টোটোয় প্রচারে কাঁথি কেন্দ্রের বামপ্রার্থী পরিতোষ পট্টানায়েক। নিজস্ব চিত্র
দোরগোড়ায় লোকসভা ভোট। পাড়ার মোড় থেকে চায়ের দোকানে চোখে পড়ছে রাজনৈতিক তর্ক-বিতর্ক। রাস্তায়, এলাকায় চলছে রাজনৈতিক দলগুলির ভোটের প্রচার। আর সেই প্রচারের মাঠে প্রতিনিয়ত ডাক পড়ছে টোটোর। কখনও টোটোয় মাইক লাগিয়ে চলছে প্রচার। কখনও টোটো থেকে বিলি করা হচ্ছে লিফলেট। এতেই ভোট মরসুমে কিছু বাড়তি উপার্জন হচ্ছে টোটো চালকদের।
শহরে অলিগলি থেকে গ্রামের মেঠো রাস্তা— ব্যাটারিচালিত টোটো সব রাস্তাতেই সহজে যাতায়াত করতে পারে। দ্রুত পরিষেবা পেতে আমজনতার কাছে বর্তমানে যথেষ্ট নির্ভরযোগ্য এই গাড়ি। এগরার বিভিন্ন অলিগলিতে ভোটারদের কাছে পৌঁছে যেতে রাজনৈতিক দলগুলি এই গাড়ির উপরে ভরসা করছে। পাড়ার বৈঠক থেকে মিছিল, যে কোনও কর্মসূচিতেই টোটোকে ব্যবহার করছে তারা।
শাসকদল, বিরোধী, সব পক্ষই জানাচ্ছে, ছোট হলেও টোটোতে এক সঙ্গে ছ’জন যাত্রী বসতে পারেন। ভাড়াও কম। তাই তারা টোটোকে পছন্দ করছে। এ ব্যাপারে তৃণমূলের সভাপতি স্বপন নায়ক বলেন, ‘‘ফোন করেই যে কোনও সময় টোটো ভাড়া করা যায়। ছোট হওয়ায় গ্রামের অলিগলি পথে ঢুকে যায়। টোটো করে প্রতন্ত জায়গায় মাইকিং করে মানুষের কাছে ভোটের বার্তা দেওয়া যায়। আর ভাড়া কম হওয়ায় খরচও কমে রাজনৈতিক দলগুলির। এ জন্যই এবার টোটোর চাহিদা বেড়েছে।’’
আবার এগরার টোটো চালকেরা জানাচ্ছেন, ধান কাটার মরসুমে এবং প্রবল গরমে টোটো থেকে উপার্জন তলানিতে গিয়ে ঠেকে। কিন্তু এবার ভোটের জন্য সেই চিত্রের অনেকটাই বদল হয়েছে। সাধারণ যাত্রী ছাড়াও রাজনৈতিক মিটিং- মিছিল থেকে তাঁদের বাড়তি উপার্জন হচ্ছে। একদিনে একজনের চার থেকে পাঁচশ টাকা উপরি রোজগার হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন টোটোচালকেরা। তার উপরে উপরি পাওনা হিসাবে থাকছে বিনামূল্যে খাওয়াদাওয়া। এগরার এক টোট চালক শেখ সুকরা বলেন, ‘‘গ্রীষ্মে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে রাস্তায় যাত্রী কম থাকায় উপার্জন কম হত। ভোটের কারণ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মিটিং-মিছিলে ডাক পাচ্ছি। এতে বেশি উপার্জন হচ্ছে।
এগরা টোটো ইউনিয়নের সভাপতি তাহের আলি বলেন, ‘‘যেখানে পুলকার ভাড়া করতে কমপক্ষে ৫০০ টাকা খরচ হয়, সেখানে টোটো ২০০ টাকায় ভাড়া করা যায়। এতে খরচ বাঁচে। তাই ভোটের সময় টোটোর চাহিদা বেড়েছে।’’ ভোটের ফলাফল যাই হোত না কেন, ভোট মরসুমে উপরি লক্ষ্মীলাভে খুশি টোটো চালকেরা।