general-election-2019-west-bengal

‘শান্ত’ নন্দীগ্রামে ইতিউতি অশান্তি

এ দিন নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের কালিচরণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ২৩৯ নম্বর বুথে অশান্তির খবর মেলে। অভিযোগ, ২০০ বিজেপি সমর্থককে ভোট দিতে বাধা দেওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নন্দীগ্রাম ও খেজুরি শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৯ ০০:৪৫
Share:

মারধর থেকে রেহাই পাননি এই বৃদ্ধাও। নন্দীগ্রামের কালিচরণপুরে।

পঞ্চায়েত নির্বাচনে গত বছর নন্দীগ্রামে রক্ত ঝরেছিল। দুই সিপিএম নেতাকে খুনের অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। হয়েছিল বোমাবাজিও। রবিবার ছিল ষষ্ঠ দফার লোকসভা ভোট। এবার খুনের ঘটনা ঘটেনি। তবে ‘শান্ত’ নন্দীগ্রামে বিভিন্ন এলাকায় এ দিন পরস্পরের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ করেছে রাজনৈতিক দলগুলি। মারধরে বাদ পড়েননি স্থানীয় মানুষও। অভিযোগ, শাসকদলের আশ্রিত দুষ্কৃতীদের মার থেকে রেহাই পাননি বয়স্ক মহিলাও।

Advertisement

এ দিন নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের কালিচরণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ২৩৯ নম্বর বুথে অশান্তির খবর মেলে। অভিযোগ, ২০০ বিজেপি সমর্থককে ভোট দিতে বাধা দেওয়া হয়। স্থানীয় খড়িপুকুরপল্লি গ্রামের এক মহিলা ভোটার বলেন, ‘‘শাসকদলের আশ্রিত দুষ্কৃতী দল এলাকায় একাধিক বিজেপি কর্মীর বাড়ি ভাঙচুর করে। বয়স্ক মহিলাকেও মারা হয়।’’ এলাকাবাসীর অভিযোগ, ওই বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর কোনও সদস্য ছিলেন না। ওই বুথে পোলিং এজেন্টের দায়িত্বে থাকা কালিচরণপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান চন্দ্রশেখর দাস অবশ্য বলেন, ‘‘কোন অশান্তি হয়নি। সকলে নির্বিঘ্নে ভোট দিচ্ছেন।’’ আবার শাসকদলের নেতা তথা পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য চন্দন দাস সংবাদমাধ্যমের কাছে বলেন, ‘‘ওই এলাকায় দেবাশিস গিরি নামে আমাদের এক কর্মীকেও মারধর করা হয়।’’

নন্দীগ্রামের ভেটুরিয়ায় ভোটের শেষে বিজেপি’র পোলিং এজেন্ট দেবাশিস কাণ্ডারকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। তাঁকে রেয়াপাড়াব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়েছে। স্থানীয় বিজেপি নেতা প্রণয় পাল বলেন, ‘‘দেবাশিসকে বেধড়ক মেরেছে তৃণমূলের লোকেরা।’’ অবশ্য ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। আবার ভেকুটিয়াতে শাসকদলের এক কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। ঘটনায় বিজেপির চার সমর্থককে গ্রেফতার করে নন্দীগ্রাম থানার পুলিশ।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

নন্দীগ্রামের মহম্মদপুরে একটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের সঙ্গে শাসকদলের ঝামেলা বাধে। তাতে বিকেলে বেশ কিছুক্ষণ ভোট বন্ধ ছিল। তৃণমূলের অভিযোগ, জওয়ানেরা ভোটারদের প্রভাবিত করেছিল বিজেপিকে ভোট দেওয়ার জন্য। দ্বিগ্রামতলা এলাকায় ওই একই অভিযোগে ভোটের শেষে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ইভিএম নিয়ে যেতে বাধা দেন স্থানীয়েরা। নন্দীগ্রামের শামসাবাদ, কেন্দামারি, বয়েল এলাকায় শাসকদলের বিরুদ্ধে ব্যাপক ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ করেছে বিরোধী বিজেপি এবং সিপিএম। যদিও নন্দীগ্রামের ব্লক তৃণমূল সভাপতি মেঘনাদ পালের দাবি, ‘‘সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছেন। নন্দীগ্রামে কোথাও অশান্তি হয়নি।’’

খেজুরিতেও এ দিন বিক্ষিপ্তভাবে অশান্তির অভিযোগ উঠেছ। খেজুরির পানখাই বুথে সিপিএমের পোলিং এজেন্টকে ভোজালি দিয়ে কোপানোর চেষ্টা করা হয় বলেও অভিযোগ। তাঁকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। দক্ষিণ পানখাই বুথের ৬০ জন ভোটারকে আটকে রাখার অভিযোগ ওঠে শাসকদলের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে বিজেপি এবং সিপিএমের পক্ষ থেকে জেলাশাসক-সহ পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকদের অভিযোগ জানানো হয়েছে বলে দাবি।

এলাকার ভোট পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে ফোন করা হয়েছিল হলদিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পারিজাত বিশ্বাসকে। তবে তিনি ফোন তোলেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন