সালিশি সভায় মারধরে জখম  

খবর পেয়ে রাতেই গ্রামে পৌঁছয় পুলিশ। ততক্ষণে সালিশি সভায় আসা লোকজন পালিয়েছে। অচৈতন্য অবস্থায় লালচাঁদকে উদ্ধার করে গোয়ালতোড় থানার পুলিশ স্থানীয় কেওয়াকোল গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গোয়ালতোড় শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৯ ০০:০২
Share:

প্রতীকী চিত্র

সালিশি সভায় এক যুবককে দড়ি দিয়ে বেঁধে এনে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল গোয়ালতোড়ের কদমডিহা গ্রামে। গুরুতর জখম অবস্থায় বছর আটত্রিশের লালচাঁদ চৈরা এখন গোয়ালতোড়ের কেওয়াকোল গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করেছে।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কদমডিহা গ্রামে শুক্রবার ৮ টা নাগাদ গ্রামের কয়েকজন মাতব্বর সালিশি সভা ডাকে। সেখানে গ্রামেরই বাসিন্দা লালচাঁদ চৈরাকে ডেকে পাঠানো হয়। সভায় না আসায় তাঁর বাড়িতে লোক পাঠানো হয়। রাতের বেলায় অনেক ডাকাডাকি করেও দরজা না খোলায় তাঁর ঘরের জানলা দিয়ে লঙ্কার ধুঁয়ো দেওয়া হয়, এমনকি ঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তবুও আতঙ্কিত তার পরিবারের লোকজন দরজা না খোলায় সালিশি সভা থেকে আসা কয়েকজন মাতব্বর দরজা ভেঙে ঢুকে লালচাঁদকে দড়ি দিয়ে বেঁধে লোহার রড দিয়ে মারতে মারতে সালিশি সভায় নিয়ে আসে। জরিমানা বাবদ ২ লক্ষ টাকা দেওয়ার জন্য লালচাঁদকে চাপ দেওয়া হয়। গরিব চাষি লালচাঁদ অত টাকা দিতে পারবেন না জানালে শুরু হয় অত্যাচার। অভিযোগ, বিদ্যুতের খুঁটিতে পিছমোড়া করে বেঁধে রড, লাঠি, কাঠ দিয়ে মারধর করা হয় লালচাঁদের উপর। মার খেয়ে অচৈতন্য হয়ে পড়লেও তাঁকে রেহাই দেয়নি মাতব্বরেরা। গলাও টিপে ধরা হয় বলে অভিযোগ। স্ত্রী রুমা চৈরা ছাড়াতে গেলে তাঁর উপরও চড়াও হয় মাতব্বরেরা।

খবর পেয়ে রাতেই গ্রামে পৌঁছয় পুলিশ। ততক্ষণে সালিশি সভায় আসা লোকজন পালিয়েছে। অচৈতন্য অবস্থায় লালচাঁদকে উদ্ধার করে গোয়ালতোড় থানার পুলিশ স্থানীয় কেওয়াকোল গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করে। লালচাঁদের স্ত্রী রুমা বলেন, ‘‘আমার স্বামী মাস দেড়েক আগে মদ্যপ অবস্থায় গ্রামেরই একজনের বাড়িতে উঁকি মেরেছিল। সেই ঘটনার বিচার করতে গ্রামে কয়েকবার আলোচনা হয়। শুক্রবার রাতেও সেই আলোচনাতেই ওকে ডাকা হয়। ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। টাকা না দিতে পারায় প্রচণ্ড মারধর করা হয়। পুলিশ না এলে আমার স্বামীকে ওরা মনে হয় মেরেই ফেলত।’’

Advertisement

লালচাঁদের বাবা নিমাইচন্দ্র চৈরা গোয়ালতোড় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তদন্তে নেমে পুলিশ অমিত দে নামে স্থানীয় এক যুবককে গ্রেফতার করেছে। গড়বেতা আদালতে ধৃত ব্যক্তির ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন