উদাহরণ: একরত্তি মেয়ের সঙ্গে তরুণ ও সুপ্রীতি। নিজস্ব চিত্র
প্রথম সন্তান মেয়ে। তার অন্নপ্রাশনের অনুষ্ঠানে রক্তদান উৎসবের আয়োজন করল খড়্গপুর মহকুমার মোহনপুরের একটি পরিবার।
মোহনপুর ব্লকের শিয়ালসাই পঞ্চায়েতের প্রত্যন্ত গ্রাম মৈষামুণ্ডা। সেই গ্রামের বাসিন্দা প্রভাস হাতির ছোট ছেলে তরুণ ও সুপ্রীতির প্রথম সন্তান হল ঈষিতা। তাঁর অন্নপ্রাশন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত সকলকে নিয়ে এই আয়োজন হয়। সেখানে প্রায় ৩০ জন রক্ত দেন। তাঁদের মধ্যে নিমন্ত্রিত ছাড়াও কয়েকজন গ্রামবাসীও ছিলেন। তাঁরা জানিয়েছেন, নিমন্ত্রণ না পেলেও এই ব্যতিক্রমী আয়োজনের কথা জানতে পেরে তাঁরা চলে এসেছেন।
প্রভাস সামান্য চাষি। তাঁর বড় ছেলে অরুণ একটি ছোট ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। ছোট ছেলে তরুণ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক। তিনি রক্তদান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। আশপাশে যেখানেই রক্তদানের আয়োজন হয়, সেখানে সুযোগ পেলেই হাজির হন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘চিকিৎসার কাজে যুক্ত হওয়ার সুবাদে রক্তের চাহিদার গুরুত্ব বুঝি। তাই মেয়ের অন্নপ্রাশনে সবাইকে নিয়ে রক্তদানের আয়োজন করেছি। আমার লক্ষ্য একটাই, বিপদের সময়ে অসুস্থ মানুষ যেন রক্ত পায়।" তরুণের স্ত্রী সুপ্রীতির কথায়, ‘‘খুব ভাল লাগছে। এই দিনটি আমাদের কাছে বিশেষ হয়ে থাকবে সারাজীবন। মেয়ের প্রতিটি জন্মদিনে এই উৎসব করব।’’
এ দিন কন্টাই ব্লাড ব্যাঙ্ক, পশ্চিম মেদিনীপুর ভলান্টারি ব্লাড ডোনেশন ফোরাম ও স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সহযোগিতায় শিবিরটি হয়। সেখানে উপস্থিত সবার খাওয়ার ব্যবস্থা ছিল। রক্ত দিয়েছেন কয়েকজন মহিলাও। স্থানীয় বাসিন্দা লতা দাস, বিশ্বব্রত রায়েরা জানান, তাঁদের রক্তে অনেকের প্রাণ বাঁচবে, এই ভাবনা থেকেই তাঁরা এসেছেন।
ঈষিতার দাদু প্রভাস ও ঠাকুমা মেনকার কথায়, ‘‘নাতনি সবার আশীর্বাদ নিয়ে বড় হোক। সেও যেন মানুষের পাশে যেন থাকতে পারে।’’