সরকারি অনুষ্ঠানে বিরোধী দলের জনপ্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ করার রেওয়াজ তৃণমূলের আমলে প্রায় দেখাই যায় না। সেই ধারা ভেঙে সবংয়ের বুড়ালে পঞ্চায়েতের নতুন ভবন উদ্বোধনে ডাকা হয়েছে কংগ্রেস পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অমল পণ্ডাকে। তাতেও দাঁড়ি পড়ছে না বিতর্কে। কারণ, আমন্ত্রণপত্রে নাম নেই স্থানীয় কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়ার।
কংগ্রেসের অভিযোগ, সবং কলেজের ঘটনায় মানসবাবু যে ভাবে শাসক তৃণমূল ও জেলা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছেন, তার জেরেই এই ঘটনা। সে জন্যই হয়তো আমন্ত্রণপত্রে জ্বলজ্বল করছে জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের নাম। মানসবাবুর বিরুদ্ধে আক্রোশ যে এ ক্ষেত্রে কাজ করেছে তা স্পষ্ট তৃণমূলের জেলা কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতির বক্তব্যে। তিনি জোর গলায় বলছেন, “স্থানীয় বিধায়ককে ডাকতে হবে এমন কোনও কথা নেই। মানস ভুঁইয়া সবং কলেজের ঘটনায় আমাদের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেছেন। উনি আমাদের শত্রু। তাই ওঁকে ডাকা হয়নি।”
আগামী কাল, সোমবার তৃণমূল পরিচালিত ওই পঞ্চায়েতের নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন করার কথা পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের। অতিথি তালিকায় রয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ ছাড়াও রয়েছেন ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দোলুই, সভাধিপতি উত্তরা সিংহ-সহ একগুচ্ছ নাম। গ্রাম পঞ্চায়েত সূত্রে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, জনসংযোগ রক্ষার্থেই পুলিশ সুপারকে ডাকা হয়েছে। আর সাংসদ দীপক অধিকারীর প্রতিনিধি হিসেবে ডাকা হয়েছে বিধায়ক শঙ্কর দোলুইকে। তার বাইরে জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অমল পণ্ডাকে ডাকা হয়েছে।
এ বিষয়ে অমল পণ্ডার বক্তব্য, “একটা আমন্ত্রণপত্র পেয়েছি। সেখানে আমার নাম থাকলেও স্থানীয় বিধায়কের নাম নেই। এটা অপমানজনক। আমার ধারণা আমাকেও ওখানে অপমানিত হতে হবে। যাব কি না ভাবতে হবে।” যদিও মন্তব্য করতে চাননি মানসবাবু।
প্রকাশ্যে ঘটনাকে গুরুত্ব দিতে চাইছে না কংগ্রেস। তবে দলের অন্দরে এই নিয়ে নানা কথা চলছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্রে নাম থাকা জেলা পুলিশ সুপার ও ঘাটালের বিধায়কের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলছে কংগ্রেস। তাঁদের দাবি, পঞ্চায়েতের নানা কাজকর্মে জড়িয়ে রয়েছে স্থানীয় বিধায়ক। তাই সরকারি এই অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্রে তাঁর নাম থাকাটা সৌজন্য। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত বিধায়কের নাম রাখেনি।
দলের সবং ব্লক সাধারণ সম্পাদক আবু কালাম বক্স বলেন, “সবংয়ের ছাত্র খুনে আসল অপরাধীদের আড়াল করে তৃণমূলকে বাঁচিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার ভারতীদেবী। তাই তাঁকে সম্মান জানাতেই তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত তাঁকে নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধনে ডেকেছে।”