SIR related Death Allegation

ভোটার তালিকায় বাবা-মায়ের নাম নেই, রাতে ঘুম হত না ছেলের, ৪০ বছরের যুবকের স্ট্রোকে মৃত্যু

পিংলা বিধানসভার খড়্গপুর-২ ব্লকের দক্ষিণ ঢেকিয়া গ্রামে বাড়ি বাবলু হেমব্রমের। ৪০ বছরের যুবক ২৫ নম্বর ঢেকিয়া বুথের ভোটার ছিলেন। পরিবারের দাবি, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় বাবা-মায়ের নাম না পেয়ে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৫ ১৬:৫৬
Share:

ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।

ভোটার তালিকায় বাবা-মায়ের নাম নেই। ওই আতঙ্কে ছেলে অসুস্থ হয়ে মারা গিয়েছেন। এমনই অভিযোগ উঠল পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুরে। রাজ্যে এসআইআর আতঙ্কে এই নিয়ে ২৭ জনের মৃত্যুর অভিযোগ উঠল।

Advertisement

পিংলা বিধানসভার খড়্গপুর-২ ব্লকের দক্ষিণ ঢেকিয়া গ্রামে বাড়ি বাবলু হেমব্রমের। ৪০ বছরের যুবক ২৫ নম্বর ঢেকিয়া বুথের ভোটার ছিলেন। পরিবারের দাবি, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় বাবা-মায়ের নাম না পেয়ে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। চিন্তায় কয়েক দিন ঠিক করে খাওয়াদাওয়া করেননি। রাতে ঘুমোতেন না। এর মধ্যে ২০২৫ সালের সংশোধিত ভোটার ফর্ম হাতে পান বাবলু। তাতে আরও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন।

সোমবার সকালে পরিবারের লোকজন অসুস্থ অবস্থায় বাবলুকে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। কিন্তু চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। জানানো হয়, স্ট্রোক হয়ে মারা গিয়েছেন যুবক। মৃতের দিদি মনু টুডু বলেন, ‘‘ভাইয়ের নাম ২০২৫ সালের ভোটার তালিকায় ছিল। সে ফর্মও পেয়েছিল। কিন্তু ২০০২ সালের তালিকায় বাবা-মায়ের নাম ছিল না বলে দুশ্চিন্তা করত।’’ গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, “ও অকারণে ভয় পাচ্ছিল। আমরা সবাই বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম যে, সমস্যা মিটে যাবে। কিন্তু ও মানতেই চাইছিল না। মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিল। ভেবেছিল, হয়তো অন্য কোথাও পাঠিয়ে দেবে। রাতে ঘুমোতে গিয়েছিল। সকালে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় ওকে।’’

Advertisement

যুবকের মৃত্যুর খবর পেয়ে পিংলার বিধায়ক অজিত মাইতি স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বকে নিয়ে বাবলুর বাড়িতে যান। শোকসন্তপ্ত পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন এবং সমস্ত ঘটনার খোঁজখবর নেন। বিধায়ক বলেন, “এ ভাবে কারও মৃত্যু অত্যন্ত দুঃখজনক। ভোটার তালিকা নিয়ে আতঙ্কে কেউ মারা যাবে, এটা ভাবাই যায় না। পরিবারের পাশে আছি আমরা।” এলাকার বিএলও ভক্তি সাউ জানান, গত ৬ নভেম্বর এনুমারেশন ফর্ম দিয়েছিলেন বাবলুকে। ফর্ম যখন আনতে যান, তখন যুবক জানান, পূরণ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ফর্ম কোথায় রেখেছেন, মনে করতে পারছেন না। পরে জমা দেবেন। বিএলও বলেন, ‘‘২০০২ সালের ভোটার তালিকায় ওর পরিবারের কারও নাম নেই। তাই ওকে বলেছিলাম ২০২৫ এর তথ্য দিয়ে ফর্ম জমা দিতে। সেটা আপলোড করে দেব এবং হিয়ারিং হলে ডাকা হতে পারে। তার পরে শুনলাম এই ঘটনা।’’

খড়্গপুর লোকাল থানার পুলিশ বাবলুর দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement