Mahishadal Trafficking Case

মিস্‌ড কল থেকে প্রেম, প্রেমিকাকে ৭ হাজার টাকায় যৌনপল্লিতে বিক্রি! মহিষাদলকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত তিনমূর্তি

২০১৭ সালে পাঁশকুড়া থানা এলাকার বাসিন্দা এক নাবালিকার সঙ্গে ফোনে আলাপ জমান এক যুবক। সেই প্রেমিকের ডাকে এক দিন বাড়ি ছাড়ে মেয়েটি। কিন্তু প্রেমিকাকে ৭ হাজার টাকার বিনিময়ে মহিষাদলের যৌনপল্লিতে বিক্রি করে দেন প্রেমিক।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৮:৩০
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

অচেনা নম্বর খেকে একটা মিস্‌ড কল, সেখান থেকে ঘুরিয়ে ফোন, আলাপ এবং প্রেম। সেই যুবকের সঙ্গে ঘর বাঁধতে এক দিন বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছিল ১৭ বছরের তরুণী। কিন্তু প্রেমিকের ‘সৌজন্যে’ তার ঠাঁই হয় পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলের যৌনপল্লিতে। পাঁশকুড়া থানার পুলিশের তৎপরতায় ১৫ দিনের মাথায় যৌনপল্লি থেকে উদ্ধার করা হয় নাবালিকাকে। নারী ও শিশু পাচারচক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। দীর্ঘ দিন ধরে মামলা চলার পর শনিবার তিন জনকেই দোষী সাব্যস্ত করেছে তমলুকের পকসো আদালত। আগামী সোমবার তাঁদের সাজা ঘোষণা করবেন বিচারক।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, ২০১৭ সালে পাঁশকুড়া থানা এলাকার বাসিন্দা এক নাবালিকার সঙ্গে ফোনে আলাপ জমান এক যুবক। তিনি নিজের নাম বলেছিলেন, ‘সাদ্দাম’। সেই প্রেমিকের ডাকে একদিন বাড়ি ছাড়ে মেয়েটি। দেখা হয় দু’জনের। কিন্তু বাড়িতে না নিয়ে গিয়ে প্রেমিকাকে ৭ হাজার টাকার বিনিময়ে মহিষাদলের যৌনপল্লিতে বিক্রি করে দেন ‘সাদ্দাম।’ অভিযোগ, তার পর প্রায় দু’সপ্তাহ নাবালিকার উপর অত্যাচার চলে।

ওই যৌনপল্লিতে যাওয়া এক ‘গ্রাহক’কে সব কথা জানায় নাবালিকা। অনুরোধ করে বাড়ির লোকজনের সঙ্গে কথা বলিয়ে দিতে। ওই ব্যক্তি ফোন করেন মেয়েটির বাড়িতে। মেয়ে যৌনপল্লিতে আটকে রয়েছে শুনে থানায় ছুটে যায় নাবালিকার পরিবার। অভিযোগ পেয়ে পাঁশকুড়া থানার তৎকালীন এসআই মানস মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে মহিষাদলে ‘রায়ের ঠেক’-এ হানা দেয় পুলিশবাহিনী। উদ্ধার করা হয় তরুণীকে। ডাক্তারি পরীক্ষা হয় মেয়েটির। বিচারক তাঁর গোপন জবানবন্দি নেন।

Advertisement

সায়েরা বানু নামে এক মহিলাকে ‘রায়ের ঠেক’ থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেই সঙ্গে ‘অবৈধ ভাবে দেহ ব্যবসা চালানোর জন্য’ ওই মহিলার স্বামী টিটু রায়কেও গ্রেফতার করা হয়। তবে ‘প্রেমিকের’ খোঁজ পাওয়া যায়নি তখন। মামলার প্রায় দেড় বছর পর তিনি ধরা পড়েন। জানা যায়, সাদ্দামের আসল নাম শাহজাহান চিত্রকর। পূর্ব মেদিনীপুরেরই চণ্ডীপুরের বাসিন্দা তিনি। ঘটনাক্রমে টিআই প্যারেডে সকল অভিযুক্তকে শনাক্ত করে নাবালিকা। সেই থেকেই জেলে ছিলেন সাদ্দাম ওরফে শাহজাহান।

মামলার সরকারি আইনজীবি কিঙ্কর গায়েন বলেন, ‘‘এই মামলায় তিন অভিযুক্তকেই দোষী সাব্যস্ত করেছেন তমলুকের পকসো আদালতের বিচারক। তাঁদের বিরুদ্ধে নারী পাচার, ধর্ষণ, টাকার বিনিময়ে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করানো-সহ একাধিক ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। সোমবার সাজা ঘোষণা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement