’’ মানসের সংযোজন, ‘‘আমাদের দলে কোনও দ্বন্দ্ব নেই, কোনও গোষ্ঠী নেই। একজনই নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমরা সব কর্মী। আমাদের দলে তো আর বিজেপির মতো তো পার্টি অফিস দখলকে কেন্দ্র করে মারপিট হয়নি।’’

এ দিন সকালে মেদিনীপুরে এসে বটতলাচকের কালীমন্দিরে পুজো দেন মানস। গায়ে চেনা বাসন্তী রঙের পাঞ্জাবি। এই রং- টা কি খুব পছন্দের? মানসের স্বীকারোক্তি, ‘‘আমার জ্ঞান হওয়ার পর থেকে তিনটে রং আমার খুব পছন্দের। এক, বাসন্তী। যে রংয়ের পাঞ্জাবি আমি পড়েছি। দুই, সাদা। এবং তিন, হালকা নীল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন