মাধ্যমিকের প্রস্তুতিতে বাধা মাইক!

মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হতে আর মাত্র হাতে গোনা কয়েক দিন বাকি। জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষার প্রস্তুতিতে নাওয়া-খাওয়া মগ্ন ছাত্রছাত্রীরা। কিন্তু বাদ সেধেছে এলাকার নানা উৎসব-অনুষ্ঠান-সভার মাইক-সাউন্ডবক্স-ডিজের তাণ্ডব।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:১৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হতে আর মাত্র হাতে গোনা কয়েক দিন বাকি। জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষার প্রস্তুতিতে নাওয়া-খাওয়া মগ্ন ছাত্রছাত্রীরা। কিন্তু বাদ সেধেছে এলাকার নানা উৎসব-অনুষ্ঠান-সভার মাইক-সাউন্ডবক্স-ডিজের তাণ্ডব। শব্দ দূষণ ও পরীক্ষার আগে মাইক বাজানো বন্ধ করার পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে কয়েক দিন আগে নন্দকুমারের ব্যবত্তারহাট থেকে তমলুক শহর পর্যন্ত মিছিল করেছিলেন স্কুল-কলেজের পড়ুয়া ও এলাকার একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা। এমনকি গভীর রাত পর্যন্ত জলসায় মাইক বাজানোর প্রতিবাদ করায় হামলা চালানো হয়েছিল রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী গৌরাঙ্গ কুইল্যার বাড়িতেও। কিন্তু এত সবের পরেও পুলিশ-প্রশাসনের যে খুব একটা টনক নড়েনি, তাঁর প্রমাণ মিলল সোমবার ময়নায় স্কুল-কলেজের পাশেই ময়দানে তৃণমূলের জনসভার অনুমতি দেওয়ায়।

Advertisement

সোমবার দুপুরে ময়নার পূর্ণানন্দ বিদ্যাপীঠের ময়দানে জনসভার আয়োজন করেছিল ব্লক তৃণমূল। সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। দুপুর দুটোয় সভা শুরুর কর্মসূচি ঘোষণা হয়েছিল। পুলিশ-প্রশাসনের তরফে সভার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। ময়নার রাজনৈতিক সভার পাশাপাশি তমলুক শহরের গঞ্জনারায়ণপুর এলাকায় মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে একটি পুজোমণ্ডপে বাঁশের টাওয়ার করে একাধিক মাইক বেঁধে তারস্বরে বাজানো হয়েছিল বলেও অভিযোগ উঠেছে। যদিও এ দিন ওই সময়ে স্কুল-কলেজের ক্লাস চলার কথা।

অভিযোগ, জনসভা শুরুর আগে দুপুর একটা থেকে সভাস্থলে মাইক-সাউন্ডবক্স বাজানো শুরু হয়েছিল। ফলে স্কুলের মাঝপথে ছাত্রছাত্রীদের ছুটি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। ময়দানের পাশে হাইস্কুল থাকা সত্ত্বেও মাইক বাজিয়ে জনসভা করার জন্য প্রশাসনের অনুমতি দেওয়া নিয়ে বাসিন্দাদের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। শব্দদূষণ বিরোধী নন্দকুমারের এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সহ-সম্পাদক মানবেন্দু রায় বলেন, ‘‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা জনবহুল এলাকায় রাজনৈতিক সভা ও অনুষ্ঠানে মাইক বাজানোর অনুমতির ক্ষেত্রে পুলিশ-প্রশাসনের সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। শব্দবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে সমস্ত রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের দ্বায়িত্ব রয়েছে। তা ছাড়া সামনেই মাধ্যমিক পরীক্ষা। তাই প্রশাসনের আরও দায়িত্বশীল হওয়া উচিত চিল।’’

Advertisement

ব্লক তৃণমূলের সভাপতি তথা পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি সুব্রত মালাকার বলেন, ‘‘জনসভার জন্য আমাদের অনুরোধ মেনে সকাল থেকে স্কুলের ক্লাস শুরু হয়েছিল। দুপুরে মিড-ডে মিল খাওয়ার পরে ছুটি দেওয়ার পরেই জনসভা হয়। স্কুলের পড়াশোনার ব্যাঘাত না ঘটিয়েই প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে আমরা সভা করেছি।’’

বিজেপির তমলুক জেলা সভাপতি প্রদীপ দাসের অভিযোগ, ‘‘কয়েক দিন আগে আমরা সব নিয়ম মেনেই ময়না বিডিও অফিস সংলগ্ন ময়দানে দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের জনসভার জন্য স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসনের অনুমতি চেয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ অনুমতি দেয়নি। অথচ স্কুল-কলেজের পড়াশোনার সময়েই তৃণমূলের জনসভা করার অনুমতি দিয়েছে পুলিশ-প্রশাসন। মাধ্যমিক পরীক্ষা, স্কুল-কলেজে পড়াশোনা এ সব নিয়ে তৃণমূলের ন্যূনতম চিন্তা-ভাবনা আছে বলে মনে হয় না। আর পুলিশ-প্রশাসনের পক্ষপাতদুষ্ট ভূমিকাও এ দিন প্রমাণিত হয়েছে।’’

তমলুকের এসডিপিও সুরজিৎ মণ্ডল বলেন, ‘‘স্কুল-কলেজ চলার সময়ে সভা চলছিল কি না তা খোঁজ নিয়ে দেখব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন