এলাকার ভোল বদলে দিয়েছে সেতু

দীর্ঘ দিনের চাহিদা মিটতে চলেছে গড়বেতা ১ ব্লকের বেনাচাপড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দাদের। এখন আর সব্জি নিয়ে বাজারে পৌঁছনোর পরে দাম পেতে কসরত করতে হয় না। ফড়েরাই গ্রামে পৌঁছে যায়। গড়বেতায় পৌঁছনোর জন্য গ্রামেই মেলে বাস। নাহলে টোটো নিয়েও পৌঁছে যাওয়া যায়। সময়ও বিশেষ লাগে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গড়বেতা শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৬ ০০:০৩
Share:

দীর্ঘ দিনের চাহিদা মিটতে চলেছে গড়বেতা ১ ব্লকের বেনাচাপড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দাদের। এখন আর সব্জি নিয়ে বাজারে পৌঁছনোর পরে দাম পেতে কসরত করতে হয় না। ফড়েরাই গ্রামে পৌঁছে যায়। গড়বেতায় পৌঁছনোর জন্য গ্রামেই মেলে বাস। নাহলে টোটো নিয়েও পৌঁছে যাওয়া যায়। সময়ও বিশেষ লাগে না। শিলাবতীর উপর মাইতা সেতুই বদলে দিয়েছে বেনচাপড়ার চেহারা।

Advertisement

গড়বেতা থেকে বেনাচাপড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এসলাকায় ঢোকার মুখেই রয়েছে শিলাবতী নদী। নদী পেরোলে ঠাকুরানিতলা, মেটালা, কেউতাড়া, মাইতা, বনকাটি, নেড়াশোল গ্রাম। এখানে আলু, ধানের পাশাপাশি সব্জি চাষও হয়। ফলে কুঁদরি, উচ্ছে, চিচিঙ্গা, পটল, বেগুন, বরবরটি, বেগুন, লঙ্কা। সেতুর অভাবে এত দিন এই সব ফসল বেচতে বেগ পেতে হত চাষিদের। নড়বড়ে কাঠের সাঁকো ছিল বটে। কিন্তু বর্ষায় জল বাড়লেই ভেঙে পড়ত সেটি। তখন সব্জি গরুর গাড়িতে তুলে প্রথমে নদীর ঘাট তারপর গাড়ি থেকে সব্জি নামিয়ে নৌকায় তোলা। আর গাড়ি নিয়ে সাঁতরে পার হত গরু। এত ঝক্কির পরে চাষিরা বাজারে পৌঁছে দেখতেন দেরি হয়েছে অজুহাতে ফড়েরা উপযুক্ত দাম দিতে নারাজ। বাধ্য হয়ে কম দামে সব্জি বেচেই ফিরতে হত। বনকাটির অরুণ শিকদারের কথায়, “এমন দিনও গিয়েছে, ২০ টাকা কেজির সব্জি ২-৩ টাকায় বেচতে হয়েছে। কত যে ক্ষতি হয়েছে বোঝাতে পারব না।”

২০১১ সালে পাকা সেতু তৈরির কাজ শুরু হতেই এই দুর্ভোগে দাঁড়ি পড়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। ২০১৩ সালের বন্যায় নির্মীয়মাণ সেতুটি ভেঙে পড়ে। শেষে চলতি বছরের প্রথমে সেতু তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। গ্রামের উপর দিয়ে এখন তিনটি বিভিন্ন রুটের বাস, দু’টি মিনিবাসও যাতায়াত করে। অটো, টোটো আর গা়ড়িও চলছে অনবরত। স্বভাবতই খুশি বেনাচাপড়া। ৫ বিঘে জমিতে সব্জি চাষ করা মাইতার বাসিন্দা বিশ্বনাথ রায় বলছেন, “সেতু হয়েছে, ঝকঝকে রাস্তা হয়েছে। এখন আর আমাদের বাজারে যেতে হয় না। ফড়েরাই গ্রামে আসছে। ২০ টাকা কেজি-র উচ্ছে ২০ টাকাতেই বেচি। দামে না পোষালে বেচি না।’’ প্রাক্তন শিক্ষক বিকাশ রায়ও মানছেন, “এই সেতু কয়েক বছরে স্থানীয় অর্থনীতি বদলে দেবে।”

Advertisement

শুধু এলাকাবাসী উপকৃত তাই নয়। ফি বছর বন্যায় ভেঙে যাওয়া সেতু সংস্কার করতে বেনাচাপড়া গ্রাম পঞ্চায়েতকে ২০-২৫ লক্ষ টাকা ব্যয় করতে হত। সেই ঝক্কিও নেই। তবে বেনাচাপড়া, ভীমপুর, ভালুকখুল্যা, চাঁদাবিলা ও খয়েরবনি— এই ৫টি গ্রাম সেতুর সুবিধা থেকে বঞ্চিত। কারণ, এই গ্রামগুলির মাঝে রয়েছে পুরন্দুর খাল। সেখানে কাঠের সেতু ভেঙে পড়ায় এখানকার বাসিন্দাদের নোয়ারি, ধাদিকা হয়ে প্রায় ১২-১৪ কিলোমিটার অতিরিক্ত পথ ঘুরে গড়বেতা পৌঁছতে হয়। খালের উপরে পাকা সেতু তৈরি করার দাবি উঠেছে। গড়বেতা ১ বিডিও বিমলকুমার শর্মা বলেন, “কাঠের সেতু দ্রুত সংস্কারের জন্য পদক্ষেপ করা হয়েছে। পাকা সেতু নির্মাণের জন্যও চেষ্টা করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন